ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী

এটা তো ভাঁওতাবাজি, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

এটা তো ভাঁওতাবাজি, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলে নিউইয়র্কে গিয়ে বিএনপি নেতারা মূলত মিথ্যাচার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। এই যে একটা ভাওতাবাজি, ধোঁকাবাজি মানুষের সঙ্গে করা। এটা তো দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। মিথ্যাচারের দরকারটা কী? যার সঙ্গে দেখা করেছে সেটা বললেই হয়। দেখা করায় তো আপত্তি নেই। আমরা তো বাধা দেই নাই। শনিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথমে বৈঠকের সূচনা বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমরা শুনলাম বিএনপির মহাসচিবকে জাতিসংঘের মহাসচিব ডেকে পাঠিয়েছেন। সেজন্য তারা সেখানে গেছেন। তাঁর সঙ্গে নাকি দেখাও করেছে, নিউজ দিল। অথচ দেখলাম, তিনি তখন ঘানায় জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদান করতে গেছেন। ঠিক ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন বিজেপি নেতার সঙ্গে কথা বলা নিয়েও ওরকম একটা ভাওতাবাজি করেছিল। এটা তো দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, তারা যে মিথ্যা কথা বলল, জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের দাওয়াতে গেছে আর জাতিসংঘ থেকে একজন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল জানাল আমরা তো দাওয়াত করিনি, উনারাই দেখা করতে চেয়েছেন। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিটা কোথায় থাকল? দেশবাসীর উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন তিনি। উল্লেখ্য, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি টিম এখন নিউইয়র্কে। জাতিসংঘ মহাসচিবের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনকার সঙ্গে দেখা করেছেন তারা। বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে তারা সেখানে গিয়েছেন। পরে এ বিষয়ে খোঁজ নিলে জাতিসংঘের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বিএনপির অনুরোধেই তাদেরকে সাক্ষাতের সময় দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা গত দুদিন ধরে নানা কথা বললেও এই প্রথম মুখ খুললেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুনলাম তারা বিদেশে লবিস্ট রেখেছে, রাখতেই পারে। তাদের টাকা আছে। তারা তো বিদেশে লবিস্ট রাখতেই পারে। তাদের (বিএনপি) কাছে এত টাকা আছে যে এফবিআই অফিসারকে তারা কিনে ফেলল, জয়কে (প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়) কিডন্যাপ করে মেরে ফেলার জন্য। সেই পরিকল্পনা তারা করল, এটা ধরা পড়ল ওই আমেরিকাতেই। বিএনপির অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, দেশের কাজ নেই, আন্তর্জাতিক কাজ করে বেরাচ্ছে। এত টাকা বিদেশে আসে কোত্থেকে? সেটাও তো একটা প্রশ্ন। কাজেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আমরা সারা দিনরাত খেটে যখন ওপরে তুলি, এদের কিছু মানুষের জন্য সেটা নষ্ট হয়। এরা নিজেদেরও সর্বনাশ করে, দেশেরও সর্বনাশ করে। তিনি দেশবাসীকের এদের বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা দেশের সম্পদ নষ্ট করেছে, চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে, এতিমের টাকা মেরেছে জনগণকে আমি বলব, এদের বিরুদ্ধে সবসময় ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সজাগ থাকতে হবে। কারণ এরা দেশটাকে ধ্বংস করে দেবে। বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনসমর্থন কিন্তু আমাদের ব্যাপক। মানুষ বিশ^াস করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তাদেরও উন্নতি হয়। আপনারা দেখেছেন আইআরআই-এর একটা গবেষণা। তাদের গবেষণায় বেরিয়েছে আওয়ামী লীগকে জনগণ ভোট দেবে এবং আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে ওপরে। সভায় আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রায় সকল সদস্য উপস্থিত রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে নতুন নতুন রাজনৈতিক জোটকে স্বাগত জানান। সূচনা বক্তব্যের পর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়।
×