ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কর ফাঁকিবাজ বিত্তশালীদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিল এনবিআর

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কর ফাঁকিবাজ বিত্তশালীদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিল এনবিআর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের বিত্তশালীরা ঠিকভাবে কর পরিশোধ করছেন কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে। তারই লক্ষ্যে কর ফাঁকিবাজ বিত্তশালীদের চিহ্নিত করতে কমিশনারেটগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। বুধবার রাজধানীর শান্তিনগরের বিসিএস (কর) একাডেমি ভবনে ৩৬তম নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী কর কমিশনারদের ছয় মাসব্যাপী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে তিনি এ কথা জানান। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশের যত বড় বড় ব্যবসায়ী রয়েছে, তাদের করের আওতায় আনতে অফিসারদের নির্দেশনা দিয়েছি। তাদের কমিশনাররা চিহ্নিত করছেন। মনিটরিং করে দেখা হবে, বিত্তশালীরা ঠিকমতো কর দিচ্ছে কি না বর্তমানে আমাদের যে ট্যাক্সেশন জোনগুলো রয়েছে, সেগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ কর দাতাদের ফাইলগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েলথ এক্সের প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বে অতি ধনীদের উত্থানে শীর্ষে বাংলাদেশ। কর ফাঁকি দায়ে ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশে ধনীরা যে সব সময় কর ফাঁকি দেয় তা নয়। তারা করও দেয়। আবার দেশের উন্নয়নে অংশ নেয়। তবে সবাই ঠিকমতো কর দিচ্ছে কি না দেখা হচ্ছে। মনিটরিং হচ্ছে। কমিশনারেট অফিসগুলোকে কর ফাঁকিবাজ চিহ্নিত করতেও বলা হয়েছে। যারা আমাদের আয় কর দিচ্ছেন না, তাদের আয় করের আওতায় আনতে উদ্বুদ্ধ করব। বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিসিএস ক্যাডারদের উদ্দেশে চেয়ারম্যান বলেন, এটা হলো সেবার জায়গা। এখানে অহমিকা করা যাবে না, করদাতা কাউকে হয়রানি করা যাবে না। কারও প্রতি বৈষম্য করা যাবে না। সাধারণ মানুষের ভাল’র জন্য কাজ করে যেতে হবে। খুব বেশি কর বৃদ্ধি করা গৌরবের কাজ নয় উল্লেখ করে মোশাররফ হোসেন বলেন, করদাতাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে গৌরবের কাজ। এখানে আপনারা যারা যোগদান করেছেন, প্রথমে আগামী এক বছরের মধ্যে সবাই ইটিআইএন করে আয়কর ও রিটার্ন দিয়ে দেবেন। প্রতিজনে অন্তত ১০ জন করে ৪০০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করবেন। আত্মীয়-স্বজনসহ পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে কর দিতে উদ্বুদ্ধ করবেন। তিনি বলেন, শহরে নতুন নতুন বাড়িওয়ালার পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও করের পরিধি বাড়াতে হবে। এ জন্য আপনাদের মধ্য থেকে অনেককে গ্রামে পোস্টিং দেয়া হয়েছে। আপনারা প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান প্রার্থীদের এবং মেম্বারসহ এলাকায় বিত্তশালীদের চিহ্নিত করে আয়কর রিটার্নের আওতায় আনবেন। কারণ ২০১৮-১৯ সালের বাজেটে যে বরাদ্দ ধরা হয়েছে, নতুন সরকারের কাজ বাস্তবায়নের রাজস্ব আহরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি। বিসিএস (কর) একাডেমির উদ্দেশে তিনি বলেন, এখানে আয় কর আইন, হিসাব বিজ্ঞানের আইন শুধু পড়ালে হবে না। আরও আধুনিক ও সমসাময়িক আইনগুলো শিক্ষা দিতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠানোর আহ্বানও জানান তিনি। বিসিএস (কর) একাডেমির মহাপরিচালক বজলুর কবির ভূঁঞার সভাপতিত্বে এসময় এনবিআরের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জিয়া উদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও কর-৮ এর কমিশনার সেলিম আফজাল বক্তব্য রাখেন। ৪২ জন বিসিএস ক্যাডারকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৬তম বিসিএসের ক্যাডার ৩৯ জন। বাকি তিনজন ৩৪তম বিসিএস ক্যাডার।
×