ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার মুক্তির একমাত্র পথ রাজপথ ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

খালেদা জিয়ার মুক্তির একমাত্র পথ রাজপথ ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনী প্রাক্রয়ায় কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না মন্তব্য করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, এখন তার মুক্তির একমাত্র পথ হলো রাজপথ। তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে বিএনপি নতুন কর্মসূচী দেবে। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এদিকে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা না দিয়ে তার মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে । মওদুদ বলেন, খালেদা জিয়া মুক্ত হলে দেশে যে গণজোয়ার আসবে সেটা সরকার ঠেকাতে পারবে না, সে কারণেই তাকে মুক্ত করা সম্ভব হয় নি। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আইনী প্রক্রিয়ার কথা এখন কিছুটা ভুলে যেতে হবে। রাজপথেই এর মোকাবেলা করতে হবে। রাজপথের আন্দোলনেই তার মুক্তি অর্জন করতে হবে। এর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আন্দোলনকে সফল করতে হবে। এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে একটি নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যাবস্থা করার জন্য। মওদুদ বলেন, আগামী দিনের কর্মসূচীর সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত সম্পৃক্ত। এই কর্মসূচীতে ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া প্রশ্ন, গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার অধিকার এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরে পাওয়া জড়িত। এজন্য বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে এগিয়ে যেতে হবে। এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে। এর বাইরে বাংলাদেশের মানুষের কাছে অন্য কোনও পথ নেই। মওদুদ বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আইনজীবীরা অনেক পরিশ্রম করেছেন। এমন কোনও পথ নেই, যে পথে খালেদা জিয়াকে মুক্তি করার চেষ্টা আমরা করিনি। কিন্তু সরকারের প্রভাবের কারণে নি¤œ আদালতের সঙ্গে এখনও আমরা জয়লাভ করতে পারিনি। কারণ, সরকার চায় না খালেদা জিয়া মুক্ত হোক। নি¤œ আদালত সম্পূর্ণভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নি¤œ আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, নিয়োগ, বদলি এবং তাদের শৃঙ্খলা সুপ্রীমকোর্টের কাছে থাকবে। কিন্তু এখন সেটা পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি ও আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেয়া হয়েছে, যার ফলে নি¤œ আদালতের ওপরে সুপ্রীমকোর্টের এখন কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবে এখন নি¤œ আদালতে কাজ চলছে। যে কারণে ৭ মাস হয়ে গেলেও খালেদা জিয়া মুক্ত হতে পারেন নি। মানববন্ধন কর্মসূচীতে আরও বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম রিজু, জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি লায়ন মিয়া মোঃ আনোয়ার, আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। খালেদাকে সুচিকিৎসা না দিয়ে মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে- রিজভী ॥ কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা না দিয়ে তার মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও দেশের বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান। অথচ তাকে কষ্ট দিয়ে তিলে তিলে জীবন বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি আবারও তার পছন্দ অনুযায়ী বেসরকারী বিশেষায়িত হাসপাতালে, বিশেষ করে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, সকল কারাবন্দীর সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য পছন্দ অনুযায়ী হাসপাতাল ও চিকিৎসকের কাছে সেবা নেয়ার অধিকার রয়েছে। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় একজন অনভিজ্ঞ থেরাপিস্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাকে আগে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দিতেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একজন সিনিয়র থেরাপিস্ট। পরে তাকে পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগ মনোভাবাপন্ন একজন অনভিজ্ঞ থেরাপিস্টকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যা রহস্যজনক। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মেডিক্যাল বোর্ডে রাখা হয় নি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
×