ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দশ বছরেও নবায়ন হয়নি ২ হাজার যানবাহনের ফিটনেস

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  দশ বছরেও নবায়ন হয়নি ২ হাজার যানবাহনের ফিটনেস

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ গণপরিবহন এবং ব্যক্তিগত যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস সনদ গ্রহণ, নবায়নে যে গতি আশা করা হয়েছিল তা আসছে না। মাসখানেক আগে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বগুড়া কার্যালয়ে যে ভিড় দেখা গিয়েছিল তা আর নেই। কর্তৃপক্ষ বললেন, রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স ও ফিটনেস নবায়নে যানবাহনের মালিকদের কিছুটা সচেতনতা এসেছে। তবে তাও ধীরগতি। এদিকে উত্তরাঞ্চলের মধ্যবর্তী জেলা বগুড়ায় বিআরটিএ অফিসের লোকবল খুবই কম। সহকারী পরিচালক (এডি), পরিদর্শকসহ ১১টি পদের মধ্যে বর্তমানে কাজ করছেন ৯ জন। তারপরও প্রতিনিয়ত সরকারী নির্দেশে কাজের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অন্তত ৪০ জনের লোকবল দরকার, এমনটি মনে করে বগুড়া বিআরটিএ। বিআরটিএ সূত্র জানায়, বগুড়া গণপরিবহনের বাস মিনিবাসসহ কয়েক হাজার যানবাহনের ফিটনেস সনদ গত দশ বছরেও নবায়ন হয়নি। প্রতি বছর ফিটনেস সনদ নবায়নের নিয়ম। দীর্ঘদিনেও ফিটনেস নবায়ন না হলে ওই যানবাহনগুলোর রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে সড়কে চলাচলের বৈধতা থাকে না। তারপরও যানবাহনগুলো সড়ক ও মহাসড়কে চলছে। বিআরটিএ সূত্র জানায়, বগুড়ায় যানবাহনের সংখ্যা ১৫ হাজার ৭শ’ ৪৭টি। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বাস ও ট্রাক ৬ হাজার ১শ’ ২৯টি। সিএনজি চালিত অটোরিক্সার সংখ্যা ৫ হাজার ৫শ’ ৫৮টি। বগুড়া অঞ্চলে লাইসেন্সধারী পেশাদার চালক আছেন ৩২ হাজার ৫শ’ ২ জন। তবে এই সংখ্যার বেশিরভাগ চালকের লাইসেন্সের মেয়াদ ৫ বছর অতিক্রম করেছে। নিয়মানুযায়ী ৫ বছর পর তা নবায়ন করতে হয়। চলতি বছর আগস্ট মাস পর্যন্ত নবায়ন হয়েছে প্রায় ২ হাজার। পেশাদার চালক না থাকায় সড়কে দুর্ঘটনার হার বেড়েছে। সরকারী সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে যানবাহনের চালকের ট্রেনিংয়ের পর লাইসেন্স দেয়া হবে। বিআরটিএ থেকে এই ট্রেনিং দেয়া হবে। বিআরটিএ’র নথিতে বগুড়ায় দশ বছরের বেশি সময় ফিটনেস নবায়ন হয়নি এই সংখ্যা ২ হাজার ৯শ’ ২টি। এর মধ্যে বেসরকারী ও ব্যক্তি মালিকানাধীন যান ২ হাজার ৭শ’ ২৭টি। যার ৪৭ শতাংশ পরিবহনে নিয়োজিত বাস মিনিবাস ও অন্যান্য যানবাহন। এর বাইরে ফিটনেস নবায়ন ছাড়াই পণ্যবাহী ট্রাক, মিনি-ট্রাক ও পিকআপ চলাচল করছে ১ হাজার ১শ’ ২৯টি। বিআরটিএর যানবাহন পরিদর্শক ফয়েজ আহমেদ জানান, যে সকল যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ফিটনেস আপডেট (হালনাগাদ) করা নেই সেগুলোর নবায়নের জন্য মালিকদের চিঠি দেয়া হচ্ছে। এর আগে এ বছর ৩০ এপ্রিলের মধ্যে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে নবায়ন করতে বলা হয়। এই সময়ে খুব কম সংখ্যক নবায়ন হয়েছে। জুলাই মাস থেকে নতুন করে চিঠি দেয়া শুরু হয়। এ বছর জুলাই মাসের শেষে নিরাপদ সড়ক চাই দাবির আন্দোলন গড়ে ওঠার পর ৫ আগস্ট দেশ জুড়ে ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু হলে যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও নবায়নে গতি বাড়ে। প্রতিদিন বগুড়া বিআরটিএ অফিসে নবায়নের হিড়িক পড়ে যায়। কিছুদিন এই গতি বেড়ে যাওয়ার পর ফের ধীর গতিতে নবায়নের জন্য লোকজন আসছেন। নিত্যদিন তারা খোঁজ খবর নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জানান, সরকারীভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যারা দশ বছরের বেশি সময় ধরে ফিটনেস নবায়ন করেননি তারা এই সুযোগ না নিলে বিআরটিএ’র সার্ভার থেকে তালিকা মুছে ফেলা হবে। তখন এইসব যানবাহন রাস্তায় চললে তা অবৈধ বলে ধরে নেয়া হবে।
×