নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ১০ সেপ্টেম্বর ॥ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদীর তীরে জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণাধীন ভবনের জমি ভরাট করতে কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যন্ত্র বসিয়ে নদীর বালু তুলছে। এতে নদীর উপরে নির্মিত সেতু, তীর সংরক্ষণের বাঁধ ও আশপাশের স্থাপনা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে। জানা যায়, জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঢাকার শিকদার কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গণপূর্ত বিভাগের চুক্তি হয়েছে। চুক্তির পর ঠিকাদারের লোকজন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। প্রতিষ্ঠানটি নদীতে যন্ত্র বসিয়ে ২০দিন ধরে বালু তুলে ভবনের জমি ভরাট করছে।
সরেজমিন দেখা যায়, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের পাশে গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ভবনের জমি ভরাটের কাজ চলছে। গত ১৫ আগস্ট থেকে টাঙ্গন নদীর ওপরের সেতুর ২০-৩০ ফুট দক্ষিণ তীর সংরক্ষণ বাঁধের পাশে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। নদী থেকে বালু তোলার কাজে ব্যস্ত শ্রমিক আব্দুল হক জানান, ঠিকাদারের লোকজন বালু তুলতে বলেছেন। তাদের কথামতো তারা কাজ করছেন। কাজ শেষ হতে আরও সপ্তাহখানেক লাগবে। এভাবে বালু উত্তোলন করায় খননযন্ত্রের তলায় কমপক্ষে ৪০ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি। শহরের জলেশ্বরী তলা মহল্লার বাসিন্দা ছানোয়ার হোসেন বলেন, ঠিকাদার জমি ভরাটের খরচ সাশ্রয় করতে পার্শ্ববর্তী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে প্রকল্পের জমি ভরাট করছেন।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার কারণে নদীর ওপরের সেতু, নদীর তীর রক্ষা বাঁধের এবং নদীর তীরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের ক্ষতি হতে পারে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মুজাহিদ বলেন, আমার জানামতে নদী থেকে বালু তোলা হলে আশপাশের স্থাপনার কোন ক্ষতি হবে না। গণপূর্ত বিভাগের ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আল মামুন হক জানান, ঠিকাদান কোথা থেকে মাটি এনে জমি ভরাট করলেন, তা তাদের দেখার বিষয় নয়। তবে এতে যাতে কোন স্থাপনার ক্ষতি না হয়, সেটা দেখা হবে। ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, নদীর তীর ঘেঁষে খননযন্ত্র দিয়ে গভীর করে বালু তোলা হলে নদীর সেতু, তীর সংরক্ষণ বাঁধসহ আশপাশের স্থাপনা ধসে পড়তে পারে। টাঙ্গন নদী থেকে বালু তোলার জন্য ঠিকাদার তাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেননি। বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।