ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

স্বননের ৩৩ তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

স্বননের ৩৩ তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে ৩৩ বছর পূর্ণ করল আবৃত্তি সংগঠন স্বনন। পথচলার এই তেত্রিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আবৃত্তির সঙ্গে নৃত্য-গীতে সজ্জিত ‘তন্ময় তটিনীর তীরে’ শীর্ষক আয়োজন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাচিকশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ঢাকের বাদ্যের তালে আবৃত্তিশিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলন করে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন অতিথিরা। এরপর ‘আলোকের ঝরনাধারা ধুইয়ে দাও’ গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করেন এগনেস র‌্যাচেল প্যারিস প্রিয়াঙ্কা ও তার দল। আনিসুজ্জামান বলেন, সুন্দর করে কথা বলাটাও একটা শিল্প। আর সুন্দর করে কবিতা পড়ার মাধ্যমে আবৃত্তিশিল্পীরা মানুষকে নির্মল বিনোদন দান করে। কবিতার মাধ্যমে অন্যকে বিনোদিত করার কাজটা আবৃত্তিশিল্পীরাই করে যাচ্ছে। সেলিনা হোসেন বলেন, সাংস্কৃতিক ব্যর্থতার কারণেই জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটেছে। মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে না পারলে পরবর্তী প্রজন্ম কঠিন অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। আবৃত্তিশিল্পীরা নিজেদের সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে সমাজের অন্ধকার দূর করছে। আলোচনা শেষে বৃন্দ, দ্বৈত ও একক আবৃত্তির মাধ্যমে এগিয়ে যায় অনুষ্ঠান। কাজী নজরুল ইসলামের ‘দাও শৌর্য, দাও ধৈর্য’ গীতিকবিতার বৃন্দ আবৃত্তির মাধ্যমে শুরু হয় আবৃত্তির আসর। সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশিত হয় সুকুমার রায়ের ‘শব্দকল্পদ্রুম’ এবং রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ‘ফসলের কাফন’ ও ‘রাস্তার কবিতা।’ দ্বৈত আবৃত্তি পর্বে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’ থেকে পাঠ করেন তরিকুল ও ত্রপা চক্রবর্তী। একক আবৃত্তি করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা সৈয়দ হাসান ইমাম, বাচিকশিল্পী আশরাফুল আলম, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, সোহরাব হোসাইন ও আহ্্কাম উল্লাহ। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতাসর ‘সুনাদ’ ॥ সরোদে ¯িœগ্ধ সুরে শ্রোতার হৃদয় রাঙাল শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের নবীন শিল্পীরা। কচিকণ্ঠের খেয়াল পরিবেশনায় মিলনায়তন জুড়ে বিরাজ করে মোহাবিষ্টতা। তবলার লহরায় উচাটন হয় হৃদয়। এভাবেই সুনাদ শীর্ষক শাস্ত্রীয় সঙ্গীতাসরের প্রথমদিনে মুগ্ধতা ছড়ানো বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিক্ষার্থী শিল্পীরা। সোমবার থেকে ধানম-ির ছায়ানট মিলনায়তনে শুরু হলো দুইদিনের এই উচ্চাঙ্গসঙ্গীত আসর। সুররসিকরা বিনা দর্শনার্থীতে উপভোগ করতে পারবেন সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হওয়া সঙ্গীতানুষ্ঠানটি। শরতের সন্ধ্যায় সূচনা হয় বেঙ্গল ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়ের শিল্পীদের নিয়ে সাজানো সঙ্গীতাসরটি ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের চৌধুরী অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের উত্তরীয় পরিয়ে আসরের উদ্বোধন করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। সরোদের আশ্রয়ে শুরু হয় পরিবেশনা পর্ব। ভুপালী রাগে সমবেতভাবে সুর তোলেন শিল্পীরা। দলীয় সরোদ বাদনে অংশ নেন ঈশারা ফুলঝুরি খান, ইসহাম ফুলঝুরি খান, সাদ্দাম হোসেন ও আরেফিন রনি। সরোদের বাজনার সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন করেন রতন কুমার দাশ ও সুকান্ত মজুমদার। সরোদের সুরটি থেমে গেলে পরিবেশিত হয় খেয়াল। শ্রী রাগের আশ্রয়ে পরিবেশনা উপস্থাপন করেন মিরাজুল জান্নাত সোনিয়া। আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যা সাতটায় লুভা নাহিদ চৌধুরীর স্বাগত বক্তৃতা শেষে শুরু হবে দলীয় সেতার বাদন। এতে অংশ নেবেন প্রসেনজিৎ ম-ল, জ্যোতি ব্যানার্জী, জাহাঙ্গীর আনাম, মোহাম্মদ কাওসার, সোহিনা মজুমদার ও সুশান্ত মজুমদার। ৭টা চল্লিশে শুরু হবে কানিজ হুসনা আহম্মাদীর খেয়াল পরিবেশনা। সোয়া আটটায় দলীয় এসরাজ বাদনে অংশ নেবেন সৈয়দা রায়হান, ইসমাত আরা রুচি, শুক্লা হালদার, শৌনিক দেবনাথ, সৌমিত রায় প্রমুখ। দেশে উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের প্রসার ও প্রচারের লক্ষ্যে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছে বেঙ্গল পরম্পরা সঙ্গীতালয়। উপমহাদেশের গুণী সঙ্গীতগুরু ও শিক্ষকদের দীক্ষা নিচ্ছে এই সঙ্গীতালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই সঙ্গীতালয়ের প্রথম আয়োজন ‘সুনাদ’ নামের এই সঙ্গীতাসর। নবীন ও প্রতিভাবান শিল্পীদের উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে উৎসাহিত করতে এই আসর বসছে। সাধারণ শ্রোতাদের পাশাপাশি শিল্প ও সংস্কৃতি ভুবনের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমাগম ঘটেছে এ আয়োজনে।
×