ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 আজ রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনী পয়েন্টের ওপর যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী আইনী পয়েন্টের ওপর যুক্তিতর্ক শুরু করেছেন। আজ মঙ্গলবার আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করবে আদালত। এদিকে গ্রেনেড হামলা মামলায় জামিনে থাকা ৮ আসামির জামিন বাতিলের জন্য আবেদন করা হয়েছে। একই সঙ্গে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে রাষ্ট্রপক্ষ এ দাবি করে আইনানুযায়ী আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার আর্জি পেশ করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান আইনগত বিষয়ের ওপর যুক্তি উপস্থাপনের সময়ে এ আবেদন করেন। এ মামলায় যারা জামিনে রয়েছেন তাদের জামিন বাতিল করে রায়ের আগমুহূর্ত পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছেন। যাতে জামিনে থাকা আসামিরা আত্মগোপন করতে না পারে না। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সংগঠনে হাওয়া ভবনসহ ১০টি ষড়যন্ত্রের স্থানের উল্লেখ করেন। ওই স্থানগুলোতে বসেই ২১ আগস্ট হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ছক করা হয়েছে। ২১ আগস্ট হামলায় ১৫টি আর্জেস গ্রেনেড ব্যবহৃত হয়েছে। এর মধ্যে অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধারকৃত চারটি গ্রেনেড উদ্ধার করা হলেও আদালতের অনুমতি ছাড়াই সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। হেয়ারস্ এভিডেন্স বিষয়ে রেফারেন্স পেশ করেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংবলিত ২৫টি পত্রিকা ফিরিস্তি করে আদালতে দাখিল করেন। ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এ বিচার চলছে। সোমবার ১১৮ কার্যদিবস শেষে মামলাটি এ পর্যায়ে এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ নিয়েছে ২৯ কার্যদিবস আর আসামিপক্ষ নিয়েছে ৮৯ কার্যদিবস। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে এ্যাডভোকেট আকরাম উদ্দিন শ্যামল, এ্যাডভোকেট ফারহানা রেজা, এ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান, আবুল হাসনাত জিহাদ, আশরাফ হোসেন তিতাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর ৫ জন আসামির পক্ষে আইনজীবী মাঈনুদ্দিন আইনী পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশ করেন। এরপর অপর আসামিদের পক্ষে আইনী পয়েন্টে এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনী পয়েন্টের আলোকে সামগ্রিক যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান। আজ মঙ্গলবার আসামিপক্ষে আইনী পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশ সমাপ্ত হবে বলে জানান এ্যাডভোকেট শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, তিনি আসামিপক্ষে পেশ করা আইনী পয়েন্টের আলোকে আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষে শেষ বারের মতো সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও যুক্তি দেবেন। আজ মঙ্গলবার মামলার বিচারকার্য শেষ হচ্ছে এবং রায় ও আদেশের দিন ধার্য হবে। চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান আইনী পয়েন্টে যুক্তিতর্কে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সংগঠনে হাওয়া ভবনসহ ১০টি ষড়যন্ত্রের স্থানের উল্লেখ করেন। ওই স্থানগুলোতে বসেই ২১ আগস্ট হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ছক করা হয়েছে বলে তিনি যুক্তি দেন। সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ২১ আগস্ট হামলায় ১৫টি আর্জেস গ্রেনেড ব্যবহৃত হয়েছে। এর মধ্যে অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধারকৃত ৪টি গ্রেনেড উদ্ধার করা হলেও আদালতের অনুমতি ছাড়াই সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি, হেয়ারস্ এভিডেন্স বিষয়ে রেফারেন্স পেশ করেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংবলিত ২৫টি পত্রিকা ফিরিস্তি করে আদালতে দাখিল করেন তিনি। এ মামলায় ৮ আসামি জামিনে রয়েছেন উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর মামলার রায় ও আদেশের আগ পর্যন্ত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণে আবেদন দাখিল করেন। সৈয়দ রেজাউর রহমান আদালত, সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যসহ এ মামলার কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষে তিন কার্যদিবস আইনজীবী মোশররফ হোসেন কাজল, বিশেষ পিপি মোঃ আবু আব্দুল্লাহ্ ভুঁইয়া ও আকরাম উদ্দিন শ্যামল আইনী পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশ করেন। ১১৮ কার্যদিবস শেষে মামলাটি এই পর্যায়ে এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ নিয়েছে ২৯ কার্যদিবস আর আসামিপক্ষ নিয়েছে ৮৯ কার্যদিবস। ২১ আগস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে ৩ জন আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ায় তাদের মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এখন ৪৯ আসামির বিচার চলছে। এর মধ্যে এখনও ১৮ জন পলাতক। মামলার আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সেনা কর্মকর্তা রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
×