ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে আরও সংসদ অধিবেশন

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

   নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে আরও সংসদ অধিবেশন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ শুরু হয়েছে জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশন। কার্যোপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই অধিবেশন আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। নির্বাচনীকালীন সরকার গঠনের আগে অক্টোবরে আরও একটি অধিবেশন আহ্বানের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। চলতি সংসদের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা ও জাতীয় পার্টির মোঃ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে অধিবেশন মুলতবি করা হয়েছে। অধিবেশনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাসের কথা রয়েছে। রবিবার বিকেলে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। সকলকে শরতের শুভেচ্ছা জানিয়ে অধিবেশনের শুরু করেন স্পীকার। এরপর তিনি স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারের অনুপস্থিতিতে অধিবেশন পরিচালনার জন্য ৫ সদস্যের সভাপতিম-লী নির্বাচিত করা হয়। তারা হলেন- ইমরান আহমেদ, এবি তাজুল ইসলাম, মাহবুব উল আলম হানিফ, মোঃ ফখরুল ইমাম ও বেগম নুর জাহান বেগম। পরে বর্তমান সংসদের সদস্য ও সাবেক হুইপ এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মোঃ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কোফি আনান, সাবেক মন্ত্রী কল্পরঞ্জন চাকমা, প্রতিমন্ত্রী মোজাফ্ফর হোসেন এবং সাবেক সংসদ সদস্য শরীফ খসরুজ্জামান, আব্দুর রউফ মিয়া, মোঃ ফজলে এলাহী, আলফাজ উদ্দিন, অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান মন্ডল ও আনোয়ারা হাবীবসহ অন্যদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। আরও শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় খ্যাতিমান সাংবাদিক সমকাল পত্রিকার সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক এএইচএম মোয়াজ্জেম হোসেন, ভাষা সংগ্রামী আব্দুল বাতেন, লেখক রমা চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোস্তাক হোসেন, ডেইলি অবজারভারের নির্বাহী সম্পাদক আনিস আহমেদ, ইটিভির রিপোর্টার মামুনুর রশীদের মৃত্যুতে। শোক প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনার পর মরহুমের আত্মার শান্তি কামনাসহ মোনাজাত করা হয়। শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে অধিবেশন মুলতবি করা হয়। এর আগে সকালে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশন ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে অধিবেশন বসবে। অধিবেশনে অক্টোবরে আরও একটি অধিবেশন আহ্বানের বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সাবেক রাষ্ট্র্রপতি এইচএম এরশাদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ডেপুটি স্পীকার মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, মইন উদ্দীন খান বাদল ও প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে জানানো হয়, এই অধিবেশনে নতুন ১১টি সরকারী বিলসহ ২৩টি সরকারী বিল পাসের অপেক্ষায়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর জন্য ৮৪ ও এক হাজার ৫০৪টি সাধারণ প্রশ্ন পাওয়া গেছে। এছাড়া ১০৩টি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত নোটিস পাওয়া গেছে। এদিকে সংসদ অধিবেশন সামনে রেখে সংসদ ভবন এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়। সকাল থেকেই চারপাশে অবস্থান নেয় অসংখ্য র‌্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। যে কোন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে জলকামান থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবস্থা রাখে প্রশাসন। এমনকি সংসদ ভবনে প্রবেশ নিয়েও ছিল কঠোর কড়াকড়ি। উল্লেখ্য, দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। এ হিসেবে আগামী বছর ২৮ জানুয়ারি সংসদের ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের তিন মাসের মধ্যে পরবর্তী সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর নির্বাচনকালীন সরকারের আমলে সংসদ অধিবেশন বসার বাধ্যবাধকতা নেই।
×