ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা মামলায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশীট

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা মামলায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশীট

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ১২ সেপ্টেম্বর ॥ ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদগাহের পাশে জঙ্গী হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিল করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আরিফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাবিবুল্লাহর আদালতে এ চার্জশীট দাখিল করেন। অভিযুক্তরা হচ্ছে-জেএমবির শীর্ষ নেতা মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, অনোয়ার হোসেন, সোহেল মাহমুদ, রাজীব গান্ধী, মোঃ আনোয়ার হোসেন ও ঘটনাস্থল থেকে আটক জাহিদুল হক তানিম। বর্তমানে তারা সকলে কারাগারে রয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৩ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। ৫ আসামির বিরুদ্ধে এ চার্জশীট দেয়া হয়। ঘটনার পর শোলাকিয়া ও ঢাকার হলি আর্টিজান হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীকে আটক করা হয়। পরে তার কাছ থেকে তথ্য পেয়ে সারাদেশে শুরু হয় অভিযান। আটক করা হয় শীর্ষ জঙ্গীদের। বর্তমানে পুলিশের হাতে আটক পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মামলার মোট আসামি ছিল ২৪ জন। তাদের মধ্যে ১৯ জন মামলার তদন্ত চলার সময় বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অভিযোগপত্রে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বিভিন্ন সময় নিহত অপর ১৯ আসামিকে অভিযোগ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। হলি আর্টিজান ও শোলাকিয়া হামলায় একটি জঙ্গীগোষ্ঠী জড়িত ছিল। শোলাকিয়া মাঠের ইমাম ও মুসল্লিদের হত্যা করাই ছিল হামলার উদ্দেশ্য। কিন্তু নিরাপত্তা চৌকিতে বাধা পেয়েই তারা সেখানে হামলা চালায়। এ সময় তিনি বর্বরোচিত এ হামলায় জড়িত এবং অর্থ ও অস্ত্রের জোগানদাতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও জানান। ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদ-উল-ফিতরের দিন জামাত শুরুর কিছু সময় আগে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে অতর্কিত হামলা চালায় জঙ্গীরা। এ সময় বোমা আর গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে শোলাকিয়া ময়দানের আশপাশ। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় পুলিশের দুই কনস্টেবল ও স্থানীয় বাসিন্দা এক গৃহবধূ। হামলার সময় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাস্থলে নিহত হয় আবির রহমান নামে এক জঙ্গী। এ ছাড়া আহত অবস্থায় আটক করা হয় শফিউল ইসলাম ডন নামে এক জঙ্গীকে। পরে সেও মারা যায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে। পরে ২০১৬ সালের ১০ জুলাই কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। অবশেষে বুধবার চাঞ্চল্যকর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
×