ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটায় ভাড়াটে হোন্ডা সিন্ডিকেট এখন পর্যটকের আতঙ্ক

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কুয়াকাটায় ভাড়াটে হোন্ডা সিন্ডিকেট এখন পর্যটকের আতঙ্ক

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৫ সেপ্টেম্বর ॥ মাদারীপুর জেলার বোরহানগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থী নাহিদ কলাপাড়ায় মামা ইলিয়াস সিকদারের বাসায় বেড়াতে আসে কয়েক দিন আগে। খালাত ভাই, মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানকে নিয়ে ১২ সেপ্টেম্বর, বুধবার বিকেলে কুয়াকাটায় বেড়াতে যায়। সৈকতের শূন্য পয়েন্টের পশ্চিম দিকে বসার অস্থায়ী ছাতার পাশে দাঁড়িয়ে কুয়াকাটার নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করছিল। হঠাৎ দুই ভাড়াটে হোন্ডাচালক এসে পাশে গাড়ি থামায়। অনুরোধ করে লেবুর (লেম্বুর) চরে ঘুরতে যাওয়ার। অনেক বলে কয়ে ভাড়া নির্ধারণ না করেই দুই হোন্ডা চালক দুই জনকে হোন্ডায় তোলে। প্রায় আধা কিমি দূরত্বে দুই চালক দুইজনকে নিয়ে গাড়ি চালাতে থাকে। এরপরে যতসব। নাহিদকে প্রশ্ন হোন্ডাচালকের- আগে ঘুরতে গেছে কি না। দুই-চার দশ হাজার টাকা আনছ কি না। ব্রিফ করা হয় পুলিশ জিজ্ঞেস করলে যেন বলা হয় কিমিতে কুড়ি টাকা ভাড়ার চুক্তিতে তারা এসেছে। লেম্বুর চরে যাওয়া আসায় সর্বোচ্চ দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। যেখানে ভাড়া হওয়ার কথা সর্বোচ্চ দুই শ’ টাকা। এক ধরনের জবরদস্তি শুরু হয় সেখান থেকে ফেরার পরে। পর্যটক নেই। এমন এক স্পটে হোন্ডা থামায়। শূন্য পয়েন্ট থেকে পূর্বে। পানির লেভেলের কাছে। এরপর দৃশ্যমান, হোন্ডাচালকদের আসল চেহারা। টাকা বাইর কর। তোরা নাম। তোগো কাছে কত টাকা আছে। সব টাকা রাইখ্যা দেলে কী করবি। কী মোবাইল ব্যবহার কর। হুজুর শালায় ক্যাডা। আরও কত কী। এক পর্যায়ে ২৬ কিলোমিটার ঘোরার কথা বলে এক হাজার ৬০ টাকা দিতে বলে। খুদে দুই পর্যটক অবাক বনে যায়। সবচেয়ে বেশি ভয় পেয়ে যায়। আতঙ্কিত হয়ে সঙ্গে থাকা ৯০০ টাকা দিতে বাধ্য হয়। এরপরও ওই ভাড়াটে হোন্ডাচালকরা ওদের পকেট সার্চ করতে থাকে। কোন কিছু না বলতে থ্রেট করা হয়। কোনমতে পকেট খরচের সর্বস্ব^ খুইয়ে নিজেকে রক্ষা করে সটকে পড়ে এরা দুইজন। মাত্র ২০০ টাকার ভাড়ার জায়গায় এভাবে ছিনতাই করে নেয়া হলো ৯০০ টাকা। নাহিদের মন্তব্য ভাল মোবাইলসহ আরও বেশি টাকা-পয়সা তাদের কাছে থাকলে রেখে দেয়া হতো। কারণ যাওয়ার সময় নরম সুরে ওরা (হোন্ডাচালকরা) তাদেরকে ভাই সম্বোধন করে কত টাকা নিয়ে গেছে তা জানতে চেয়েছিল। এইভাবে ভাড়াটে হোন্ডাচালকদের একটি চক্র প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে বেড়াচ্ছে। পর্যটকদের হোন্ডায় তুলে নিয়ে তারপর সব হাতিয়ে নেয়। এ চক্রটি এখন কুয়াকাটায় আসা পর্যটকের কাছে আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। ওই হোন্ডাচালকের নাম পরিচয় কিছুই জানাতে পারেনি নাহিদ। তবে সেলফির কথা বলে একটি ছবি তুলেছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, তাৎক্ষণিক অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া যেত। তারপরও খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি এও জানান, যেখানেই ভ্রমণ করুক না কেন। পর্যটকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ভাড়া ছয় শ’ টাকা। এর বেশি নেয়ার সুযোগ নেই।
×