ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ওজন স্তর রক্ষায় বিদ্যুত সাশ্রয়ী পণ্য উৎপাদনের তাগিদ

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ওজন স্তর রক্ষায় বিদ্যুত সাশ্রয়ী পণ্য উৎপাদনের তাগিদ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ওজোন স্তরের ক্ষয়রোধ এবং বৈশ্বিক জলবায়ুর উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুত সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন পরিবেশবাদী/বিশেষজ্ঞরা। শনিবার রাজধানীতে ওয়ালটন কর্পোরেট অফিসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘ওজোন স্তর এবং বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিশেষ সেমিনারে এই পরামর্শ দেন বক্তারা। ‘বিশ্ব ওজোন দিবস’ উপলক্ষে পরিবেশ অধিদফতর এবং ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী। পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওয়ালটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম মাহবুবুল আলম। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এসএম মঞ্জুরুল হান্নান খান, পরিবেশ অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী সারোয়ার ইমতিয়াজ হাশমী, ইউএনডিপি-এর প্রতিনিধি মোঃ আরিফ ফয়সাল এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এমএএ শওকত চৌধুরী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আম্বিয়া। সঞ্চালক ছিলেন ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী বলেন, ওজোন স্তর রক্ষা এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ সময় মতো পদক্ষেপ নিতে না পারলে পৃথিবীকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে তিনি বিদ্যুত সাশ্রয়ী পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যে এসব পণ্য ব্যবহারের প্রতি সচেতনতা তৈরির পরামর্শ দেন। স্বাগত বক্তব্যে ওয়ালটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম মাহবুবুল আলম জানান, ওয়ালটন অনেক আগে থেকেই ব্যাপক বিদ্যুত সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির ফ্রিজ, এসি তৈরি করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনও রেফ্রিজারেটর এবং এয়ার কন্ডিশনারের স্টার রেটিং চালু হয়নি। তাই অসংখ্য নিম্নমানের এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর রেফ্রিজারেটর ও এসি বাজারে আসছে। এতে ব্যাপক পরিমাণে বিদ্যুত অপচয় হচ্ছে। পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তিনি অতি দ্রুত স্টার রেটিং পদ্ধতি চালুর আহ্বান জানান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এসএম মঞ্জুরুল হান্নান খান ইলেকট্রনিক্স পণ্য রিসাইক্লিং করার ওপর জোর দেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সিইও আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, ওজোন স্তর রক্ষা এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিদ্যুত সাশ্রয়ী এ্যাপ্লায়েন্সেস উৎপাদন করতে ওয়ালটনের গ্রীন কুলিং টেকনোলজিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি ফ্রিজ, এসির গায়ে এনার্জি রেটিং বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএএ শওকত চৌধুরী ইনভার্টার প্রযুক্তির পণ্য ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এতে একদিকে গ্রাহকের বিদ্যুত খরচ যেমন কম হয়, অন্যদিকে এই প্রযুক্তির পণ্য টেকেও বেশি। ইউএনডিপি-এর প্রতিনিধি মোঃ আরিফ ফয়সাল বলেন, ওজোন স্তরের ক্ষয়রোধ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে শুধু বিদ্যুত সাশ্রয়ী পণ্য উৎপাদন করাই যথেষ্ট নয়; এজন্য ব্যবহারকারীদের মাঝেও এসব পণ্য ব্যবহারের প্রতি সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাপী মন্ট্রিল প্রোটোকল সবচেয়ে সফল। বিশ্বের প্রায় সব দেশই এই প্রোটোকলে স্বাক্ষর করেছে। আর মন্ট্রিল প্রোটোকলের সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ রোল মডেল। বেসরকারী পর্যায়ে ওজোন স্তর নিয়ে এ ধরনের বিশেষায়িত সেমিনার আয়োজন করায় ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানান তিনি। সেমিনারে বক্তারা বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য শুধু অবকাঠামো নয়, পরিবেশগত উন্নয়নেও গুরুত্ব দিতে হবে। আগামী প্রজন্মকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে পরিবেশকে রক্ষা করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব। উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে ওজোন স্তরকে সুরক্ষা করতে হবে। ওজোন স্তরের ক্ষয়রোধে বিশ্ববাসীকে একযোগে কাজ করতে হবে। বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে শীতল থাকার পরিবেশবান্ধব কৌশল, মেনে চলি মন্ট্রিল প্রোটোকল।
×