ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আশার সঞ্চার

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগে ঐক্যের ঘোষণা, লক্ষ্য চার আসনেই জয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগে ঐক্যের ঘোষণা, লক্ষ্য চার আসনেই জয়

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ আগামী সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৪ আসনই দলকে উপহার দেয়ার প্রত্যয়ে নগর আওয়ামী লীগ থেকে ঐক্যের ঘোষণা আসার পর ৪১ ওয়ার্ড ও দুটি আসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নগরীর বাইরের দলীয় নেতাকর্মী সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের মাঝে নব প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। এদিকে, একাদশ সংসদ নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে মহানগরীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মনোনয়ন পেতে আগ্রহীদের দৌড়ঝাঁপ, লবিং ও নানা আঙ্গিকে বাড়তে শুরু করেছে। সোমবার রাতে দলের নগর শাখার স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্ব থেকে ঘোষণা এসেছে ঐক্যের। শুধু চট্টগ্রাম মহানগরী নয়, গোটা জেলাজুড়েই দল যাকে যেখানে মনোনয়ন দেবে তাদেরকে জিতিয়ে আনার লক্ষ্যে অটল অবস্থান নেবে। অতীতের গ্রুপিং, মান অভিমান, দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে নেতারা বৈঠক করে এ ঘোষণা দেন। এদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা ছিলেন যারা নগর আওয়ামী লীগের চালিকা শক্তির জ্বালানি হিসেবে কাজ করছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের মূল কা-ারি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রয়ানের পর সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন এক সময়ের কেন্দ্রীয় ডাকসাইটে নেতা মরহুম জহুর আহমদ চৌধুরীর উত্তরাধিকার মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদকের পদে রয়েছেন ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে শুরু করে বর্তমানে দলের এই শাখার সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং সংগঠনের কোষাধ্যক্ষের পদ দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অবিচল অবস্থান নিয়ে এগিয়ে যাওয়া চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। যিনি এই মহানগরীতে ১৪ হাজার কোটি টাকার কর্মযজ্ঞ নিয়ে আলোচনার পাদপীঠে। মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার পর আ জ ম নাছির উদ্দিনও দলকে এগিয়ে নেয়ার প্রয়াসে লিপ্ত। কিন্তু দলের মধ্যে নানা মুনির নানা মত, কান কথা, বিভক্তিতে ফেলে ফায়দা হাসিলকারী চক্রের কারণে নাসির ও ছালামের মধ্যে অতীতে দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং তার বিস্তৃতিও ঘটে। তবে এ নিয়ে মারদাঙ্গা পরিস্থিতির কোন উদ্ভব হয়নি। অপরদিকে, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বয়োজ্যেষ্ঠ, স্বভাবে সহজ সরল এবং বিভিন্ন রোগব্যাধি নিয়েও দলের জন্য তিনি অবিচল অবস্থানে রয়েছেন। তাকে নিয়ে কোন বিভক্তি, দ্বন্দ্ব, গ্রুপিং নেই। এসব বিষয়াদি দলের হাইকমান্ডের জানা। আগামী সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এসব বিষয়াদি নিয়ে হাইকমান্ডের অবস্থান কড়া। ফলে মহানগর নেতৃবৃন্দের মধ্যে মাহতাব উদ্দিন , আ জ ম নাছির, আবদুচ ছালাম, খোরশেদ আলম সুজন, সুনীল সরকার, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, আবদুর রশিদ, নোমান আল মাহমুদ শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, মশিউর রহমান, হাসান মাহমুদ চৌধুরী শমসের, দিদারুল আলম, আবদুল আহাদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দের সম্মিলন ঘটে সোমবারের বৈঠকে। বৈঠকের মূল আকর্ষণ ছিল আবদুচ ছালাম ও আ জ ম নাছির উদ্দিনের পক্ষ থেকে কি বক্তব্য আসছে তা নিয়ে। এসেছে ইতিবাচক ও দলকে গ্রুপিং দ্বন্দ্বমুক্ত রেখে আগামী নির্বাচনে নগরের সবকটি আসনে বিজয়ের পতাকা ছিনিয়ে নেয়া। এ বৈঠকে দলকে সাংগঠনিকভাবে আরও এগিয়ে নেয়ার শক্তি বৃদ্ধিসহ নানা আলোচনা হয়। বৈঠকের আগে দুই নেতার মাঝে টেলিফোনে কথোপকথন হয়, যার ফলশ্রুতিতে ঐক্যের ওই বৈঠক। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে মূলত মরহুম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতো অবস্থান গড়ে নিতে চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের প্রয়াস ও কর্মতৎপরতা অধিকতর দৃশ্যমান। সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার তত্ত্বাবধানে নগরে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের যে প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন তা নগরবাসীর জন্য প্রথমে বিস্ময়কর থাকলেও এখন তা বাস্তবতা। যে কারণে সোমবারের ওই বৈঠকে আবদুচ ছালামের বক্তব্যে ছিল পরিষ্কার বার্তা। তিনি স্বীকার করেন, আওয়ামী লীগে আছি বলেই সভানেত্রী তাকে চউক পদে অধিষ্ঠিত করেছেন। এটাই তার মূল কোয়ালিফিকেশন। চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দুঃসহ যন্ত্রণা হচ্ছে জলাবদ্ধতা এবং এর পাশাপাশি বাণিজ্যিক একটি নগরীর অবয়ব গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যে ২০০৯ সাল থেকে তিনি কাজ শুরু করেছেন। তিনি সরকারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আমাদের সরকার যা বলে তা করে। এ সরকারের জনকল্যাণ ছাড়া আর কোন এজেন্ডা নেই। এ শহরকে নতুন করে ভেঙ্গে গড়ার সুযোগ যেহেতু নেই, সেক্ষেত্রে বাস্তবতার নিরিখেই নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে, এতে জনদুর্ভোগ যা হবে তা সাময়িক। এখন সরকারের বহু কাজের বাস্তবায়ন দৃশ্যমান।
×