ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গর্ভকালীন ত্বক সমস্যা

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

গর্ভকালীন ত্বক সমস্যা

গর্ভাবস্থায় নারীর দেহে কতিপয় গুরুতর ফিজিওলজিক্যাল পরিবর্তন সাধিত হয়। এই সময় পিটুইটারি, থাইরয়েড ও এ্যাডরিনাল গ্রন্থির কর্মকা- বৃদ্ধি পায়। ফলে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন ও স্টেরয়েড হরমোন তৈরি হয়ে থাকে। এরই প্রভাবে যে সমস্ত রোগ বা উপসর্গ তৈরি হয় তা নিম্নরূপ: চরমসবহঃধঃরড়হ : গর্ভবতী মায়ের স্তনের বোঁটা ও তার আশপাশের ত্বক, যৌনাঙ্গের বাইরের দিকের ত্বক কালচে রঙের হয়। * কিছুসংখ্যক ক্ষেত্রে বগল ও উরুতে এই ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। * সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হচ্ছে মুখের ম্যাসতা হওয়া যা কিনা অন্তত ৫০% ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় হতে দেখা যায়। * প্রসব করার পর কিছুদিনের মধ্যেই এই পরিবর্তিত রং আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসতে থাকে। চুল : অনেক ক্ষেত্রেই গর্ভবতীর মুখে সামান্য পরিমাণ বা তার চেয়ে কিছু পরিমাণের অবাঞ্ছিত লোম গজাতে দেখা যায় যা সাধারণত প্রসবের পর কমে যায়। তবে জটিল গর্ভাবস্থার সৃষ্টি হলে কিংবা অপারেশনের মাধ্যমে প্রসব করিয়ে থাকলে যদি অস্বাভাবিক রকমের শারীরিক বা মানসিক চাপ হতে দেখা যায় তবে কোন কোন ক্ষেত্রে প্রসবের ১ থেকে ৫ মাসের মধ্যে সাংঘাতিক রকমের চুল পড়ে যেতে দেখা যায়। তবে আসার কথা হচ্ছে যে, এক্ষেত্রে চুল পড়ে গেলেও প্রায় সব ক্ষেত্রেই পুনরায় স্বাভাবিক তা ফিরে আসে। ত্বক ফাটা : গর্ভাবস্থায় ত্বকের ওপর চাপ পড়ে। পেট বড় হওয়ার কারণে ত্বক প্রসারিত হতে থাকে। এক পর্যায়ে যখন আর প্রসারণ ঘটার ক্ষমতা থাকে না, তখন ত্বকে ফাটল ধরে। এই অবস্থাটাকে বলা হয় ঝঞজওঅঊ উওঝঞঊঘঝঅঊ। ৯০% গর্ভবতীর ক্ষেত্রে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। পেট ছাড়া ও ঐরঢ়, ইঁঃঃড়পশ এবং কদাচিৎ স্তনেও এই পরিবর্তন হয়ে থাকে। চবসঢ়যরমড়রফ এবংঃধঃরড়হরং : গর্ভাবস্থায় এই রোগ কখনও কখনও হতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে ফোস্কা থাকবে আর সঙ্গে দারুণ চুলকানি। যদিও রোগটি কম হতে দেখা যায় কিন্তু যদি হয়ে বসে তাহলে কিন্তু দারুণ রকম কষ্ট আর যন্ত্রণা দেয়। চৎঁৎরমড় ড়ভ চৎবমহধহপু : এক্ষেত্রে গর্ভবতীর পেটে লালচে দানা বা উদ্ভেদ হতে দেখা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভবতীর শেষের ৩ মাসে থাকে। এই দানা বা উদ্ভেদ এক হয়ে মিশে গিয়ে পুরো স্থানেই একটা লালচে ভাব সৃষ্টি করে। এতে থাকে অস্বাভাবিক রকমের চুলকানি। এ অবস্থায় রাতে গর্ভবতী ঘুমাতে পারে না চুলকানির কারণে। কখনও কখনও চুলকানির ফলে কষ ঝরতে থাকে। এগুলো ছড়াতে ইঁঃঃড়পশ ও ঞযরময তেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। কখনও কখনও বাহুতেও পায়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে, তবে কখনই মুখে হতে দেখা যায় না। সাধারণভাবে এটি প্রসবের পর পরই ভাল হয়ে যায়। চৎঁৎরমড় এৎধারফধৎঁস : এটি লিভার সিস্টেমের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে সারা শরীরে দারুণ চুলকানি শুরু হয় এবং সেই সঙ্গে জন্ডিস দেখা দেয়। প্রথম দিকে যে চুলকানি হয় তা শুধু রাতেই হয়ে থাকে। প্রথমে শরীরের অংশবিশেষ ধরে শুরু হলেও পরে সারা শরীরে বিস্তার ঘটে। এর সঙ্গে বমি বমি ভাব ও শারীরিক দুর্বলতা বিদ্যমান থাকে। সাধারণত সন্তান প্রসবের কিছুদিন পর পরই এটা ভাল হয়ে যায়। তবে ভবিষ্যতে এ পুনরায় সন্তানসম্ভাবা হলে তখন একই ভাবে উপসর্গ নিয়ে রোগটি আবার দেখা দিতে পারে। ওসঢ়বঃরমড় ঐবৎঢ়বঃরভড়ৎসরং : এটি সেরিয়াসিসের রোগের একটি বিশেষ গ্রুপ বা ধরন। যদিও এর সংখ্যা কম কিন্তু এটির গুরুত্ব কিন্তু অনেক বেশি কারণ এটি কখনও কখনও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় গর্ভবতী মহিলাদের জন্য। এটিও প্রসূতির শেষের ৩ মাসের মধ্যে কোন এক সময় দেখা দেয়। একবার যিনি আক্রান্ত হলেন পরবর্তী ক্ষেত্রে সে গর্ভবতী হলে এটি পুনরায় দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে চুলকানি না থাকলেও শরীরের একটি বিরাট অংশ জুড়ে আক্রান্ত পারে। এ ছাড়াও আরও ২/১ টি রোগ আছে যা গর্ভাবস্থায় হতে দেখা যায়। যেমন- ওসঢ়বঃরমড় ঐবৎঢ়বঃরভড়ৎসরং চৎঁৎরমড় এবংঃধঃড়হরং চৎঁৎরমড় ঋড়ৎষরপঁষরঃরং ড়ভ ঢ়ৎবমহধহপু ইত্যাদি। তবে এই রোগগুলো খুব কম অবস্থায়ই হতে দেখা যায়। ডাঃ দিদারুল আহসান চর্ম, যৌন ও এ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল-রাজী হাসপাতাল লিঃ
×