ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গুজব শনাক্তকারী সেলের কাজ শুরু অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

গুজব শনাক্তকারী সেলের কাজ শুরু অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই

সংসদ রিপোর্টার ॥ ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, গুগলসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া, মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই তথ্য মন্ত্রণালয় গঠিত ‘গুজব মনিটরিং সেল’ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়ে দেবে এ তথ্যটি গুজব, এ সংবাদটি ভুয়া। সেভাবে সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট তারানা হালিম। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির আনীত বেসরকারী সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সিদ্ধান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করে সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি গুজবের তথ্যচিত্র সংসদে তুলে ধরেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান। তবে মন্ত্রীর ব্যাখা প্রদানের পর তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেন। জবাব দিতে গিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম আরও জানান, যুদ্ধাপরাধী সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে, নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে হাজার হাজার গুজব ছড়ানো হয়েছে। নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত সব সময়ই এ ধরনের কাজ করে থাকে। ৩০০টি ভুয়া ফেসবুক পেইজ তারা দেশের বাইরে থেকে কার্যকর রেখেছে। তবে যেহেতু সোস্যাল মিডিয়ার বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের। তাই বিটিআরসি এ ধরনের কনটেন্ট ফিল্টারিং করে থাকে। তাদের সহযোগিতা দিয়ে থাকে এনটিএমসি। তাছাড়া একটি প্রজেক্ট রয়েছে যা ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমিউনিকেশন গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে দেশের ভেতর থেকে যেসকল কনটেন্ট প্রবেশ করবে সেগুলো ফিল্টার করতে পারবে। তিনি জানান, এগুলো আইআইডির মাধ্যমে ফিল্টার করা হয়। এছাড়াও বিদেশের কনটেন্টগুলো ফিল্টার করা খুব কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য একটি প্রকল্প এবং ইকুইবমেন্ট হাতে নেয়ার কথা রয়েছে। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে যখন দেখেছি এ ধরনের কার্যক্রম হচ্ছে। আমরা চিন্তা করেছি আরা কি করতে পারি। আমরা এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি। তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, আমরা নিবিড়ভাবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং আইসিটিতে যোগাযোগ অব্যাহত রাখব। বিষয়টি সামনে রেখে আমরা ত্বরিত গতিতে দ্রুততার সঙ্গে এক সপ্তাহের মধ্যে মনিটরিং নয়, গুজব শনাক্তের জন্য একটি সেল গঠন করে ফেলেছি। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ডিএফপির উপ-প্রধান তথ্য অফিসার, সিনিয়ার তথ্য অফিসার, ফিচার রাইটারদের নিয়ে সেল গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে ৬ জন তথ্য অফিসারও রয়েছেন। আশা করছি, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমরা অন্তত প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াকে জানিয়ে দিতে পারব যে, এই সংবাদগুলো গুজব, ভিত্তিহীন। সেই তথ্যগুলো বিটিআরসিকে প্রদান করব। আর বিটিআরসি তখন ফেসবুক, ইউটিউব, গুগলের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তারানা হালিম বলেন, এই বৃহৎ কর্মকা- পরিচালনার জন্য বিশাল টিম প্রয়োজন। আমাদের পিআইবিতে লোকবল সংকট রয়েছে। সেখানে লোকবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমাদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট গ্রুপের দরকার রয়েছে। নীতিমালা করার প্রয়োজন রয়েছে। যেহেতু সামনে নির্বাচন তাই ত্বরিত গতিতে গুজব মোকাবেলা করার জন্য এবং সেটা যে গুজব তা জানিয়ে দেবার জন্য কোন প্রজেক্ট হাতে নিতে চাচ্ছি না। কারণ নির্বাচনের আগে গুজবের কারখানা আরও দ্রুতগতিতে গুজব তৈরি করতে থাকবে। কাজেই দ্রুততার সঙ্গে যেন আমরা তৈরি হতে পারি, আমরা জানিয়ে দিতে পারি এটা গুজব। সেজন্য গুজব শনাক্তকরণে আমরা সেল গঠন করে ফেলেছি। ওই টিম সকাল-বিকাল পালাক্রমে মনিটরিং সেলকে সহযোগিতা করবেন। আমরা পুনরায় নির্বাচিত হয়ে আসলে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পূর্ণাঙ্গ সেল গঠন করব। দক্ষ জনবল নিয়ে সংবাদপত্রের পাশাপাশি ওই সেল তথ্য প্রদান করবে।
×