ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অস্তিত্বহীন মিলের নামে চাল বরাদ্দ নিয়ে তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

অস্তিত্বহীন মিলের নামে চাল বরাদ্দ নিয়ে তোলপাড়

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ মাইদা অটো রাইস মিলটির কোন অস্তিত্ব নেই। অথচ এই অটো রাইস মিলটিকে সরকারের চাল সংগ্রহ অভিযানে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে! নীলফামারী খাদ্য বিভাগের অস্তিত্বহীন একটি মিলের নামে ভুয়া বরাদ্দ দেয়ার ঘটনা চাউর হয়েছে গোটা জেলা। জানা যায়, বনিবনা না হওয়ার বিরোধে মিত্ররাই গোমর ফাঁস করে দিয়েছে খাদ্য বিভাগের কুকীর্তি। এ নিয়ে জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টার সাঁটিয়ে ওই অপকর্মের আবার বিচারও চেয়েছেন কতিপয় চালকল ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার দেখা যায় ওই অনিয়মের পোস্টার খোদ জেলা খাদ্য বিভাগের অফিসের সামনেই সাঁটানো হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে নীলফামারী জেলা খাদ্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা বছরের পর বছর এ কর্মের সঙ্গে জড়িত। উল্লেখ্য, ২০১৮ সনের বোরো চাল সংগ্রহ অভিযান এখনও চলছে। প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ চলছে। এ জন্য জেলাজুড়ে ৬০২ মিল মালিকের সঙ্গে জেলা চুক্তিবদ্ধ হয় জেলা খাদ্য বিভাগ। ইতোমধ্যে প্রায় ২০ হাজার টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার ১৫৬টি হাসকিং মিল ও ৯টি অটো রাইস মিলকে তালিকাভুক্ত করে ৬ হাজার ৪শ’ টন চাল ও ৩০ টন আতব চাল বরাদ্দ প্রদান করে জেলা খাদ্য দফতর। অভিযোগ মতে, নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের অস্তিত্বহীন মাইদা অটো রাইস মিলের নামে ১২৪.৫৩০ টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নটখানা গ্রামের চাল ব্যবসায়ী মনির হোসেনের অস্তিত্বহীন ভুয়া মাইদা অটো রাইস মিলের নামে এই বরাদ্দ পায়। অভিযোগ মতে শুধু নীলফামারী সদরে নয় ডিমলা, জলঢাকা ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলাতেও এরকম বেশ কয়েকটি অস্তিত্বহীন মিলের নামে বছরের পর বছর বরাদ্দ নিয়ে কতিপয় ব্যবসায়ী ও খাদ্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। ডোমার, ডিমলা ও কিশোরীগঞ্জে সুষ্ঠু তদন্ত করা হলে সেখানেও অস্তিত্বহীন মিলের নামে চাল সরবরাহের বরাদ্দের ঘটনায় থলের বিড়াল বেড়িয়ে পড়বে বলে দাবি করা হয়েছে। এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে খাদ্য বিভাগ ভুয়া মাইদা অটো রাইস মিলের বরাদ্দটি ‘রাফি’ নামে অন্য একটি অটো রাইস মিলে স্থানান্তর করে। কিন্তু বিধি বাম! ভুয়া মিল মালিক মনির হোসেন রাফি অটো রাইস মিলের নামেও ইতোপূর্বে দুই দফায় চাল বরাদ্দ নিয়ে সরকারী ক্রয় কেন্দ্রে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টিও ফাঁস হয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে এ ঘটনার সঙ্গে সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তৌহিদুর রহমান জড়িত রয়েছেন। এ ঘটনায় মিল মালিক ও ধান-চাল ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মেসার্স মাইদা অটো রাইস মিলটির বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।
×