ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ অঞ্চলের ‘গাঙচিল’ চরকে কেন্দ্র করে ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রের মহরত

‘গাঙচিল’ চলচ্চিত্রের শূটিং শুরু নবেম্বরে

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

‘গাঙচিল’ চলচ্চিত্রের শূটিং শুরু নবেম্বরে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘আমি প্রথমে লজ্জা পেতাম, আমার উপন্যাস প্রকাশ হলে চলবে কি না ভাবতাম। পরে আমার ‘গাঙচিল’ উপন্যাসটি প্রকাশ হয়। অমর একুশে বইমেলায় বেস্ট সেলার বইগুলোর একটি ছিল এটি। এটা আবার চলচ্চিত্র হবে আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। এদেশের কোন পলিটিশিয়ান উপন্যাস লেখেননি। তাদের গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র হয়নি। এদিক থেকে আমি অনেক সোভাগ্যবান। সব মিলিয়ে আজকের দিনটি আমার জন্য স্পেশাল।’ বুধবার দুপুরে ঢাকা ক্লাবে ‘গাঙচিল’ চলচ্চিত্রের মহরত অনুষ্ঠিত হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের লেখা ‘গাঙচিল’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হবে চলচ্চিত্রটি। বিষয়টি নিয়ে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবাদুল কাদের। সত্যিকার অর্থেই একজন রাজনীতিবিদকে ভিন্ন রকম পরিবেশে দেখা গেল অনুষ্ঠানজুড়ে। সচরাচর এ রকম পরিবেশে নেতাদের দেখা যায় না। দেশী-বিদেশী নায়ক নায়িকাদের ভিড়ে দেশের একজন শীর্ষ রাজনীতিক। তার লেখা উপন্যাস অবলম্বের নির্মাণ করা হবে চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের মহরত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন চার মন্ত্রীও। সব মিলিয়ে রাজনীতি ও বিনোদন জগতের মানুষদের এক মিলনমেলা বলা চলে। আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি হাসি, আনন্দ, ফটোসেশনে কেটেছে সময়। অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি লক্ষ্য করলাম এই উপমহাদেশে কোন পলিটিশিয়ান উপন্যাস লেখেনি। ভাবলাম চেষ্টা করে দেখি, সেই দুঃসাহসটা আমি একটু দেখাই। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগের চিত্র প্রায়ই আমরা দেখি। সেখানে মানুষগুলো ভাসমান হয়ে যায়। সেসব নিয়ে জীবন ঘনিষ্ঠ একটি উপন্যাস আমি লিখতে চেয়েছি। দক্ষিণ অঞ্চলের গাঙচিল নামে একটা চরকে কেন্দ্র করে উপন্যাসটি লিখেছি।’ ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘একবার জেলে ছিলাম। এটা শেষ করেছি জেল থেকে বের হয়ে কক্সবাজারে। একটু একটু করে লেখা আগাচ্ছিল। পরে সাতদিন একটানা সময় নিয়ে উপন্যাসটি শেষ করি। সময় এর প্রকাশক ফরিদও বারবার তাড়া দিচ্ছিল লেখাটি শেষ করার জন্য। আমি প্রথমে লজ্জা পেতাম। আমার উপন্যাস চলবে কি না ভাবতাম। পরে এটা প্রকাশ হয়। এবার সিনেমা হচ্ছে এটা নিয়ে।’ ‘গাঙচিল’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করবেন নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল। এখানে জুটি হিসেবে দেখা যাবে ফেরদৌস-পূর্ণিমাকে। এই চলচ্চিত্রে পূর্ণিমার পাশাপাশি আরও অভিনয় করবেন কলকাতার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও। ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাস ‘গাঙচিল’ থেকে চিত্রনাট্য লিখেছেন বাংলাদেশের মারুফ রেহমান আর ভারতের প্রিয় চট্টোপাধ্যায়। চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করছে নায়ক ফেরদৌসের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নুজহাত ফিল্মস। ঢাকায় পাঁচদিন শূটিংয়ের পর আগামী নবেম্বর মাস থেকে নোয়াখালী জেলায় এই চলচ্চিত্রের বাকি শূটিং হবে বলে জানান পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, অভিনেতা তারিক আনাম খান, কলকাতার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, পূর্ণিমা ও অভিনেতা ফেরদৌসসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসানুল হক ইনু বলেন, ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাসটিতে বাংলাদেশের চেতনার কথা উঠে এসেছে। উপন্যাসটি নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূলের হাতে দেয়া হয়েছে। উনি চমৎকার চিত্রনাট্যের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটিকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করবেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি আশা করছি দর্শকরা চলচ্চিত্রটিকে ভালভাবে গ্রহণ করবেন। তারানা হালিম বলেন, বর্তমানে সরকারের প্রতি আপনাদের ভালবাসার কারণে আজ মহরতে এতজন মন্ত্রী এসেছেন। আমি চলচ্চিত্রটির সাফল্য কামনা করছি। পূর্ণিমা বলেন, একজন মন্ত্রীর উপন্যাসে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছি, এটা আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। বন্ধু ফেরদৌস যখন এ চলচ্চিত্রে আমাকে কাজ করতে বললেন তখন সুযোগটা আর হাতছাড়া করতে পারিনি। কারণ অনেক দিন ধরে আমি চলচ্চিত্র থেকে দূরে আছি। পরিচালক নেয়ামূল বলেন, সবার উপস্থিতিতে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। জনপ্রিয় একটি উপন্যাস নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছি। আশা করছি চলচ্চিত্রটি মুক্তির পরও জনপ্রিয়তা পাবে।
×