ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে হারাতে চান তামিম

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে হারাতে চান তামিম

মিথুন আশরাফ ॥ ভিসা সঠিক সময়ে না পাওয়ায় রবিবার দলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত যেতে পারেননি বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবাল। মঙ্গলবার ভিসা হতেই উড়াল দিয়েছেন। বুধবারই নেমে পড়েছেন অনুশীলনে। বৃহস্পতিবারই জানিয়ে দিলেন ১৫ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় চান। শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারা মানে তো সাবেক বাংলাদেশ কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহেকেও হারানো। সেটিই চান তামিম। হাতুরাসিংহে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবসময়ই জড়িয়ে থাকবেন। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল; এই তিন বছরে যে তার অধীনে স্বর্ণসময়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। এখন তিনি আর বাংলাদেশ দলের কোচ নন। তিনি শ্রীলঙ্কার কোচ। আর সেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই এশিয়া কাপের প্রথমদিনে লড়াই করবে বাংলাদেশ। তামিম বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই আমরা আমাদের সাবেক কোচকে (হাতুরাসিংহেকে) হারাতে চাই।’ তবে এই হারানোর বিষয়টিকে প্রতিশোধ হিসেবে দেখতে চান না তামিম, ‘তবে খুব ভাল মানসিকতা নিয়ে, প্রতিশোধ নেয়ার জন্য নয়।’ হাতুরাসিংহে বাংলাদেশের কোচ থাকার সময় ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার মাটিতে শ্রীলঙ্কাকে টেস্টে হারিয়েছে। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলকে টেস্টে হারিয়েছে। বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসে র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরার আসনে বসেছে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। সেমিফাইনালেও উঠেছে। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপেও খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নিয়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে। এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছে। এই শ্রীলঙ্কান কোচের অবদান অনেক। ক্রিকেটারদের সঙ্গে অবশ্য অম্ল-মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তার। নিজের সিদ্ধান্তেই অটল থাকায় বিশ্বাসী ছিলেন হাতুরাসিংহে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালের নবেম্বরে বাংলাদেশ দলের কোচের পদ ছেড়ে দেন। নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার কোচের দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নিয়েই বাংলাদেশের ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি জিতে নেন। হাতুরাসিংহের দলের সঙ্গে খেলা মানেই এখন প্রতিশোধ বিষয়টি সামনে উঠে আসে। তামিম হাতুরাসিংহের সময়ের মুহূর্তগুলো মনে করার সঙ্গে বাংলাদেশ যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততে চায়, সেই আশাও প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা (দল) তার সঙ্গে অসাধারণ কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছি। চার-পাঁচ বছর কেউ কোচ হিসেবে থাকলে সম্পর্কের উত্থান-পতন থাকবেই। কিন্তু কোচ হিসেবে তিনি আমাদের জন্য অসাধারণ কাজ করেছেন। কেউ তার কাছ থেকে এই কৃতিত্ব ছিনিয়ে নিতে পারবে না।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘শুধু তাকে হারানোর কথা ভাবলে কাজ হবে না। খুব ভাল ক্রিকেট খেলার ব্যাপারে অবশ্যই মনঃসংযোগ করতে হবে।’ হাতুরাসিংহে দলে থাকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে জেতার প্রবল সুযোগ দেখছেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। হাতুরাসিংহে যে বাংলাদেশের কোচ ছিলেন। তিনি সাকিব-তামিমদের শক্তি ও দুর্বলতা ভাল করেই জানেন। ধনঞ্জয়া তাই বলেছেন, ‘এটি আমাদের জন্য শক্তিশালী জায়গা। সে (হাতুরাসিংহে) তাদের (বাংলাদেশ) ব্যাটিং-বোলিংয়ের শক্তি ও দুর্বলতার জায়গাগুলো জানে। এখান থেকে ইতিবাচক বিষয়গুলো তুলে নেয়ার ভাল সুযোগ রয়েছে আমাদের।’ বাংলাদেশ দল এরই মধ্যে দুবাইয়ে অনুশীলন করে চলেছে। দলের ক্রিকেটাররা কন্ডিশন সম্পর্কে বুঝে গেছেন। দিনে গরম। রাতে শিশির পড়ার প্রবণতা আছে। আর তাতে করে দল গড়াও একটু ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশিরে যে বোলিংটা ভাল করা যায় না। বিশেষ করে স্পিনাররা নিজেদের মেলে ধরতে পারেন না। বাংলাদেশ দলের মূল শক্তিই আবার স্পিন। তামিম সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাকিস্তান সুপার লীগ খেলে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। পেশোয়ার জালমির হয়ে ৬ ম্যাচ খেলেন। ৩২.২০ গড়ে ১৬১ রান করেন। দুবাইয়ে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তামিমের। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানান, ‘আমার দুবাই নিয়ে কিছুটা অভিজ্ঞতা আছে। পাকিস্তান সুপার লীগ খেলেছি। উইকেট একইরকম থাকে না। কখনও ব্যাটিংয়ের জন্য ভাল থাকে। কখন সিমার ও স্পিনারদের জন্য ভাল থাকে। আমরা কেমন উইকেট পাই সেটিই দেখার বিষয়। তবে দুবাইয়ে খেলা সবসময়ই আনন্দদায়ক। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আশা করছি ১৫ তারিখ দুর্দান্ত একটি ম্যাচ হবে।’ আর সেই ম্যাচে হাতুরাসিংহেকে হারাতে চান তামিম। হাতুরাসিংহেকে হারানো মানেই তো শ্রীলঙ্কাকে হারানো। শ্রীলঙ্কাকে হারানো মানেই তো হাতুরাসিংহেকে হারানো।
×