ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন আজ

ভারত থেকে আরও ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি শুরু

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 ভারত থেকে আরও ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারত থেকে আরও ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি শুরু হচ্ছে আজ সোমবার। নয়াদিল্লীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুত আমদানি উদ্বোধন করবেন। সোমবার ভারতের সময় বিকেল চারটা ১৫ মিনিট আর বাংলাদেশে চারটা ৪৫ মিনিটে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুত আমদানির উদ্বোধন করবেন। বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালিদ মাহমুদ বলেন, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সোমবার বিকেলে হলেও রবিবার রাত বারোটায় বিদ্যুত আসা শুরু হবে। ভারতকে এজন্য ৩শ’ মেগাওয়াটের একটি চাহিদা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বরের প্রথম প্রহরে বিদ্যুত আমদানি শুরু করতে যাচ্ছি আমরা। এর মধ্য দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের বিদ্যুত বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটছে। ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার (এনএলডিসি) রাত ১২টা ২০ মিনিটে জানায়, ভারত থেকে বিদ্যুত আসা শুরু হয়েছে। রাতের মধ্যে আমদানি ৭০০ মেগাওয়াট পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি- পিজিসিবির প্রকল্প পরিচালক কিউ এম শফিকুল ইসলাম রাত একটায় জানান, ৭৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত এসেছে। বাংলাদেশ এর আগে ভারত থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করছিল, যা এখন এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। ভারতের মুর্শিদাবাদের বহরমপুর এবং বাংলাদেশের ভেড়ামারাতে নির্মাণ করা ব্যাক টু ব্যাক সাবস্টেশন দিয়ে এই বিদ্যুত বাংলাদেশে আসছে। শুরু হলো পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিদ্যুত রফতানি। ভেড়ামারা থেকে পিজিসিবির প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী কিউ এম শফিকুল ইসলাম টেলিফোনে জানান, আমরা সবাই এখানে রয়েছি। আপাতত ভারতকে ৩শ’ মেগাওয়াটের একটি চাহিদা দেয়া হয়েছে। রাত বারোটা থেকে বিদ্যুত সরবরাহের কথা। তবে কোন কারণে সম্ভব না হলে সকাল দশটা থেকে আসবে। গত ১১ এপ্রিল সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এটি অনুমোদন করে। পিডিবি সূত্র জানায়, স্বল্প মেয়াদে ৩শ’ ও ২শ’ মেগাওয়াট করে ভারতের দুটি কোম্পানির কাছ থেকে বিদ্যুত কেনা হচ্ছে। সরকার স্বল্প এবং দীর্ঘ দুই মেয়াদে বিদ্যুত কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বল্প মেয়াদে ২০১৮ থেকে ’১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দীর্ঘমেয়াদে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০৩৩ এর ৩১ মে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। এনভিভিএন (ইন্ডিয়া) থেকে স্বল্প মেয়াদে প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ৭১ পয়সা দরে দৈনিক ৩শ’ মেগাওয়াট এবং পিটিসি ইন্ডিয়া থেকে প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ৮৬ পয়সা দরে দৈনিক ২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হবে। আর দীর্ঘমেয়াদে এনভিভিএন প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৪৮ পয়সা মূল্যে ৩শ’ মেগাওয়াট এবং পিটিসি থেকে প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৫৪ পয়সা মূল্যে ২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হবে। প্রথম মেয়াদে মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যান। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশের বিদ্যুত সঙ্কট সামাল দিতে বন্ধুত্বের প্রতীকী হিসেবে ঢাকাকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। ওই সময় ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুত খাতে সহায়তা সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে ভারতের সরকারী খাতের বাইরে আরও ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত খোলাবাজার থেকে ক্রয়ের অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারী এবং বেসরকারী মিলিয়ে ২০১৩ সালের শেষ নাগাদ ভারত থেকে ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি শুরু করে সরকার। ওই সময়ে ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি শুরু হলেও পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে এক হাজার মেগাওয়াট করার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বেসরকারী বিদ্যুত উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে এই বিদ্যুত ক্রয় করা হবে এমন শর্তে সায় দেয়। ভারত সরকারের অনুমোদনের পর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এবং মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে ব্যাক টু ব্যাক সাবস্টেশনের দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণ করা হয়।
×