ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লিভারপুল হারাল পিএসজিকে

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

লিভারপুল হারাল পিএসজিকে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের নতুন মৌসুম শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। প্রথমদিনই মুখোমুখি হয়েছিলেন সময়ের অন্যতম সেরা দুই তারকা নেইমার ও মোহাম্মদ সালাহ। এই লড়াইয়ে জিতেছেন সালাহ। আর হেরেছেন নেইমার। দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও নাটকীয় ম্যাচে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। ঘরের মাঠ এ্যানফিল্ডে লিভারপুলের জয়ের নায়ক ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবার্টো ফিরমিনো। চোখের সমস্যার কারণে তার খেলারই কথা ছিল না। তবে শেষ দিকে কোচ জার্গেন ক্লপ তাকে বদলি হিসেবে নামান। তাতেই পুরো ম্যাচ দাপটের সঙ্গে খেলেও পয়েন্ট হারাতে বসা দলকে দুর্দান্ত এক গোলে এনে দিয়েছেন জয়। গ্রুপের আরেক ম্যাচে সার্বিয়ার ক্লাব রেড স্টার বেলগ্রেডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলি। ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে দারুণ শুরু করেছে তুর্কী ক্লাব গালাতাসারে। রাশিয়ান ক্লাব সিএসকেএ মস্কোকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে তারা। গ্রুপের আরেক ম্যাচে এফসি পোর্তোর সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে জার্মান ক্লাব শালকে জিরো ফোর। উপভোগ্য ম্যাচে ড্যানিয়েল স্টারিজ ও জেমস মিলনারের গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় লিভারপুল। প্রথমার্ধে তমা মুনিয়ের গোলে ব্যবধান কমায় পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার ধারার বিপরীতে কিলিয়ান এমবাপের গোলে সমতা ফেরায় অতিথিরা। কিন্তু ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে পার্থক্য গড়ে দেন ফিরমিনো। ব্রাজিলিয়ান এই তারকাকে ছাড়াই খেলতে নামলেও আক্রমণের ধার কমেনি লিভারপুলের। পিএসজির ওপর শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলতে থাকে তারা। ফলস্বরূপ সপ্তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো তারা। কিন্তু ডাচ ডিফেন্ডার ভার্জিল ভন ডাইকের ভলি দারুণ নৈপুণ্যে রুখে দেন ফরাসী গোলরক্ষক আলফুঁস আরিওলা। ফিরমিনোর চোটে সুযোগ পাওয়া স্টারিজের গোলে ৩০ মিনিটে এগিয়ে যায় লিভারপুল। বাঁপ্রান্ত থেকে স্বদেশী ডিফেন্ডার এ্যান্ড্রু রবার্টসনের ক্রসে হেডে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে লিভারপুলকে দুই গোলে এগিয়ে দেন ইংলিশ মিডফিল্ডার মিলনার। ডাচ মিডফিল্ডার জর্জিনিয়ো ভেইনালডামকে পিএসজির ডিফেন্ডার জুয়ান বের্নাট ফাউল করলে পেনাল্টি পায় দ্য রেডসরা। এরপর ৪০ মিনিটে ব্যবধান কমিয়ে পিএসজিকে লড়াইয়ে ফেরান মুনিয়ে। বাঁদিক থেকে ডি বক্সে উড়ে আসা বল রবার্টসনের গায়ে লেগে অরক্ষিত বেলজিয়ান ডিফেন্ডার মুনিয়ের পায়ে যায়। জোরালো শটে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। বিরতির পর ৫৮ মিনিটে বল জালে পাঠিয়েছিলেন সালাহ। কিন্তু তার আগে আরিওলাকে স্টারিজ ফাউল করায় গোলটি বাতিল করা হয়। ম্যাচের ৭৪ মিনিটে স্টারিজকে বসিয়ে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফিরমিনোকে নামান কোচ ক্লপ। ৮৩ মিনিটে সমতা ফেরায় পিএসজি। সালাহর ভুলে বল পেয়ে দারুণ দক্ষতায় নেইমার বল দেন এমবাপেকে। ডান পায়ের জোরালো শটে গোল করেন বিশ্বকাপ মাতানো ফরাসী ফরোয়ার্ড। এরপর সবাই ধরেই নিয়েছিলেন ম্যাচটি হয়তো সমতাবস্থায় শেষ হতে যাচ্ছে। কিন্তু তা হতে দেননি ফিরমিনো। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে (৯২ মিনিট) ভার্জিল ভন ডাইকের পাস পেয়ে ডি বক্সের সামনে থাকা একজনকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে বল ঠিকানায় পাঠান তিনি। এই ম্যাচে হারের পর পিএসজি কোচ টমাস টাচেল বলেন, ম্যাচের কোন সময়ই আমরা আত্মবিশ্বাস হারাইনি। আমরা শক্তি ও সাহসিকতার সঙ্গে পুরো ম্যাচে খেলেছি। কিন্তু বুঝতে হবে এটা এ্যানফিল্ড। এখানে লিভারপুল কি করতে পারে সেটা সবাই জানে। যে কোন সময়ই তারা প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। লিভারপুলের আক্রমণভাগে ফিরমিনোর অনুপস্থিতি চ্যাম্পিয়ন্স লীগে প্রথমবারের মতো মূল একাদশে স্টারিজকে জায়গা করে দেয়। ম্যাচ শেষে স্টারিজ বলেন, দলের জন্য অবদান রাখতে পেরে আমি দারুণ খুশি। নিজেদের মাঠে সবাই সেরাটা দিতেই মুখিয়ে থাকে, এই ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ক্লপের তিন বছরের মেয়াদে স্টারিজ প্রায় বেশিরভাগ সময়ই ইনজুরিতে ছিলেন। কিন্তু বড় মঞ্চে সুযোগ পেয়েই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। এন্ডি রবার্টসনের নিখুঁত একটি কার্লিং ক্রস থেকে দলকে এগিয়ে দেন। স্টারিজকে নিয়ে ম্যাচ শেষে ক্লপ বলেন, আমি তাকে বলেছি শারীরিকভাবে তুমি এখন সেরা অবস্থায় আছ। এটা তুমি ব্যবহার কর। সে দারুণ খেলেছে এবং দারুণ একটি গোলও করেছে।
×