ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণী এক শিক্ষকেই পাঠদান

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণী এক শিক্ষকেই পাঠদান

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার দক্ষিণ বলইবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১১ জন। অথচ শিক্ষক মাত্র একজন। তাই ওই শিক্ষককে দু’টি শিফটে একই সঙ্গে ঘুরে ঘুরে সব ক্লাস নিতে হচ্ছে। এতে একদিকে শিক্ষাদান হচ্ছে ব্যাহত। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণ থেকে। গত বছরের নবেম্বর মাস থেকে চলছে এ অবস্থা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এজন্য শিক্ষক সঙ্কটকে দায়ী করেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষক সঙ্কট এ বিদ্যালয়ের জন্য নিয়মিত একটি সমস্যা। উপজেলা সদর থেকে তুলনামূলক দুর্গম এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় কোন শিক্ষকই এখানে বেশি দিন থাকেন না। এ কারণে শিশুদের পড়াশোনা নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় এলাকার অভিভাবকদের। সরেজমিনে বলইবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষক উত্তম চন্দ্র ম-ল একটি শ্রেণীকক্ষে শিশু, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ৪৮ শিক্ষার্থীকে বসিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান করছেন। দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফয়সাল জানায়, এভাবে সবাইকে এক জায়গায় বসিয়ে ক্লাস করলে পড়া বুঝতে কষ্ট হয়। চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইসরাত জাহানের মা ইয়ানুর বেগম বলেন, স্কুলে শিক্ষক নাই তাই মেয়ের পড়াশোনার অনেক ঘাটতি হচ্ছে। অন্য স্কুলে দেয়া সম্ভব না। গত দেড় বছর ধরে শুনছি নতুন শিক্ষক আসবেন। কিন্তু কোন শিক্ষক আসেননি। মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে আমরা চিন্তিত। বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্য মোঃ নিজাম পাহলান জানান, গলাচিপা, কলাপাড়া ও বরগুনার আমতলী এ তিন উপজেলার সীমান্ত এলাকায় গোলখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ বলইবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। তিনটি উপজেলা সদর থেকেই এ বিদ্যালয়ে যাতায়াত তুলনামূলক দুর্গম। তাই এখানে কোন শিক্ষক আসতে চান না। শিক্ষক সঙ্কটের বিষয়টি একাধিকবার কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানান হয়েছে। কিন্তু সমাধান হয়নি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক উত্তম চন্দ্র ম-ল জানান, তিনি গলাচিপা সদর থেকে বিদ্যালয়ে আসেন। শিক্ষার্থীদের পাঠদান ছাড়াও সব রকমের দাফতরিক কাজও তাকে করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় একই ইউনিয়নের অপর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষককে এ বিদ্যালয়ে পাঠদান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে। কিন্তু তারা আসছেন না। গলাচিপা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঙ্কটজনিত সমস্যাটি আমাদের জানা আছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই প্রাথমকি বিদ্যালয়গুলোতে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
×