ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আইসিটি বিভাগের এই উদ্যোগে এক হাজারের বেশি লোকের কর্মসংস্থান হবে

বিনিয়োগ বাড়াতে স্ট্র্যাটেজিক সিইও আউটরিচ প্রোগ্রাম

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বিনিয়োগ বাড়াতে স্ট্র্যাটেজিক সিইও আউটরিচ প্রোগ্রাম

ফিরোজ মান্না ॥ বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘স্ট্র্যাটেজিক সিইও আউটরিচ প্রোগ্রাম’ চালু করেছে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। আইটি খাতে বিনিয়োগ বাড়লে দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এজন্য আইসিটি বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বোস্টন কনসালন্টিং গ্রুপের (বিসিজি) সহযোগিতায় স্ট্র্যাটেজিক সিইও আউটরীচ প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছে। এই উদ্যোগে পর্যায়ক্রমে এক হাজারের বেশি লোকের কর্মসংস্থান হবে। এসব কর্মীর মাধ্যমে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হতে পারে বলে মনে করছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। আইসিটি বিভাগ জানিয়েছে, এই প্রোগ্রামের আওতায় আগামী দু’বছর দেশের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে (সিইও) বিদেশের আইটি প্রতিষ্ঠান ও সিইওদের যোগাযোগ, সম্পর্ক ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন ঘটিয়ে আইসিটি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করবে বিসিজি। স্ট্র্যাটেজিক সিইও আউটরিচ প্রোগ্রামের আওতায় বিসিজির হাতে নেয়া কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে আগামী দুই বছরে দেশে অন্তত ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই সময়ের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান হবে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিক-নির্দেশনায় আইসিটি অবকাঠামো গড়ে তোলাসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হওয়ায় দেশে আইসিটি খাতে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ভিশন ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি রফতানি ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার জন্য আইসিটি বিভাগ নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। আইসিটি খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য সরকার নানা সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করেছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এই খাতে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে আইসিটি খাতে বিনিয়োগ শুরু করেছে। এর মধ্যে কোরিয়া ও চীন অন্যতম। বিশ্বের আরও উন্নত দেশগুলোকে এই খাতে বিনিয়োগের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগের ফলে দেশে দক্ষ জনবল তৈরি হবে। দক্ষ জনবলের কোন বিকল্প নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিদেশী বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বিসিজিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্ক নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে, রাজশাহী ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইটি পার্ক নির্মিত হচ্ছে। এসব আইটি পার্কে দেশীয় বিনিয়োগের পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। দেশের আইটি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বিসিজিকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। বিসিজি সিইও আউটরিচ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সে লক্ষ্য পূরণে কাজ করবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এ্যামপ্লয়মেন্ট এ্যান্ড গবর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্প গত জুনে দেশের আইটি-আইটিইএস খাতের উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিসিজি কাজ করবে। এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, স্ট্র্যাটেজিক সিইও আউটরিচ প্রোগামের আওতায় বিসিজির গৃহীত উদ্যোগের বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিদেশের আইটি প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ, সম্পর্ক ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন ঘটাবে। তারা (বিসিজি) বিদেশী বিনিয়োগকারীদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে আইটি-আইটিইএস খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ কৌশল প্রণয়ন করবে। সিইও আউটরিচ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আইটি-আইটিইএস খাতের উন্নয়নে একটি সমন্বিত কার্যক্রম চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে দেশে বহু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। দেশে বেকারত্ম দূর এবং দক্ষ জনবল তৈরিই আমাদের উদ্দেশ্য। দক্ষ জনবল সৃষ্টি হলে আইটি খাত থেকে আগামী ৫ বছরের মধ্যে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব হবে। সূত্র জানিয়েছে, বিসিজি বাংলাদেশ ও বিদেশী আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করবে। একে অপরের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়নে একটি দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচী প্রণয়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আইটি-আইটিইএস খাতসংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে করণীয় নির্র্ধারণে বিসিসি কর্তৃক বাছাইকৃত শীর্ষ ৫ থেকে ৭টি আইটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি পাইলট আউটরিচ প্রোগ্রাম চালু করা হবে।
×