ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচটি বাতিলের পরও ১০ গোলে জয়ী বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পাঁচটি বাতিলের পরও ১০ গোলে জয়ী বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ ‘ইশ, যদি ওগোরে আর একটা গোল বেশি দিতে পারত, তাইলে জনপ্রতি ১টা কইরা গোল দেয়া যাইত!’ সোমবার খেলা শেষে কমলাপুর স্টেডিয়ামে উপস্থিত কয়েক দর্শক এমনটাই আফসোস করছিলেন। এএফসি অ-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে ‘এফ’ গ্রুপের খেলা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হলেও সোমবার স্বাগতিক বাংলাদেশের কিশোরীরা তাদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামে। আর খেলতে নেমেই প্রতিপক্ষ বাহরাইনকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে একেবারে সয়লাব করে দেয় বাংলার বাঘিণীরা। জয় কুড়িয়ে নেয় ১০-০ গোলের বড় ব্যবধানে। আর একটা গোল বেশি হলেই প্রতিপক্ষের ১১ খেলোয়াড়রা জনপ্রতি ১টা করে গোল উপহার পেত। সেটা না হওয়াতেই কমলাপুরে খেলা উপভোগ করতে আসা ওই দর্শকদের আহাজারি! বলা যায় বাহরাইনকে নিয়ে ‘মেয়ে খেলা’ খেলেছে বাংলাদেশের মেয়েরা! তাদের গতিশীল এবং স্কিলফুল ফুটবলের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে তারা। তবে বাংলাদেশ দলের ফরোয়ার্ডদের গোল মিসের মহড়াও ছিল চোখে পড়ার মতো! এ নিয়ে যে কোচ ছোটনকে আরও কাজ করতে হবে, সেটা বলাই বাহুল্য। অবশ্য বাংলাদেশ দল যে জিতবে, সেটা অনুমেয়ই ছিল। প্রশ্ন ছিল, সেটা কত গোলে? সোমবার বড় জয়ে শুভসূচনা করলেও এদিন দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশের ৫টি গোল বিভিন্ন কারণে বাতিল হয়ে যায়। নইলে লাল-সবুজরা জিততে পারত ১৫-০ গোলে! আর গোল মিস যে কয়টি হয়েছে, সেটা হয়ত গুণেও শেষ করতে পারবে না গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। এদিন দিনের প্রথম ম্যাচে লেবানন ৬-৩ গোলে হারায় সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। এই জয়ে ২ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে লেবানন আছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। ১ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ আছে দুইয়ে। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে ভিয়েতনাম গোল গড়ে পিছিয়ে থাকায় আছে তিনে। এএফসি অ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে মোট ছয় গ্রুপ আছে। প্রতি গ্রুপে ৫টি করে মোট ৩০ দেশ খেলবে। ছয় গ্রুপের ছয় চ্যাম্পিয়ন এবং সেরা দুই রানার্সআপ দল মোট আট দল খেলবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। এই পর্বেই খেলার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ছোটন। এই আট দল থেকে সেরা চার দল খেলবে তৃতীয় এবং চূড়ান্ত পর্বে। এই পর্বে যোগ্যতা অর্জন করা চার দলের সঙ্গে সরাসরি খেলবে আরও চার দেশÑ স্বাগতিক থাইল্যান্ড, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান। এই আসরে (এএফসি অ-১৬ মহিলা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্ব, সাউথ এ্যান্ড সেন্ট্রাল) নিজেদের মাঠে ২০১৬ সালেও বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তারপর এই আসরের মূলপর্বে (২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত) অংশ নেয়। মূলপর্বে অংশ নিয়েছিল আট দল। বাছাইপর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে খেলেছিল বাংলাদেশ। ২০১৬ আসরে চাইনিজ তাইপে, ইরান, আরব আমিরাত, কিরগিজস্তান ও সিঙ্গাপুরকে হারিয়ে নিজেদের মাটিতে অপরাজিত শিরোপা জিতে মূলপর্বে উন্নীত হয়েছিল বাংলার বাঘিণীরা। দুই বছর পর আবারও নিজভূমে একই আসর। তবে এবার প্রতিপক্ষরা কাগজে-কলমে অনেকটাই সংগঠিত এবং শক্তিশালী। তারপরও আসর শুরুর আগে চার দলই বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখে শক্তিমত্তার নিরিখে। সোমবার নিজেদের প্রথম ম্যাচটি ভালমতোই জিতে সেটার প্রমাণ দিল মারিয়ারা। এখন দেখার বিষয়, পরের ম্যাচে কেমন করে তারা। বাংলাদেশের পরের ম্যাচ আগামীকাল, বেলা সাড়ে ১১টায়। প্রতিপক্ষ লেবানন।
×