ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সকল পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে চাপ দিতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সকল পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে চাপ দিতে হবে

মোয়াজ্জেমুল হক/ এইচএম এরশাদ ॥ মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর বর্বর নির্যাতন হয়েছে। এদের ওপর মিয়ানমার পক্ষ যা করেছে তা অবর্ণনীয়। রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সকল পক্ষ থেকে চাপ দিতে হবে। বুধবার কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে একথা বলা হয়েছে ওআইসি (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন) এর পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের পক্ষে। প্রেস ব্রিফিংকালে প্রতিনিধি দলনেতা অর্থাৎ সেক্রেটারি জেনারেল এম জুহামেদ কুরাইশি নিয়াজ বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে এবং এর একটি স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোকে আরও ব্যাপক জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে যেসব দেশের ভাল সম্পর্ক রয়েছে, সঙ্কট সমাধানে তাদেরকেও উদ্যোগী হতে হবে। ওআইসি পার্লামেন্টারিয়ান এই নেতা আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ-মিয়ানমার যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে তা ভাল একটি দিক। মিয়ানমারের সঙ্গে যেমব মুসলিম দেশের সম্পর্ক ভাল রয়েছে তাদেরকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। পালিয়ে এসে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা যা জেনেছি এবং পরিদর্শনে যা প্রত্যক্ষ করেছি তাতে আমরা নিশ্চিত ওরা বর্বর আচরণের শিকার। তাই রোহিঙ্গাদের পাশে আন্তর্জাতিক সকল মহলকে এগিয়ে আসতে হবে, সাহায্য দিতে হবে। পাশাপাশি মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। ওআইসি সংসদীয় প্রতিনিধি দল সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে সরাসরি ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। দুপুর ১২টার আগে প্রতিনিধি দল উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউএনএইচসিআরের ট্রানজিট সেন্টার পরিদর্শন করেন। সেখানেও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তারা কথা বলেন। ওআইসির এ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন সংস্থার ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আলী আজগর মোহাম্মদী সিজানী। ডিরেক্টর অব কনফারেন্স জাহিদ হাসান কুরশি, ইরানের সংসদ সদস্য সৈয়দ হিমায়েত মিরজাদি, মোহাম্মদ হোসাইন কুর্ডলু, তুরস্কের হেড অব ডেলিগেশন ওরহান এ্যাটালাই, মমতাজ জারনি, মালয়েশিয়ার ডেপুটি স্পীকার রশিদ বিন হাসনুন, মহসিন বিন আবদুল মালেক, আলজিরিয়ার সংসদ সদস্য ইউসেফ এডজিসা, সুদানের ওমর ইবনে দুউদ, মাহামুদু দিজুঘা, ডিজুদ্দি, ঈসা খা ঈসা ইউসুফ, আল হাসান মোহাম্মদ, অসীম ওমর আজসেত আদনান, মোক্তার আহমেদ, মাহজুমা হাসান মুসা আবদেল রহমান হোসাইন, মরক্কোর মোহাম্মদ ওজ্জিন। তাদের সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব স্বর্ণালী ছন্দাসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ। চলছে যৌথ অভিযান ॥ উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে সেনা, র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চলছে গত রবিবার থেকে। অভিযানের ফলে অপরাধী চক্রের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছে। ফলে গত কদিনে ক্যাম্প অভ্যন্তরে দৃশ্যমান কোন অপরাধ সংঘটিত হয়নি। অভিযান পরিচালনাকারীদের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে, লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের মাঝে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা সহজ একটি বিষয় নয়। যেহেতু তারা আশ্রিত সেক্ষেত্রে অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনা ঘটলে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে অভিযানে অংশগ্রহণকারী সকলকে সতর্কতার সঙ্গে কর্মকা- চালানোর নির্দেশনা রয়েছে। তবে রোহিঙ্গা শিবিরে কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপ যে রয়েছে তা তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার সময় সেখানকার বিদ্রোহী গ্রুপের কিছু সদস্যও সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসার তথ্যও প্রশাসন পেয়েছে। এরাই এখন আশ্রয় শিবিরের সার্বিক পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
×