স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বনামে ফিরল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে যার স্মৃতি জড়িয়ে আছে। সংস্কারের পর বৃহস্পতিবার পাঁচ তারকা হোটেলটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় উদ্বোধনের পর তিনি হোটেলের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। হোটেলটির সংস্কার কাজে ৬২০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল, পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ফারুক খান। নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে বলে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে।
১৯৬৬ সালে শাহবাগসংলগ্ন মিন্টো রোডে চালু হওয়া হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মুক্তিযুদ্ধসহ নানা ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় প্রথম গেরিলা আক্রমণটি হয় ইন্টারকন্টিনেন্টালে। ইন্টারকন্টিনেন্টালে থেকেই মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করেছিলেন বিদেশী সাংবাদিকরা। তখন এই হোটেলটি রেডক্রস জোন হিসেবে স্বীকৃত ছিল।
ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপ ১৯৬৬ থেকে ১৯৮৩ পর্যন্ত এ হোটেলের ব্যবস্থাপনায় ছিল। তাদের পর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব এসেছিল আন্তর্জাতিক হোটেল সেবাদানকারী আরেক প্রতিষ্ঠান শেরাটন।
প্রায় ২৮ বছর পর ২০১১ সালের এপ্রিলে শেরাটন চলে গেলে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডই হোটেলটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেয়। তখন রূপসী বাংলা নামে চালু হয় হোটেলটি। সরকারী কোম্পানি বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড হোটেলটির মালিক।
এরপর ২০১২ সালে ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপ পুনরায় এই হোটেল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ফিরতে চাইলে ২০১২ সালে তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়। তার দুই বছর পর ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে এর সংস্কার কাজ শুরু হয়।
ইন্টারকন্টিনেন্টালকে সাজানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মুঘল স্থাপত্যশৈলীকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
রূপসী বাংলা হোটেলে ২৭২টি কক্ষ থাকলেও সংস্কারের পর ইন্টারকন্টিনেন্টালে কক্ষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৬টি। তবে কক্ষের আয়তন বাড়ানো হয়েছে।
২২৬টি কক্ষের মধ্যে ৪০ বর্গমিটার আয়তনের ২০১টি ডিলাক্স, প্রিমিয়াম ও এক্সিকিউটিভ কক্ষ, ৬০ বর্গমিটার আয়তনের পাঁচটি সুপিরিয়র স্যুইট, একই আয়তনের ১০টি ডিলাক্স স্যুইট, ৭৫ বর্গমিটার আয়তনের পাঁচটি ডিপ্লোম্যাটিক স্যুইট এবং ১৫০ বর্গমিটার আয়তনের পাঁচটি প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইট।
ইন্টারকন্টিনেন্টাল দুটি বলরুম ও সাতটি সভাকক্ষ ২১ হাজার বর্গফুটের। প্রধান বলরুমটির নাম রাখা হয়েছে রূপসী বাংলা। সুইমিং পুল ও ডাইনিং হলের জায়গা পরিবর্তন করা হয়েছে। বড় করা হয়েছে বলরুমের আকার। এছাড়া হোটেলের মূল ফটকও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আধুনিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত সুইমিং পুল ছাড়াও জিমনেসিয়াম, স্পাসহ নানা সুবিধা থাকছে ইন্টারকন্টিনেন্টালে।