ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

মহিলা সমিতি মিলনায়তনে কচি স্মৃতি নাট্যোৎসব

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মহিলা সমিতি মিলনায়তনে কচি স্মৃতি নাট্যোৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিছক বিনোদন নয়, সমাজ ও মানুষের কথা বলে নাটক। কল্যাণমূলক সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে নাটক হতে পারে শৈল্পিক হাতিয়ার। তেমনই এক অঙ্গীকারাবদ্ধ নিবেদিত নাট্যকর্মী ছিলেন আবু মুহাম্মাদ মুরতাঈশ কচি। পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক। সময়ের সকল নাট্যান্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা এই মানুষটির ১৬তম প্রয়াণ দিবস ছিল বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারও পদাতিক নাট্য সংসদ আয়োজনে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী ‘কচি স্মৃতি নাট্যোৎসব ২০১৮’। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেইলি রোডের মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহীম মিলনায়তনে তিন দিনের এ উৎসবের সূচনা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব ম. হামিদ, আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রসাদ দেবনাথ ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ। সভাপতিত্ব করেন পদাতিকের সভাপতি সৈয়দ তাসনীন হোসাইন। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে মঞ্চস্থ হয় পদাতিকের ৩৮তম প্রযোজনা ‘কালরাত্রি’। লামিসা শিরীন হোসাইনের ‘লোন সার্ভাইভার’ গল্প অবলম্বনে প্রযোজনাটির নাট্যরূপ দিয়েছে ড. তানভীর আহমেদ সিডনী। নির্দেশনা দিয়েছেন ওয়াহিদুল ইসলাম। রক্ত¯্র্েরাত বয়ে যাওয়া লড়াই আর বিসর্জনের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের কাহিনী উঠে এসেছে নাটকে। বর্ণিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের আত্মত্যাগী ভূমিকার কথা। বিশ^বিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ও আশপাশের এলাকায় ঘটে যাওয়া নৃশংসতা অবলম্বনে এগিয়েছে নাটকের গল্প। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন শাখাওয়াত হোসেন শিমুল, সানজিদা পারভীন, পুষ্প, চমক, মোঃ ইমরান খান, ইকরামুল ইসলাম, সালমান শুভ চৌধুরী, জিনিয়া আজাদ, তাসমী চৌধুরী, আবু নাসেম লিমন, ফরহাদ সুমন প্রমুখ। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলমান এ উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ শুক্রবার। এদিন সন্ধ্যায় একই মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে ‘গুণজান বিবির পালা’। উৎসবের শেষ দিন মঞ্চস্থ হবে ‘গহনযাত্রা’। সুমিয়ে কানেকোর জাপানি ট্র্যাডিশনাল কনসার্ট ॥ বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশু একাডেমী মিলনায়তনে ভেসে বেড়াল কণ্ঠ ও যন্ত্রসঙ্গীতের মোহনীয় সুর। অনুষ্ঠিত হলো জাপানিজ ট্র্যাডিশনাল কনসার্ট। সেই কনসার্টে অনবদ্য পরিবেশনা উপস্থাপন করেন নন্দিত জাপানী বাদ্যযন্ত্রশিল্পী ও গায়িকা সুমিয়ে কানেকো। অনুষ্ঠানে সুমিয়ে কানেকো জাপানিক কোটো ও শ্যামিসেন বাজিয়ে শোনান। সেই সঙ্গে শিল্পী পরিবেশন করেন তার নিজের লেখা গান। আয়োজনের শুরুতে জাপানের ফুকুওকায় ২০১৭ ও ২০১৮ সালে এশীয় প্যাসিফিক চিলড্রেন কনভেনশনে (এপিসিসি) অংশগ্রহণকারী জুনিয়র এ্যাম্বাসেডর দল দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় জাপান দূতাবাসের কাউন্সিলর ইয়াসুহারু শিনতো, হেড অব কালচার মাচিকো ইয়ামামুরা, শিশু একামেডীর চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও পরিচালক আনজীর লিটন উপস্থিত। শিশুদের উদ্দেশে সেলিনা হোসেন বলেন, এটি জাপানের ঐতিহ্য ও কালচার সম্পর্কে আমাদের জানার একটা সুযোগ। এটা তোমাদের জন্য একটা বিরল সৌভাগ্যের ব্যাপার। তোমরা অবশ্যই জাপানিজ মিউজিক থেকে শিক্ষা নেয়ার চেষ্টা করবে। ইয়াসুহারু শিনতো বলেন, জাপানিক মিউজিক একটু অন্যরকম লাগতে পারে। তবে মনোযোগসহকারে শুনলে বোঝা যাবে বাংলাদেশী মিউজিকের সঙ্গেও মিল রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, যে মিউজিক ভালবাসে সে অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ। আজিমপুর গার্লস স্কুলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া’ কর্মসূচী ॥ রাজধানীর আজিমপুর গবর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিকাশের সহায়তায় ‘বইপড়া’ কর্মসূচীর আওতায় বই বিতরণ করেছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচীর সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার সকালে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, বিকাশ লিমিটেডের চীফ এক্সটার্নাল এ্যান্ড কর্পোরেট এ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল (অব) শেখ মোঃ মনিরুল ইসলাম, শিশুসাহিত্যিক আলী ইমাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক (প্রভাতীশাখা) মোঃ আবুবকর সিদ্দিক। সভাপতিত্ব করেন উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ প্রফেসর হাছিবুর রহমান। দেশে আলোকিত মানুষ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র গত ৪০ বছর ধরে সারাদেশে স্কুল ও কলেজ ছাত্রছাত্রীদের জন্য নানাবিধ উৎকর্ষ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। দেশভিত্তিক উৎকর্ষ [বইপড়া] কার্যক্রমের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর্মসূচী। বর্তমানে সারাদেশে এই কর্মসূচীর আওতায় প্রায় ১৪,০০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৫ লাখ ছাত্রছাত্রী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্কুল ও কলেজ ছাত্রছাত্রীদের জন্য পরিচালিত বইপড়া কর্মসূচী ‘দেশভিত্তিকউৎকর্ষ কার্যক্রম’-এর সঙ্গে ২০১৪ সাল থেকেই সম্পৃক্ত আছে বিকাশ। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচীতে ২০১৮ সালে ৩৮০০০ বইসহ গত ৫ বছরে এ পর্যন্ত প্রায় ১৭৮,০০০ কপি বই প্রদান করেছে বিকাশ। ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে বনসাই প্রদর্শনী ॥ যান্ত্রিক শহর ঢাকায় বৃক্ষরাজির অপার সৌন্দর্য ছড়িয়ে শুরু হলো চার দিনের বনসাই প্রদর্শনী। বৃহস্পতিবার সকালে ধানম-ির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে এ প্রদর্শনী উদ্বোধন হয়। প্রতিষ্ঠার দশম বর্ষপূর্তিতে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে রেডিয়েন্ট বনসাই সোসাইটি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপু ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নী সাহা। বনসাই সোসাইটির সভাপতি গুলসান নাসরীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন আহমেদ। শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বনসাই একটি প্রাচীন শিল্প। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বনসাইয়ের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। বৃক্ষরাজির শৈল্পিক সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলে সেটিকে ঘর সাজানোর উপকরণ হিসেবে বনসাই শিল্প এক বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। বৃক্ষরাজি আমাদের কাছ থেকে ক্ষতিকর কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে আমাদের অক্সিজেন প্রদান করে। যার কারণে বৃক্ষরাজি আমাদের কাছে অনেক উপকারী। নিজেদের কল্যাণের জন্যই বেশি করে বৃক্ষ রোপণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কিছুদিন আগে ত্রিশ লাখ বৃক্ষ রোপণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। বনসাই শিল্প এখন আয়ের উৎসেও পরিণত হয়েছে। যে কেউ ৫/৮ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে বনসাইয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই মাসে ১৫/২০ হাজার টাকা আয় করতে পারে। কুটির শিল্প হিসেবেও বনসাইয়ের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। বিলুপ্তির হাত থেকে বৃক্ষরাজিকে রক্ষা করে বনসাইয়ের মাধ্যমে যে অনন্য শিল্প গড়ে উঠেছে এ শিল্পকে রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আয়ের পাশাপাশি বনসাই থেকে নির্মল পরিবেশও পাওয়া যেতে পারে। রঙ্গন, ফুকেন্টি, রক্ত চন্দন, পাকুড়, বাগান বিলাস, বট, চায়না বটসহ ২৫০ প্রজাতির তিন শতাধিক বনসাই স্থান পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে। বনসাই শিল্পকর্ম দেখার পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে বনসাই সংগ্রহের সুযোগ। সোসাইটির সভাপতি গুলসান নাসরীন চৌধুরী জানান, ১ হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকায় পাওয়া যাবে এসব বনসাই। ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলমান এ প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।
×