ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

তামিমের ইনজুরি

আফগানদের বিপক্ষে নতুন ওপেনিং জুটি

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আফগানদের বিপক্ষে নতুন ওপেনিং জুটি

মোঃ মামুন রশীদ ॥ দারুণ এক জয়ে এবার এশিয়া কাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানে বিধ্বস্ত করে মাশরাফি বিন মর্তুজা বাহিনী বেশ স্বস্তিতেই এখন। রবিবার অনুশীলন না করে তাই ক্রিকেটাররা দুবাই শহরটা ঘুরে বেড়িয়েছেন। মানসিকভাবে চাঙ্গা হওয়ার জন্যই তাদের এ সুযোগ দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। কারণ, পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার আগে মাঝে ৪ দিনের বড় বিরতি পেয়েছে দল। অবশ্য, সোমবার বিকেলেই আবার অনুশীলনে নামে টাইগাররা। এর মধ্যে টিম ম্যানেজমেন্টের দুশ্চিন্তা যেমন ছিল, তেমনি অধিনায়ক মাশরাফিও ভারমুক্ত থাকতে পারেননি পুরোপুরি। কারণ, লঙ্কানদের বিপক্ষে বাঁ হাতের আঙ্গুলের গোড়ায় কয়েকটি হাড়ে চিড় ধরায় এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গেছে অপরিহার্য ওপেনার তামিম ইকবালের। আগের ম্যাচে ওই অবস্থায়ও দলের জন্য এক হাতে ব্যাটিং করেছিলেন। এবার আফগানদের বিপক্ষে তার বিকল্প ছাড়া উপায় নেই। তার পরিবর্তে কাউকে দেশ থেকে নিয়েও যাওয়া হয়নি। সেক্ষেত্রে দুবাইয়ে অবস্থানরত স্কোয়াড থেকেই একেবারে নতুন এক ওপেনিং জুটি দেখা যাবে। ২০০৭ সালে ওয়ানডে অভিষেক হওয়ার পর থেকেই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিয়মিত তামিম। ১৮৩ ওয়ানডের ১৮১ ইনিংস ব্যাট করেছেন এবং সব ম্যাচেই ওপেনার ছিলেন। ইনজুরি ব্যতীত কখনও পারফর্মেন্সের কারণে বাদ পড়তে হয়নি তামিমকে। এর মধ্যে ইনিংসের প্রথম বল মোকাবেলা করেছেন ১৭৪ ইনিংসে, বাকি মাত্র ৭ ইনিংসে তিনি নন-স্ট্রাইকিংয়ে ওপেনার হিসেবে নেমেছেন। তবে মাঝে মাঝেই ইনজুরির কারণে তার বিকল্প হিসেবে ভিন্ন দুই ওপেনার নামাতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে তিনি ক্যারিয়ার শুরুর পর বেশিরভাগ সময় দেখা গেছে ইমরুল কায়েস-এনামুল হক বিজয়, এনামুল-শামসুর রহমান, ইমরুল- সৌম্য ও ইমরুল-লিটনকে দেখা গেছে। এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই মারাত্মক ইনজুরিতে পড়েছেন তামিম। মাত্র ৪ বল মোকাবেলা করতে পেরেছেন। এবারও তার বিকল্প হিসেবে একেবারেই নতুন ওপেনার দেখা যাবে। আপাতত তামিমের সঙ্গী হিসেবে লিটন দাসকে দেখা যাচ্ছিল। মোটামুটি নিশ্চিত যে তিনিই এখন নিয়মিত ওপেনার হিসেবে খেলবেন। তামিমের পরিবর্তে এখন বর্তমান স্কোয়াডে থাকা মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল হাসান শান্তর নাম বেশি শোনা যাচ্ছে লিটনের সঙ্গী হিসেবে। কারণ, তামিমের পরিবর্তে ইমরুল, সৌম্য কিংবা অন্য কাউকে দুবাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি। মাত্র ৪ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মিঠুন তিন ইনিংস ব্যাট করেছেন। এর মধ্যে একবার তিনি ওপেনার হিসেবে নেমেছিলেন, ওয়ানডাউনে খেলেছেন একবার। আবারও তিনি ওপেনিং করলে একাদশে সুযোগ করে নিতে পারেন আরিফুল হক। তবে ক্যারিয়ারসেরা ৬৩ রানের ইনিংস খেলেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ নম্বরে নেমে। সেক্ষেত্রে যদি তার ব্যাটিং পজিশন অক্ষত রাখতে চায় দল, তবে লিটনের সঙ্গী হতে পারেন তরুণ শান্ত। এখন পর্যন্ত নাজমুল হাসান শান্ত ওয়ানডে অভিষেকের অপেক্ষায়। ২০ বছর বয়সী এ তরুণ গত বছর জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরে একটি টেস্ট খেলেছিলেন। এরপর থেকে প্রায় নিয়মিতই দলে ডাক পেলেও খেলা হয়নি। এবারও তিনি আঙ্গুলের ইনজুরির কারণে দুবাই যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। পরিবর্তে নেয়া হয়েছিল মুমিনুল হক সৌরভকে। টপঅর্ডার শান্তর তাই সুযোগ মিলে যেতে পারে ওপেনার হিসেবেই ওয়ানডে অভিষেকের। ২০১৬ টি২০ বিশ্বকাপে ইনজুরির কারণে তামিম একটি ম্যাচ খেলতে পারেননি, তখনও কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হয়েছিল বাংলাদেশ দলকে। এবারও সেই পরীক্ষা। তামিম থাকলে ওপেনিং নিয়ে কোন চিন্তাই থাকে না দলের। দেশের পক্ষে তিন ফরমেটেই সর্বাধিক সেঞ্চুরিসহ সর্বাধিক রানের মালিক অবশ্য ওপেনিং সঙ্গী হিসেবে বারবারই ভিন্ন ক্রিকেটার পেয়েছেন। সবমিলিয়ে তামিমের ওপেনিং সঙ্গী হয়েছেন এখন পর্যন্ত ১৪ জন। সেই তালিকায় এমনকি মুশফিকও আছেন! ২০০৯ সালের ১৮ আগস্ট বুলাওয়েতে তামিমের সঙ্গে ওপেনিং করে মুশফিক জুটিতে তুলেছিলেন ৪৩ রান। তামিম মাত্র ৪ রানে বিদায় নিলেও মুশফিক সেদিন ৯৮ রান করেছিলেন। এছাড়া জাভেদ ওমর (৬ বার), মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন (৯), শাহরিয়ার নাফীস (২৪), মোহাম্মদ আশরাফুল (৩), মেহরাব জুনিয়র (৪), শামসুর রহমান (১), নাঈম ইসলাম (২), মিঠুন (১), লিটন (২), জুনায়েদ সিদ্দিকী (২৫), এনামুল (২৬), সৌম্য (২৩) ও ইমরুল (৫৪) ছিলেন তামিমের ওপেনিং সঙ্গী। এর মধ্যে সর্বাধিক ৩১.৮১ গড়ে, ২ সেঞ্চুরি ও ৯ হাফসেঞ্চুরিসহ ১৭১৮ রান ইমরুলের সঙ্গেই করেছেন তামিম। কিন্তু ব্যাটিং গড়ে (অন্তত ৫ ম্যাচ) সৌম্যর সঙ্গেই এগিয়ে ছিলেন তিনি। সৌম্যর সঙ্গে দ্বিতীয় সর্বাধিক ৯০৩ রান করেছেন তিনি ৩টি শতক ও ৩টি অর্ধশতকসহ ৩৯.২৬ গড়ে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই তামিমকে ছাড়া একেবারেই আনকোরা একটি ওপেনিং জুটি দেখা যাবে।
×