ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফিলিস্তিনীদের জন্য চিকিৎসা সহায়তা বাতিল করলেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  ফিলিস্তিনীদের জন্য চিকিৎসা সহায়তা  বাতিল  করলেন  ট্রাম্প

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পূর্ব জেরুজালেমে হাসপাতালগুলোতে ফিলিস্তিনীদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য বরাদ্দ আড়াই কোটি মার্কিন ডলার বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। ফিলিস্তিনীদের সুরক্ষার জন্য গড়ে তোলা হাসপাতালগুলোকে দেয়া ওই তহবিল হাসপাতালের পরিবর্তে অন্য কোনও খাতে কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। -খবর ওয়েবসাইটের ফিলিস্তিনীদের জন্য মার্কিন সহায়তা পুনঃপর্যালোচনার আওতায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। এ বছরের শুরুর দিকে ট্রাম্প ফিলিস্তিনীদের জন্য দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তা পুনঃপর্যালোচনার নির্দেশ দেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফিলিস্তিনীদের মার্কিন সহায়তা বরাদ্দ করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হতে এ পদক্ষেপ নেন তিনি। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, ‘সহায়তার ক্ষেত্রগুলো পুনঃপর্যালোচনার পর প্রেসিডেন্টের নির্দেশে আমরা পূর্ব জেরুজালেমের হাসপাতাল নেটওয়ার্কের জন্য বরাদ্দ প্রায় আড়াই কোটি মার্কিন ডলার অন্য কোথাও বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অন্যান্য জায়গায় সর্বোচ্চ প্রাধান্যের খাতগুলোতে এ তহবিল ব্যয় করা হবে।’ এ বছর এর আগে আরও দুই দফা ফিলিস্তিনীদের জন্য বরাদ্দ অর্থ সহায়তা হ্রাস বা বাতিলের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তার মধ্যে জানুয়ারিতে ফিলিস্তিনী শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের ত্রাণসংস্থা ইউএন রিফিল এ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সির (ইউএনআরডব্লিউএ) জন্য প্রতিশ্রুত সাড়ে ১২ কোটি ডলার অনুদান হ্রাস করে অর্ধেকে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয় তারা। পরে ওই অনুদান তহবিল পুরোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় গত মাসে পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনীদের সহায়তার জন্য পরিকল্পিত তহবিল থেকে প্রায় ২০ কোটি মার্কিন ডলার হ্রাসের ঘোষণা দেয়া হয়। সেবারও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ওই অর্থ ‘অন্য কোথাও অধিক-অগ্রাধিকার ভিত্তিক কোন প্রকল্পে’ ব্যবহার করা হবে। তবে এই অধিক-অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প বলতে ঠিক কী বোঝানো হচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি কর্মকর্তারা। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে শুরু থেকেই ফিলিস্তিন নেতাদের সম্পর্ক শীতল ছিল। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়ে তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের পর বিরোধ চরমে উঠে। ফিলিস্তিন নেতারা ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনারের নেতৃত্বে ওয়াশিংটনের নেয়া ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি উদ্যোগ বয়কট করেছেন। এরপরই ট্রাম্প প্রশাসন থেকে ফিলিস্তিনীদের জন্য বিভিন্ন সহায়তা বন্ধের বা হ্রাসের ঘোষণা আসতে শুরু করেছে। এভাবে অর্থ সহায়তা বন্ধের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষোভ ও অস্থিরতা আরও বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন ফিলিস্তিন নেতারা। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সর্বশেষ অর্থ সহায়তা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ‘যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনীদের শেষ করে দিতে চাইছে’। এর ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনীর জীবন এবং পূর্ব জেরুজালেমের হাসপাতাল কর্মীদের জীবনযাত্রা হুমকির মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের এমন বিপদজনক এবং ভয়ঙ্কর বড়াবাড়ি করে সব বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এটি ফিলিস্তিন জনগণের বিরুদ্ধে সরাসরি গণহত্যার নামান্তর।’
×