ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধেয়ে আসছে ফ্লোরেন্স

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ধেয়ে আসছে ফ্লোরেন্স

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের ধেয়ে আসছে ক্যাটাগরি ৫ এর কাছাকাছি হারিকেন ফ্লোরেন্স। এজন্য প্রায় ১৫ লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার সেখানে আঘাত হানতে পারে। প্রচ- শক্তিশালী ঝড়টির বাতাসের তীব্রতা ঘণ্টায় ১৫৫ মাইল বলে জানা গেছে। সিএনএন ও ওয়াশিংটন পোস্ট। হারিকেন ফ্লোরন্স আঘাত হানতে পারে এই আশঙ্কায় নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা ও ভার্জিনিয়ার প্রায় ১৫ লাখ মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বলা হয়েছে। ফ্লোরেন্স হতে পারে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, হারিকেন ফ্লোরেন্স এখন ক্যাটাগরি ৪ মাত্রার ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ মাইল। এটি আরও শক্তিশালী হয়ে ক্যাটাগরি ৫-এর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বৃহস্পতিবার উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার সকালে এটি নর্থ ক্যারোলিনার কেপ ফেয়ার থেকে ১২শ’ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল। তখন এটি ক্যাটাগরি-২ ঝড় ছিল। এটি ক্যাটাগরি-৫ ঝড়ে পরিণত হতে পারে। কারণ এটি আটলান্টিকের উষ্ণ পানি থেকে শক্তি সঞ্চয় করছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন কেন্দ্র (এনএইচসি) জানিয়েছে, ফ্লোরেন্স গতি প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে এটি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করবে। ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি ক্যারোলাইনা উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এটি ক্রমাগতভাবে শক্তিশালী হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ঘূর্ণিঝড়টি যে পথে এগিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে বৃহস্পতিবার রাতে এটি নর্থ ক্যারোলাইনার উয়িলমিংটনে আঘাত হানবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টি ও তা থেকে বন্যা হতে পারে। উত্তর ক্যারোলিনায় ৪ নম্বর ক্যাটাগরির ঝড় সর্বশেষ আঘাত হেনেছিল ১৯৮৯ সালে। সেবার হারিকেন হুগোর আঘাতে ৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি এবং ৬০ নিহত হয়। এছাড়া ২০১৬ সালে আঘাত হেনেছিল হারিকেন ম্যাথিও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘূর্ণিঝড়টির জন্য প্রস্তুতি হিসেবে আগাম সতর্কতা জারি করেছেন। তিনি একে ‘অনেক বছরের মধ্যে পূর্ব উপকূলে আঘাত হানাতে যাওয়া অন্যতম সবচেয়ে মারাত্মক ঝড়’ বলে টুইটে মন্তব্য করেছেন।’ সাউথ ক্যারোলাইনা, নর্থ ক্যারোলাইনা ও ভার্জিনিয়ার অনেক স্থানে বাধ্যতামূলক সরে যাওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। ১০ লাখেরও বেশি মানুষ দুর্ভোগে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নর্থ ক্যারোলাইনা ও ভার্জিনিয়াতে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে। সাউথ ক্যারেলাইনার গবর্নর হেনরি ম্যাকমাস্টার মঙ্গলবারের মধ্যে উপকূলরেখার সব বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। উইলমিংটনে অবস্থিত নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে বলেছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় এরই মধ্যে ট্রাম্পকে জাতীয়ভাবে জরুরী অবস্থা ঘোষণার অনুরোধ জানিয়েছেন সাউথ ক্যারোলাইনা গবর্নর। এনএইচসি জানিয়েছে, ফ্লোরেন্সের ঝড়ো বেগের কারণে জীবনের ঝুঁকির আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। প্রবল বর্ষণে বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। সিনিয়র আবহাওয়াবিদ ডেন মিরার বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সার্বিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এটি কারও কারও জন্য ভয়াবহ হতে পারে। এদিকে হারিকেন ফ্লোরেন্সের কারণে শুক্রবার মিসিসিপ্পির পূর্ব নির্ধারিত র‌্যালি বাতিল করেছেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে সবাইকে সর্তক থাকতে বলেছেন। কর্তৃপক্ষ ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (ফেমা) সঙ্গে সমম্বয় করে লোকজনকে সরিয়ে নেয়াসহ জরুরী অবস্থার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। গত এক বছরে হারিকেন ইরমা ও দাবানল একাধিক দুর্যোগ পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে ফেমা।
×