বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি জামায়াত সহিংসতা ও নাশকতা করতে চাইলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে। বিএনপি-জামায়াতের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকা ভাসতে ভাসতে বিজয়ের বন্দরে পৌঁছে যাবে।
বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের ওয়ার্কচার্জড শ্রমিক কর্মচারীদের নিয়মিত করণের আদেশ প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, তারা (বিএনপি) আবার তাদের সাম্প্রদায়িক দোসর জামায়াত শিবিরকে সঙ্গে নিয়ে ২০১৪ সালের মত আগামী জাতীয় নির্বাচনের সামনেও নাশকতা করার ছক তৈরি করছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তারা নানা অপতৎপরতা শুরু করেছে।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মতলবি মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে চক্রান্তের মাধ্যমে সরানোর জন্য পায়তারা শুরু করেছে। তিনি বলেন, বিএনপি কোটা আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে ভর করে ব্যর্থ হয়ে জাতিসংঘে গিয়ে কান্নাকাটি করেছে। জাতিসংঘে আমন্ত্রণ নিয়েও তারা মিথ্যাচার করেছে। কারণ জাতিসংঘ বিএনপিকে কোন আমন্ত্রণ জানায় নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার, গণমানুষের সরকার। এ সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনে দেশের মানুষ খুশি। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরে ৭ হাজার ৫৯ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী রয়েছে। তার মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়মিত করা হয়েছে ২ হাজার ২ শ’ ৫৪ জনকে। আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে তারা নিয়মিত হয়ে যাবেন। বাকিরাও পর্যায়ক্রমে নিয়মিত হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ওবায়দুল কাদেরকে সংবর্ধনাও দেয়া হয়। সড়ক ও জনপথ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ গোলাম কিবরিয়া দুলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ।
বিএনপির আন্দোলনের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে ॥ এর আগে ওবায়দুল কাদের ঢাকা ক্লাবের স্যামসাং এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে গাঙচিল চলচ্চিত্রের মহরত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে কারও কোন সন্দেহ থাকার সুযোগ নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গত দশ বছর ধরে আন্দোলনের ডাক দিয়ে আসছে। তাদের ডাকে কেউ সাড়া দেয়নি। দশ বছরে যারা আন্দোলন করতে পারেনি দু’মাসেও তারা পারবে না। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বিএনপি আন্দোলন করার স্বপ্ন দেখতেই পারে। তবে তাদের এ ধরনের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। সংসদ সদস্যদের বাইরে কেউ এই নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবে না। এটা আকারে ছোট হবে। কারণ এই সরকার তখন মেজর পলিসি মেকিং ডিসিশনে থাকবে না। খালি রুটিন ওয়ার্ক করবে। এসময় বড় আকারের সরকার থাকার তো প্রয়োজন নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘মূল দায়িত্বটা থাকবে নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন পরিচালনা করবে তারা। নির্বাচন করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে শুরু করে যেসব প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও মন্ত্রণালয় দরকার- সেগুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনেই ন্যস্ত হবে। সরকার শুরু নির্বাচন কমিশনকে ফ্যাসিলিটেট করবে।
জাতিসংঘে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে যারা ব্ল্যাকমেইলিং করতে পারে তাদের পক্ষে যে কোন ধরনের জালিয়াতি করা অসম্ভব কিছু নয়। মহরত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দিন বুলবুল, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও পূর্ণিমাসহ চলচ্চিত্র কলা-কুশলীরা উপস্থিত ছিলেন।
