নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল, ১১ সেপ্টেম্বর ॥ ঢাকার বাসাবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হয়ে নড়াইলের ১০ বছরের শিশু রোকসানা এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। এদিকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গ্রেফতার এড়াতে মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী সোনিয়া খাতুন নড়াইলের লোহাগড়া আমলী আদালতে সেচ্ছায় অত্মসমর্পণ করেছে। লোহাগড়া আমলী আদালতের বিচারক মোঃ জাহিদ হাসান জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
যৌন নিপীড়ন থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৮ মাস ধরে এমন নির্যাতন নেই, যা হয়নি শিশুটির উপর। মৃত্যু পথযাত্রী শিশুটি এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটের পেড্রিয়াট্রিক আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে তা সারা টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়েছে। যে কোন সময় শিশু রোকসানা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারে বলে চিকিৎসকদের আশঙ্কা।
সারা শরীরের আঘাতের কালশিটে দাগ, দীর্ঘদিনের লাগাতার নির্যাতনের চিহ্ন, দগদগে ক্ষতও রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। নিস্তেজ কঙ্কালসার দেহটি হাসপাতালের বিছানার সঙ্গে লেপ্টে আছে। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বাতাস, খাদ্য গ্রহণের শক্তিটুকু নিঃশেষ হয়ে গেছে, কৃত্রিম উপায়ে চলছে শ্বাস। আট মাস আগে ঢাকার ওয়ারী এলাকার ইলিয়াস হোসেন পলাশ নামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে (সেলিম টাওয়ার-বাড়ি-৪৫, লালচান রোড) ঝির কাজ নেয় লোহাগড়া উপজেলার বাহিরপাড়া গ্রামের শিশু রোকসানা। সেখানে ইলিয়াস হোসেনের স্ত্রী সোনিয়া, তার ভাই ইব্রাহিম শিশুটির ওপর নির্যাতন চালায়। দীর্ঘ নির্যাতনের এক পর্যায়ে রোকসানা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে তাকে ঢাকা সেন্ট্রল হাসপাতালে ভর্তি করে পাষ- পরিবারটি। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে স্বজনদের খবর দিয়ে ঢাকায় নিয়ে ১৭ আগস্ট রাতে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় রোকসানাকে।