ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতিসংঘ নিয়ে যারা প্রতারণা করে তাদের হাতে দেশ ও জনগণ নিরাপদ নয় ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জাতিসংঘ নিয়ে যারা প্রতারণা করে তাদের হাতে দেশ ও জনগণ নিরাপদ নয় ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতিসংঘ সদর দফতরে মির্জা ফখরুলের বৈঠক জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে একথা বলে বিএনপি তথা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি দেশের জনগণের কাছে ভাঁওতাবাজি ও প্রতারণামূলক কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। সোমবার বিকেলে ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ময়মনসিংহ জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব বিএনপির মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে তারা প্রচার করেছে। জাতিসংঘের সদর দফতর নিয়ে এ ধরনের ভাঁওতাবাজি ও প্রতারণা যারা জাতির সঙ্গে করে, তাদের নিয়ে কি বলব? কোন আমন্ত্রণ তো নেই। যখন ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিউইয়র্কে গেলেন, তখন জাতিসংঘের মহাসচিব ঘানায় একটা প্রোগ্রামে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। যিনি দাওয়াত দিলেন তিনি ঘানা চলে গেলেন? যারা জাতিসংঘ নিয়ে এমন প্রতারণা করে তাদের হাতে দেশ ও জনগণ নিরাপদ হতে পারে না বলে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা যেটা শুনেছি জাতিসংঘের সদর দফতরের গেট থেকে বারে বারে অনুরোধ করেছে তারা। তাদের বক্তব্য ছিল যে পর্যায়েরই হোক, তার সঙ্গে দেখা করিয়ে দিতে। পরে একজন এসিস্টেন্ট সেক্রেটারি বিরক্ত হয়ে কিছুটা সময় দিয়েছেন। তিনি বলেন, আলোচনার পর জাতিসংঘ থেকে যে মন্তব্যটা এসেছে, তা হলো বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক এটা তারা চায়। এই কথা তো তারা বলেই আসছে, এই কথার জন্য তো ফখরুল ইসলামের নিউইয়র্কে যাওয়ার কথা ছিল না, জাতিসংঘের সদর দফতরে যাওয়ার কথা ছিল না। এটার জন্য লবিস্ট নিয়োগ করে স্টেট ডিপার্টমেন্টেও যোগাযোগ করেছেন, কোথাও কোন আমন্ত্রণ তাদের করেনি। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে- ফখরুল ইসলাম আলমগীর তথা বিএনপি দেশের জনগণের সঙ্গে যে প্রতারণামূলক কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে, সেই জবাব তাদের আগে দিতে হবে। তিনি বলেন, এই মিথ্যাচার হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি। মিথ্যাচার ও প্রতারণায় তারা বিশ্বরেকর্ড ছাড়িয়েছে। এখন জাতিসংঘের মহাসচিবের নামেও তারা প্রতারণা করে, মিথ্যাচার করে। এদের হাতে গণতন্ত্র কি কখনও নিরাপদ? নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনে নামার বিএনপির হুমকীকে কিভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৩, ১৪, ১৫ সালের মত পেট্রোল বোমার আন্দোলন কী বিএনপি শুরু করবে? সেই আন্দোলন যদি তারা করতে যায়, সে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে যায়, তাহলে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যা যা করণীয়, সমুচিত জবাব দেয়া হবে। নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তফ্রন্ট গঠনকে আওয়ামী লীগ কিভাবে দেখছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব বিষয় অবগত। নির্বাচন আসছে এখন বিভিন্ন মেরুকরণ হবে, শত ফুল ফুটবে, আমরা মনে করি এটা গণতন্ত্রের বিউটি। এখন তারা ঠিক করবে তারা কাদের সঙ্গে জোট করবে, কার সঙ্গে করবে না। তিনি বলেন, ড. কামাল সাহেব বলেছেন জামায়াতের সঙ্গে তারা নেই। কাদের সিদ্দিকীও বলেছেন একই কথা। এখন নির্বাচনী মেরুকরণে কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে গড়ায় এটা এই মুহূর্তে বলা খুব মুশকিল। তবে নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন জোট গঠনের যে প্রক্রিয়া এটাকে আমরা স্বাগত জানাই। এর বিরুদ্ধে আমাদের কোন বক্তব্য নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির যে ঐক্য এটা সাম্প্রদায়িক ঐক্য। জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য। যারা নিজেদের ঘরের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ নয়, তারা দেশের মধ্যে কিভাবে ঐক্য গড়বেন, এটা একটা প্রশ্ন চিহ্ন রয়েই যায়। তারা নিজেরাই নিজেদের ঘরের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ নয় তারা নিজেরা একে অন্যকে সরকারের দালাল বলে, নিজেদের অফিসে নিজেদের মধ্যে অনেক সময়ই ঝগড়া বিবাদে লেগে থাকে। আওয়ামী লীগকে ছাড়া জাতীয় ঐক্য সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচাইতে প্রাচীন দল, সবচাইতে জনপ্রিয় দল আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য হবে কেমন করে? সেটা হতে পারে তাদের নিজেদের তথাকথিত জাতীয়তাবাদী জাতীয় ঐক্য।
×