বিশেষ প্রতিনিধি ॥ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন আর উত্তরবঙ্গে মঙ্গা নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এখন উৎপাদন থেকে খাবার টেবিল পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে। এটিকে আরও শক্তিশালী করে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা হবে। এজন্য শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিকতা জরুরী। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা সেনিটারিয়ান পরিষদ (স্বাসেপ) আয়োজিত ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আমরা স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সরকার আপনাদের প্রশিক্ষণকে কাজে লাগাতে চায়। তিনি বলেন, সরকার যখনই আপনাদের আমাদের কাছে ন্যস্ত করবে তখনই আমরা আপনাদের নিয়ে কাজ শুরু করতে পারব। তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠনের মধ্য দিয়ে আমরা মাত্র শুরু করলাম। আমাদের জনবল বর্তমানে মাত্র ৩৪১। তাই আমাদের সঙ্গে কাজ করতে হলে আপনাদের ধৈর্য ধরতে হবে। তিনি বলেন, ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠনের পর পুরো কার্যক্রম চালাতে ৮/১০ বছর সময় লেগেছে। আমরা আশা করছি এর চেয়ে কম সময়ে আমাদের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ও শক্তিশালী করতে পারব।
কামরুল ইসলাম বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরাপদ খাদ্যের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট তাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দেয়নি খুনী চক্র। বিএনপি-জামায়াত, এরশাদ, জিয়াউর রহমান বিভিন্ন সময়ে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকায় বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিকতা দরকার। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে রেখে গিয়েছিল। আবার ২০০৯ সালে এসে আমরা এখন পর্যন্ত দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে রেখেছি। এমনকি আমরা কিছু কিছু রফতানিও করেছি। আমরা দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছি। অথচ বিএনপি-জামায়াত সব সময় দেশে খাদ্য ঘাটতি তৈরি করে রেখেছিল, যাতে বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন চাইলে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইলে সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। তাই আগামী নির্বাচনে আবারও শেখ হাসিনার সরকারকে জয়ী করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না। কে নির্বাচনে আসল বা কে আসল না, খালেদা জিয়াকে নিয়ে আসল নাকি বাদ দিয়ে আসল এটা ব্যাপার না। তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, নির্বাচন ঠেকানোর মতো সাংগঠনিক শক্তি বিএনপির নেই। আমরা আশা করি, বিএনপি ২০১৪ সালে যে ভুল করেছিল সেই ভুল এবার আর করবে না।
স্বাসেপ আহ্বায়ক এ এফ জুনায়েদ আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক। বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, স্বাসেপের সাংগঠনিক উপদেষ্টা এম খছরু চৌধুরী প্রমুখ।
