ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাকিদের হারিয়ে ফাইনালে ভারত, প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পাকিদের হারিয়ে ফাইনালে ভারত, প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ

রুমেল খান ॥ কোন অঘটন নয়, ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ’ খ্যাত সাফ সুুজুকি কাপের ইতিহাসে (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ) পরিসংখ্যানের বিচারে সেরা দুটি দলই ফাইনালে উঠল। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ফাইনালে ১১ বারের ফাইনালিস্ট (এ নিয়ে টানা সপ্তমবার) ভারত মুখোমুখি হবে পাঁচবারের ফাইনালিস্ট মালদ্বীপের। বুধবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমিতে ভারত ৩-১ গোলে হারায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে। প্রথম সেমিতে মালদ্বীপ ৩-০ গোলে হারায় নেপালকে। ভারত এই আসরে সর্বোচ্চ সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আর মালদ্বীপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একবার। মজার বিষয়Ñ এই দু’দলই একই গ্রুপের (‘বি’) দল। ভারতের কৃতিত্ব হচ্ছেÑ এ আসরে তারা পাঠিয়েছে অনুর্ধ-২৩ বা যুব দল। পরিসংখ্যান এবং শ্রেষ্ঠত্বে পাকিস্তানের চেয়ে যোজন ব্যবধানে এগিয়ে ভারত। এ পর্যন্ত দু’দলের মধ্যে লড়াই হয়েছে ২৪ বার। ১৫ বারই জিতেছে ভারত। মাত্র ৩ বার জিতেছে পাকিস্তান। বাকি ৬ ম্যাচ ড্র হয়। গোলসংখ্যায়ও এগিয়ে ভারত (৩৬-১৭)। দু’দল সর্বশেষ মুখোমুখি হয় ২০১৩ সাফে, কাঠমান্ডুতে। গ্রুপপর্বের ম্যাচে সেবার ১-০ গোলে জিতেছিল ভারতই। ভাগ্য নিয়তি এমন একটা বিষয় যা কাউকে হাসায়, কাউকে আবার কাঁদায়। সাফ সুজুকি কাপে অন্তত দুটো দলের নাম বলা যাবে, যাদের ‘ভাগ্য’ নামের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়েছিল। একটি দল বাংলাদেশ। আরেকটি মালদ্বীপ। বাংলাদেশ ছিল ‘এ’ গ্রুপে আর মালদ্বীপ ‘বি’ গ্রুপে। দুই দলই সাফে একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ ২০০৩ এবং মালদ্বীপ ২০০৮ সালে। ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সাফ সুজুকি কাপে ১৯৪ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী বাংলাদেশ ছিল এমনই এক হতভাগা দল যারা নিজেদের গ্রুপে (চার দলের গ্রুপ) সর্বোচ্চ ৬ পয়েন্ট পেয়েও সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি! পক্ষান্তরে ১৫০ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী মালদ্বীপ নিজেদের গ্রুপে (তিন দলের গ্রুপ) কোন ম্যাচ না জিতে এবং কোন গোল না করেও ঠিকই নাম লেখায় শেষ চারে? কিভাবে? গ্রুপপর্বে তারা গোলশূন্য ড্র করে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। পরের ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে যায় ০-২ গোলে। এদিকে শ্রীলঙ্কাও ০-২ গোলে হেরে যায় ভারতের কাছে। ফলে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তাদের (মালদ্বীপের) গোল, গোল তফাত, পয়েন্ট, হেড টু হেড ... সবকিছুই সমান হয়ে যায়। তখন টুর্নামেন্টের ‘হাস্যকর’ বাইলজ অনুযায়ী তারা টসে জিতে সেমিতে খেলা নিশ্চিত করে। সেই টস-ভাগ্যে জয়ী দল মালদ্বীপই কিনা বিপুল বিক্রমে এখন স্বপ্নের ফাইনালে। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচে তারা দুর্দান্ত খেলে ৩-০ গোলে নেপালকে হারিয়ে টিকেট কাটে ফাইনালের। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো এই আসরের ফাইনালে উঠল তারা। ‘এ’ গ্রুপে অপর দুই প্রতিপক্ষ নেপাল-পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশেরও ছিল সমান ৬ পয়েন্ট। কিন্তু গোল ব্যবধানে নেপালের চেয়ে পিছিয়ে পড়ে চোখের জলে বিদায় নিতে হয় স্বাগতিকদের। সবাই কি ভেবেছিল, আর কি হলো! যেখানে ড্র করলেই সেমিফাইনালে ওঠা যায় নয় বছর পর। সেখানে কিনা হেরে যেতে হয় গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের হাস্যকর-শিশুতোষ ভুলে! এমনই দুর্ভাগ্যের শিকার হয় বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। শনিবার তারা ০-২ গোলে হেরে যায় নেপালের কাছে। ম্যাচে জিতে গ্রুপ ‘এ’র গ্রুপসেরা হয়ে শেষ চারে নাম লেখায় কখনও সাফ ফুটবলের শিরোপা না জেতা হিমালয়ের দেশ নেপাল। আর হেরে গিয়ে ২০০৯ সালের পর আবারও সেমিতে উঠতে পারেনি স্বাগতিক এবং ২০০৩ সাফের শিরোপাধারী বাংলাদেশ।
×