ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গ্যোটে ইনস্টিটিউটে ফ্লেমিং এ্যাকোস্টিক্সের পশ্চিমা ধ্রুপদী সঙ্গীতসন্ধ্যা

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

গ্যোটে ইনস্টিটিউটে ফ্লেমিং এ্যাকোস্টিক্সের পশ্চিমা ধ্রুপদী সঙ্গীতসন্ধ্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ধানমন্ডির গ্যোটে ইনস্টিটিউটে সম্প্রতি পরিবেশিত হলো পশ্চিমা ধ্রুপদী সঙ্গীতের অসাধারণ সব সুরের ঐকতান। ক্ল্যাসিকাল মিউজিক একাডেমি এবং মিউজিক ফর বাংলাদেশ এই সঙ্গীত আসরের আয়োজন করে। ছয়জন তরুণ প্রতিভাবান বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী মঞ্চে নিজেদের প্রতিভাকে মেলে ধরলেন ফ্লেমিংগো এ্যাকোস্টিক্স পরিচয়ে। আমেরিকান পিয়ানো শিক্ষক ম্যাথিউ বালাবান এবং জার্মান ভায়োলিনিস্ট সাইমন কিয়ারস্পেলের নির্দেশনায় ধানমি র গ্যোটে ইনস্টিটিউটে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞদের জনপ্রিয় সঙ্গীতগুলো বেহালা, বাঁশি, পিয়ানো ও গিটারে একক এবং যুগল সুরের মুর্চ্ছনায় পল্লবিত হয়। অনুষ্ঠানে ফ্রেডরিক সঁপ্যার ওয়ালজ্, বিথোভেনের মুনলাইট সোনাটা, অস্কার রিডিংয়ের কনসার্টো, স্ট্যানলি মেয়ারসের ক্যাভাটিনা, হানস মিলিএসএর কনসার্টিনো, ম্যানুয়েল-দে-ফাল্লার মিলারস ডান্স, ইউগেন ইয়াসেইয়ের রেভে দে ইনফ্যান্ট, ফ্রান্জ সুবার্টের রন্ডো, চেলসো ম্যাকাডোর পাকোকা, আসটর পিয়াজোলার লিবারটাঙগো, কিন সকুনেনবিকের এ্যান ওল্ড স্টোরি এবং সবশেষে সেবাস্টিয়ান বাখের কনসার্টো ডি মাইনর পরিবেশিত হয়। পরিবেশন করেন ম্যাথিউ বালাবান এবং জার্মান ভায়োলিনিস্ট সাইমন কিয়ারস্পেলসহ ছয় উদীয়মান বাদ্যশিল্পী সুচরিত শুভানন রহমান, রিজু গমেজ, নিলয় গমেজ, নাহিয়ান কাব্য, ইখতারা হাসান এবং ইমরান হোসেন জয়। গ্যোটে ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টের পরিকল্পনা শুরু হয় যখন মি.বালাবান বাংলাদেশে তার শেষ সফরের বহু বছর পর পুনরায় ভ্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ম্যাথিউ বালাবান ৫ম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে পিয়ানো বাজানো শুরু করেন এবং হাইস্কুলে পড়ার সময় পর্যন্ত তার পিয়ানো শিক্ষা অব্যাহত ছিল। তিনি মুহেনবার্গ কলেজ থেকে একই সঙ্গে নিউরোসাইন্স এবং মিউজিকে বিএ এবং বিএসসি স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। সম্প্রতি তিনি আলিয়ঁস ফ্রঁসেসের ছয়জন বাছাইকৃত শিক্ষার্থীকে পিয়ানো মাস্টারক্লাস প্রোগ্রামে অগ্রবর্তী শিক্ষা প্রদান করছেন। এই প্রোগ্রামের আলোচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে ছিল, তার সঙ্গীতে দক্ষতা এবং পিয়ানোর পরিবেশন। লুডউইগ ভ্যন বিথভেনের মুনলাইট সোনাটার একটি মুভমেন্ট তার দক্ষ হাতে নিপুণভাবে উঠে আসে, যা দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। সাইমন কিয়ারস্পেল বেহালায় অত্যন্ত দক্ষতা ও সুরুচিপূর্ণতার সঙ্গে পরিবেশন করেন, ম্যাথিউ বালাবান পিয়ানো সঙ্গত করে তা আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে দেখা যায়। বেহালার চমৎকার বাদনকৌশল তার নিপুণ হাতে উঠে আসে এবং আবেগময় এক পরিবেশের সৃষ্টি করে। বর্তমানে কিয়ারস্পেল মিউজিক ফর বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে ভায়োলিন শিক্ষা কোর্স পরিচালনা করছেন। প্রসঙ্গত ক্ল্যাসিকাল মিউজিক একাডেমি বাদ্যযন্ত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করে। তখন থেকেই সঙ্গীতানুরাগীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। অন্যদিকে মিউজিক ফর বাংলাদেশ তাদের কার্যক্রম এবছর থেকেই আরম্ভ করেছে। তাদের মূল লক্ষ্য দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সঙ্গীতের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষকে পরিচিত করানো, সঙ্গীত বিষয়ক জ্ঞানের প্রসার ঘটানো এবং সঙ্গীত পরিবেশনায় উৎসাহ প্রদান করা। মিউজিক ফর বাংলাদেশ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের সঙ্গে একাত্ম হয়ে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের যন্ত্রসঙ্গীত শিক্ষার প্রশিক্ষণ প্রদান করছে।
×