নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি, ২৩ সেপ্টেম্বর ॥ উপজেলার নাজিরহাট বাজারে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার বাণিজ্যিক ভবনে গড়ে উঠা ‘এহসান এস সোসাইটি’ নামে একটি অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাত করে কর্মকর্তারা গা ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মামলা করেছে সহস্রাধিক গ্রাহক।
জানা যায়, ২০০৭ সালে এ উপজেলার নাজিরহাটে অফিস খুলে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলো এহসান এস সোসাইটি নামে এমএলএম প্রতিষ্ঠানটি। সহস্রাধিক গ্রাহকের আমানতকৃত প্রায় ৫ কোটি টাকার ডিপিএসের মেয়াদ পূর্তির পূর্ব মুহূর্তে হঠাৎ সটকে পড়েন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। এর পর থেকে কার্যালয়টি নিয়মিত বন্ধ রয়েছে। ফলে আমানত হারানোর ভয়ে সহস্রাধিক গ্রাহক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, আমানতকারীদের বেশির ভাগ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হত দরিদ্র। পরে প্রতিষ্ঠানটির নাজিরহাট শাখার প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মাওলানা সলিম উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা । সলিম উল্লাহ স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসার মুহাদ্দিস। এদিকে, শুক্রবার সকালে মাওলানা সলিম উল্লাহ ও উক্ত শাখার অপর দুই কর্মকর্তা মুনির বিন হাসান ও জাবের আহমদকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও আমানতকৃত টাকা ফেরত দেয়ার দাবিতে নাজিরহাট বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা।
মানববন্ধনে গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘মাওলানা ছলিম উল্লাহ ২০০৭ সালে এহসান এস সোসাইটি নাজিরহাট শাখা চালু করেন। এটি একটি ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক ও সুদমুক্ত প্রতিষ্ঠান দাবি করে ডিপিএস খোলার জন্য তিনি স্থানীয়দের বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। এখন তিনি গ্রাহকদের আমানতের সব টাকা যোগসাজশের মাধ্যমে আত্মসাত করে প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন মর্মে নাটক সাজাচ্ছেন। অভিযোগে তারা আরও বলেন, ‘বর্তমানে মাওলানা সলিম উল্লাহ বেশ অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে তার নামে কয়েকটি প্লট ও নাজিরহাটে ৫ তলা বিশিষ্ট দুটি ভবন রয়েছে।’ জানতে চাইলে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মাওলানা সলিম উল্লাহ বলেন, ‘দীর্ঘদিন দায়িত্বে থাকলেও ২০১৩ সালে তিনি দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। সুতরাং তার বিরুদ্ধ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সত্য নয়।’ ভবন ও প্লটের মালিক হওয়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তিনি তার শ্বশুর বাড়ি থেকে প্রাপ্ত কিছু জায়গা বিক্রি করে এসব করেছেন।’
এদিকে, স্বল্প বেতনে মাদ্রাসায় চাকরি করা মাওলানা সলিম উল্লাহর বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।