ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ কোরিয়াকে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

দক্ষিণ কোরিয়াকে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে দুই শ’ ৬০ কোটি মার্কিন ডলারের নতুন অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। এক বিবৃতিতে ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশন এজেন্সি একথা জানিয়েছে। ওয়াশিংটন ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনায় অচলাবস্থার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। খবর এএফপির। বিবৃতিতে বলা হয়, সমুদ্রে টহল দেয়ার জন্য বিশাল আকারের ছয়টি পোসিডন বিমান বিক্রি করা হবে। যার মূল্য দুই শ’ ১০ কোটি মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় চুক্তিতে ৫১ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের ৬৪ প্যাট্রিয়ট মিসাইল দেয়া হবে। বিক্রয় চুক্তি বাতিলের জন্য কংগ্রেসের হাতে ১৫ দিন সময় রয়েছে। তবে এটি সম্ভবত সিউল ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে বাতিল হবে না। দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে হাজার হাজার মার্কিন সেনার উপস্থিতি রয়েছে। যারা উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে সম্ভাব্য পারমাণবিক হামলার হুমকি প্রতিরোধে কাজ করছে। বোয়িংয়ের তৈরি পি-৮এ পোসিডন গোয়েন্দাবৃত্তির পাশাপাশি সাবমেরিন ও ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপকারী অস্ত্রের প্রতিরোধের জন্য ব্যবহার করা হবে। সংস্থাটি জানায়, প্রস্তাবিত বিক্রয়টি মার্কিন বৈদেশিক নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার সমর্থনে করা হচ্ছে। অস্ত্রগুলো কোরিয়ান নৌবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। জাতীয় প্রতিরক্ষা ও উল্লেখযোগ্যভাবে জোটবদ্ধ অভিযান পরিচালনায় এগুলো বিশেষ অবদান রাখবে। টেক্সাসভিত্তিক লকহেড-মার্টিন প্যাট্রিয়টগুলো তৈরি করেছে। প্যাট্রিয়টগুলোর নক্সা করা হয়েছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য বায়ুবাহিত হুমকিকে আটকানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে। দক্ষিণ কোরিয়া এই ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে তার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ক্ষমতা উন্নত, রাষ্ট্রীয় অখ-তা রক্ষা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার হুমকি প্রতিরোধ করবে। এই প্রস্তাবিত অস্ত্রবিক্রি ও সমর্থনে ওই অঞ্চলের মৌলিক সামরিক ভারসাম্য পরিবর্তন করা যাবে না। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র চীনাভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই কোম্পানিগুলোর সিইও উত্তর কোরিয়ান নাগরিক ও রুশ সহায়তাপ্রাপ্ত। অভিযোগ রয়েছে এই কোম্পানিগুলো উত্তর কোরিয়াকে অবৈধভাবে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নতুন এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে চীনভিত্তিক ইয়ানবিয়ান সিলভাস্টার নেটওয়ার্ক টেকনোলজি কোম্পানি ও এর উত্তর কোরিয়ান প্রধান নির্বাহী জং সং এইচওয়া এবং রুশভিত্তিক সিস্টার কোম্পানি ভোলাসায়াস সিলভার স্টার। এক বিবৃতিতে মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপগুলো উত্তর কোরিয়া থেকে অবৈধভাবে রাজস্ব প্রবাহ বন্ধ করতে নেয়া হয়েছে। যারা বিদেশে অবস্থান করে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হিসেবে নিজেদের সত্যিকারের পরিচয়ের সঙ্গে প্রতারণা করে ভিন্ন নাম প্রকাশ ও কোম্পানির সামনে তা গোপন করে রাখে, উপনাম ও তৃতীয় কোন দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেয়। মানুচিন বিশ্বজুড়ে কোম্পানিগুলোকে সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য সতর্ক করে দেন। যাতে উত্তর কোরিয়ান শ্রমিকরা তাদের অজান্তেই প্রযুক্তি প্রকল্পগুলোতে নিয়োজিত হয়ে কাজ করছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই পদক্ষেপের ফলে কূটনৈতিক উপায়ে সংলাপের মাধ্যমে কোরিয়া উপদ্বীপকে সম্পূর্ণরূপে নিরস্ত্রীকরণ করার প্রক্রিয়া অর্জনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। ইয়ানবিয়ান সিলভারস্টার কোম্পানির এক ম্যানেজার জানিয়েছেন, অভিযোগগুলো অসম্ভব। আমি কখনই জং সং এইচওয়া নাম শুনিনি। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিং সুয়াং বলেন, চীন জাতিসংঘ সনদ সম্পূর্ণ মেনেই উত্তর কোরিয়ায় কাজ করছে। চীন একতরফাভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রণয়নকারী যেকোন দেশের বিরোধিতা করে। চীন ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিজেদের কঠোর অবস্থান নিয়েছে। কোন ভুল পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ওয়াশিংটন আরও অভিযোগ করেছে, উত্তর কোরিয়ানদের কাজ করার অনুমতি দিয়ে রুশরা উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রাশিয়া লঙ্ঘন করেছে। রাশিয়া এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
×