ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভোট দিতে ভুল করলে দেশ ফের অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ভোট দিতে ভুল করলে দেশ ফের অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় নির্বাচনে ভোট প্রদানের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়িত দেশের উন্নয়নসমূহ মনে রাখার জন্য দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সব সেক্টরে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। যোগ্য নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলকেই ভোট দিতে হবে। ভুল করলে দেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। থেমে যাবে দেশের উন্নয়নের গতি। দেশের উন্নয়নের বর্তমান স্রোত অব্যাহত থাকলে খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম সেরা দেশ হবে। বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও জাতীয় নাক, কান ও গলা ইনস্টিটিউট আয়োজিত কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট বরাদ্দ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ জিল্লার রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত প্রমুখ। বিএনপি নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি ম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যোগ্যভাবে নির্বাচনে খেলার জন্য প্রস্তুত হোন। ফাউল করলে লাল কার্ড পেয়ে আউট হয়ে যাবেন। নির্বাচনে ভোট প্রদান নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না। ভোট জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। সাংবিধানিকভাবে সঠিক সময়েই নির্বাচন হবে। কানে শোনে না এমন ৪০টি শিশুকে নামমাত্র খরচে কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট বিতরণের বিষয়টি তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই এমন ভালবাসামাখা কাজ করা সম্ভব। এমন অসংখ্য উদাহরণ তিনি দেখিয়েছেন। দেশের স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নের কিছু চিত্র তুলে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়। স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান হয়েছে। স্বাস্থ্য বিষয়ক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে যুগান্তকারী সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রশংসিত হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে। দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক। এমন মজবুত অবকাঠামোর ওপর দাাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাত্রার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, কমিউনিটি ক্লিনিক চালু, স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। দেশের ৯৯ ভাগ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। দেশে অনুর্ধ ১২ মাস বয়সের শিশুদের সকল টিকা প্রাপ্তির হার ৮১ ভাগ। হ্রাস পেয়েছে মাতৃ ও শিশুর মৃত্যুহার। পোলিও ও ধনুষ্টংকারমুক্ত হয়েছে দেশ। বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি উপ-খাতসমূহের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই সব কর্মসূচীর মূল লক্ষ্য হলো জনগণের বিশেষ করে মহিলা, শিশু এবং সুবিধাবঞ্চিতদের স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেবা প্রাপ্তির চাহিদা বৃদ্ধি, কার্যকর সেবা প্রাপ্তি সহজলভ্য এবং স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেবাসমূহের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস, রোগের প্রাদুর্ভাব ও মৃত্যুর হার হ্রাস এবং পুষ্টিমান বৃদ্ধি করা। দেশব্যাপী একটি ব্যাপক-ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানান মোহাম্মদ নাসিম। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা এবারও কঠোর নিরাপত্তায় অনুষ্ঠিত হবে ॥ এদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, অন্যান্যবারের মতো এবারও এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা কঠোর ও নিñিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে। চিকিৎসা শিক্ষার মান এগিয়ে নিতে কোন আপোস করা হবে না। প্রকৃত মেধাবীরাই মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ পাবে। এ লক্ষ্যে এখন থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সর্বোচ্চ কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। বুধবার সচিবালয়ে আসন্ন এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে সভাপতিত্বকালে তিনি একথা বলেন। আগামী ৫ অক্টোবর দেশের ১৯ কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সকল মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং সেন্টার বন্ধ হলেও পরীক্ষার দিন পর্যন্ত কোচিং সেন্টারগুলোর সংলগ্ন এলাকায় নজরদারি বাড়াতে হবে যাতে সেগুলোকে কেন্দ্র করে কোন অপতৎপরতার সুযোগ না থাকে। তিনি জানান, প্রশ্নপত্র তৈরি, ছাপানো, বিতরণসহ সকল পর্যায়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ডিজিটাল ট্র্যাকিং-এর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে যেন কোনভাবেই এই প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ না হয়। সভায় অন্যদের মাঝে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জিএম সালেহ উদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদ হাসান, বিএমডিসি’র পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ সহিদুল্লা, ওভারসাইট কমিটির সদস্য কলামিস্ট সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম, গাজী মিডিয়ার চীফ এডিটর ইশতিয়াক রেজাসহ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
×