ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আলিয়ঁসে এসএম সুলতানের ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আলিয়ঁসে এসএম সুলতানের ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নাসির আলী মামুন বাংলাদেশের বিরলপ্রজ আলোকচিত্রীদের একজন। সাদা-কালোয় তার ছবি যে বৈভব নিয়ে উপস্থিত হয় তা বিস্ময়ভরা দৃষ্টিতে দেখে দর্শকরা। ক্যামেরায় এক আবিষ্কারকের চোখ দিয়ে তিনি মানুষের বিশেষ মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখেন। কয়েক দশকজুড়ে নাসির আলী মামুন শিল্পী এস এম সুলতানের নিঃসঙ্গ যাত্রা, তাঁর উদ্দীপনা, তাঁর সংগ্রাম দেখেছেন। সুলতানকে তার ফ্রেমে ধরে রেখেছেন। সুলতানের প্রকৃতি প্রেম, জীব প্রেম, প্রকৃতির সঙ্গে মানব জীবনের সম্পর্কে আবিষ্কারের যে ভ্রমণ তাঁকে পরম যতেœ তুলে এনেছেন ক্যামেরায়। শিল্পী সুলতানের শিল্প অন্বেষণের যাত্রা নাসির আল মামুনের জন্যও ভিন্ন মাত্রায় এক শিল্পযাত্রায় পরিণত হয়। সেসব চবি বাছাই করা ২৭টি ছবি নিয়ে আলিয়ঁস ফ্রঁসেসে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী। আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দো ঢাকার লা গ্যালারিতে নাসির আলী মামুন এর ‘এস এম সুলতানÑএক ভবঘুরের মহাজাগতিক পরিভ্রমণ’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং একই শিরোনামে ডেলভিস্তা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় প্রকাশিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয় বৃহস্পতিবার। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসী রাষ্ট্রদূত ম্যারি আনিক বুখডা, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা, বিশিষ্ট শিল্পী মনিরুল ইসলাম, স্থপতি এবং শিল্পী মুস্তাফা খালিদ পলাশ এবং সমালোচক অধ্যাপক মইনুদ্দীন খালেদ। সভাপতিত্ব করেন আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দো ঢাকার পরিচালক অলিভিয়ে দন্তজে। প্রদর্শনীতে আলী মামুনের তোলা সর্বমোট ২৭টি আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনীটি চলবে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্রবার ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত। অধ্যাপক ডাঃ এম আমজাদ হোসেনের জীবনী ভিত্তিক তথ্য ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত ॥ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ এম আমজাদ হোসেনের জীবনীভিত্তিক তথ্য ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন হয় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বিকেলে। ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত কিংবদন্তি’ শীর্ষক এ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে স্বাধীনতা ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানের মধ্যমণি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ এম আমজাদ হোসেন। অনুষ্ঠানে ডাঃ আমজাদ হোসেনের কর্মভিত্তিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডাঃ আবদুল গণি মোল্লা, বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনের পক্ষে ব্রিগেডিয়ার জে এস সিমা, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর মোঃ নজরুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ পারভেজ জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীর প্রতীক প্রমুখ। সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, অধ্যাপক ডাঃ এম আমজাদ হোসেন একজন অস্থিবিদ্যা বিশারদ ও শল্য চিকিৎসক। তিনি একজন যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাও। তিনি জন্মভূমির জন্য যুদ্ধ করে গৌরব অর্জন করেছেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলায় পিতা-মাতার নামে আমেনা-বাকি ফাউন্ডেশন স্থাপন করে গুণগত শিক্ষাপ্রসারে ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন। এ ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তিনি নানা কাজ করছেন। অন্যান্য বক্তারা বলেন, ডাক্তার আমজাদ হোসেন স্বপ্ন দেখতে ভালবাসেন ও পছন্দ করেন। দেশ ও জাতির কান্তিলগ্নে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। সেদিন বিপন্ন এই মানুষটি স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বাধীন সার্বভৌম, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠা একটি অনন্য বাংলাদেশকে। সে কারণেই বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন সৈনিক হতে পেরেছেন। মুক্তিযুদ্ধের লড়াইয়ের এক পর্যায়ে তিনি তার দুপায়ে গুলিবিদ্ধ হন। প্রথমে পশ্চিম বাংলার বালুঘাট হাসপাতাল ও পরে ভারতীয় লক্ষেèৗ ও রামগড় সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন। দেশ-জাতি ও জনগণের প্রতি তার এই অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতি জানাতে গিয়ে স্বয়ং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে নিজ হাতে লেখা যে সম্মাননা পত্রটি দেন তা এক ইতিহাসের দলিল হিসেবে বিবেচিত। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। পরে দেশের জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন সেই সব শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর অধ্যাপক ডাঃ এম আমজাদ হোসেনের জীবনীভিত্তিক তথ্য ও প্রামাণ্যচিত্র ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত কিংবদন্তি’ প্রদর্শন করা হয়।
×