ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় শিশুরাই চালক ॥ ঘটছে দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কলাপাড়ায় শিশুরাই চালক ॥ ঘটছে দুর্ঘটনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৭ সেপ্টেম্বর ॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরশহরের রাস্তাঘাট এখন অটোবাইকের দখলে। নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে গেছে অটোচালকরা। শিশু-কিশোররা পর্যন্ত অটো চালাচ্ছে। ফলে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। নিত্যদিন হতাহতের মতো মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনকি পৌরসভার লাইসেন্স না থাকা প্রায় দুই শ’ অটোবাইক শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। শহরজুড়ে অটোবাইক এখন এক আতঙ্কিত যানে পরিণত হয়েছে। এছাড়া অটোরিক্সাও রয়েছে অন্তত দুই শ’। এর মধ্যে অর্ধেকের লাইসেন্স থাকলেও নবায়ন নেই। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা আর এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে শ্রমিক-মালিক সংগঠনের খামখেয়ালিপনায় এখন পৌরশহরের সড়কে নিরাপদে চলাচল করা যায় না। এসব যানের নিষিদ্ধ হাইড্রোলিক হর্নে শব্দ দূষণের সব সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা এর চরম শিকার হচ্ছে। পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, শহরে চলাচলকারী অটোবাইকের সংখ্যা প্রায় ছয় শ’। যার মধ্যে সর্বোচ্চ চার শ’ অটোবাইকের লাইসেন্স রয়েছে। কিন্তু নবায়ন রয়েছে ৩৪২টির। এসব যানে লাইসেন্স নেয়ার জন্য এককালীন তিন হাজার টাকা দিতে হয়। আর নবায়নের জন্য যানপ্রতি দুই হাজার টাকা দিতে হয়। অটোরিক্সা রয়েছে প্রায় আড়াই শ’। যার মধ্যে এক তৃতীয়াংশের লাইসেন্স নেই। এসব যানের লাইসেন্স করতে এককালীন এক হাজার দুই শ’ এবং নবায়নের জন্য পাঁচ শ’ টাকা দিতে হয়। পৌরসভার দেয়া হিসাবেই অন্তত তিন শ’ অটোবাইকের লাইসেন্স নেই। তারা এসব যানের লাইসেন্স নবায়ন করতে প্রচার করেছেন। কিন্তু এসব যান নিয়ন্ত্রণে নেই দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ। শিশুদের হাতে থাকছে অসংখ্য যানের স্টিয়ারিং। স্কুলগামী শিশুরা শিশুচালকের কাছে সবচেয়ে অনিরাপদ হয়ে ওঠেছে। চালকদের মধ্যে আবার অনেক বখাটে, মাদকসেবী ও কারবারি পর্যন্ত রয়েছে। রয়েছে চিহ্নিত কিছু ছিনতাইকারী। পুলিশ ইতোপূর্বে কয়েকজনকে গ্রেফতার করলে এসব তথ্য উঠে এসেছে। অটোচালক শিশুরা জানায়, তারা পেটের দায়ে এসব করছে। কিন্তু জীবন যেখানে ঝুঁকিতে সেখানে তো আবেগের স্থান নেই। অটোবাইক নিয়ন্ত্রণ সংগঠন একাংশের সভাপতি পৌর কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মতিয়ার রহমান হাওলাদার জানান, তাদের সমিতিভুক্তরা বেশি চলাচল করে গোডাউনঘাট থেকে বালিয়াতলী সড়কে। এখানে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তবে ফেরিঘাট এলাকার অটোগুলোর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এরা আবার অন্য সংগঠনের আওতাধীন। অটোচালকদের অনেকের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ রয়েছে। পৌরসভার নতুন লাইসেন্স করা, ফি বছর নবায়ন ফি ছাড়াও পুলিশসহ কয়েকটি সংগঠনকে চাঁদা দিতে হয়। বিভিন্ন খাতে টাকা দেয়া লাগে। তারপর অধিকাংশ চালকরা দৈনিক ভিত্তিতে ভাড়ায় চালায়। ভাড়া টাকা দেয়ার পরে তাদের পেট চালানো এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তবে হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো বন্ধ করা। রাস্তার মাঝখানে থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা বন্ধ করলে শহরবাসী স্বস্তিতে চলাচল করতে পারবেন বলে সচেতন মহলের অভিমত।
×