ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সিএসইর কৌশলগত অংশীদার নিয়ে দর কষাকষি

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সিএসইর কৌশলগত অংশীদার নিয়ে দর কষাকষি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সঙ্গে কৌশলগত অংশীদার (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার) হিসেবে যুক্ত হয়েছে চীনের অন্যতম বৃহৎ সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ। কিন্তু দেশের অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এখনও নিজেদের কৌশলগত অংশীদার নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে চীন, ভারত, দুবাই ও জার্মানির একাধিক স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে আলোচনা দর কষাকষি পর্যায়ে রয়েছে বলে জানালেন সিএসই সংশ্লিষ্টরা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বর্ধিত সময়ের মধ্যেই সিএসইর কৌশলগত অংশীদার ঠিক হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। সিএসই পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, ডিএসইর অনেক আগেই আমরা সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে দর কষাকষি শুরু করেছিলাম। সেই আলোচনা এখনও চলমান আছে। পাশাপাশি মুম্বাইর ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। নতুন করে জার্মানির একটি স্টক এক্সচেঞ্জও সমঝোতা চুক্তি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে আমরা তাদের সুনির্দিষ্ট অফার করার প্রস্তাব দিয়েছি। আশা করছি, বিএসইসি বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেই আমরা সিএসইর জন্য কৌশলগত অংশীদার পেয়ে যাব। দুবাই স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কথা অনেক দূর এগোলেও আপাতত তা স্থগিত রাখা হয়েছে। কারণ হিসেবে সিএসইর এই পরিচালক জানান, দুবাই স্টকের টাকার অভাব নেই। কিন্তু কৌশলগত অংশীদারের যে শর্ত সেই কৌশলগত অভিজ্ঞতার ঘাটতি আছে। তারা পরে বাহারাইন স্টক এক্সচেঞ্জকে যুক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করলেও আলোচনা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে, তবে বাদ দেয়া হয়নি। এদিকে ডি-মিউচুয়ালইজেশনের (ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথকীকরণ) শর্তানুযায়ী, ৬০ শতাংশ শেয়ার ব্লক রেখে বাকি ৪০ শতাংশ শেয়ার সদস্যদের মাঝে বণ্টন করা হয়েছে। এই ৬০ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে ২৫ শতাংশ স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর এবং বাকি ৩৫ শতাংশ পাবলিক এবং অন্যান্য ইনস্টিটিউশনের কাছে বিক্রি করতে হবে। কৌশলগত বিনিয়োগকারী নেয়ার জন্য ২০১৫ সালে এক বছর সময় দিয়ে চিঠি ইস্যু করে বিএসইসি। পরে ছয় মাসে করে আরও দুবার সময় বাড়িয়েছে কমিশন, যা গত ৮ মার্চ শেষ হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডিএসই চীনের সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও শেনচেন স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়ামকে নিজেদের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চুক্তি করতে সমর্থ হয়। কিন্তু সিএসই কৌশলগত অংশীদার ঠিক করতে না পেরে সময় বাড়ানোর আবেদন করে। বিএসইসি সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বছরের মে মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে। বর্ধিত সময়ের চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কৌশলগত অংশীদার বাছাই করতে পারেনি সিএসই কর্তৃপক্ষ। তবে এর মধ্যে কয়েকটি স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেছে বলে সিএসই সূত্র জানিয়েছে। এর মধ্যে চীনের সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ, ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, দুবাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও জার্মানভিত্তিক একটি স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে। তবে এর মধ্যে সাংহাই ও ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের দিকেই ঝোঁকটা বেশি সিএসইর। সিএসই সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সিএসই মূলত শেয়ারের দর নির্ধারণ নিয়ে কিছুটা জটিলতায় পড়েছে। কারণ সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে যখন সিএসইর আলোচনা চলছিল তখন শেয়ার প্রতি দর ২৬-২৭ টাকায় আলোচনা চলছিল। কিন্তু ডিএসই সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে শেয়ার প্রতি দর ২১ টাকায় চুক্তি করেছে। ফলে কিছুটা বেকায়দায় পড়ে গেছে সিএসই। কারণ ডিএসই আকার, কর্মকাণ্ড আর পরিধিতে সিএসই থেকে অনেক এগিয়ে। সিএসইর অন্যতম সদস্য বি রিচ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম বলেন, কৌশলগত অংশীদার খোঁজার দায়িত্ব পুরোপুরি বোর্ডের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। তবে কৌশলগত অংশীদার বাছাইয়ের সুযোগ থাকলে আমার মনে হয় সাংহাইকে বেছে নেয়া উচিত। কারণ যেহেতু ডিএসইতে সাংহাই যুক্ত হচ্ছে সেহেতু অপর স্টক এক্সচেঞ্জেও একই পার্টনার থাকলেও কনফ্লিক্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। সিএসইর সাবেক সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, ডিএসইর সঙ্গে এ মাসেই চীনা দুই স্টক এক্সচেঞ্জ যুক্ত হচ্ছে সেখানে আমরা এখনও অংশীদার খুঁজেই যাচ্ছি এটা আমাদের ভাবমূর্তির সংকট।
×