ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গজারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই রোগী

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 গজারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স  নিজেই রোগী

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই এখন রোগী। চিকিৎসা নিতে আসা মানুষ কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না। বরং নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। গজারিয়া উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ১০ বছর ধরে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও ১০ বছরেও চালু করা যায়নি। হাসপাতালটিতে শুধু রক্ত ও প্রসাব পরীক্ষার ব্যবস্থা ছাড়া অন্য কোন শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। পাওয়া যাচ্ছে না প্রয়োজনীয় ওষুধ। ভবনটিও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সেবা নিতে আসা শত শত রোগীকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের ভবেরচরের গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতাল। উপজেলার একমাত্র এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং ওষুধ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। চিকিৎসক এবং জনবল সঙ্কটে ধুঁকছে এই হাসপাতাল। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নোংরা পরিবেশ বিরাজ করছে। স্যাঁতসেঁতে। সংস্কার এবং পরিষ্কারের উদ্যোগ নেই। এই পরিবেশে চিকিৎসা নিতে এসে অনেকে আবার পাল্টা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জানা যায়, ১৯৭৪ সালে ছোট একটি ভবনে এ চিকিৎসা কেন্দ্রটির কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৮২ সালে উদ্বোধনের মাধ্যেমে বর্তমান ভবনটিতে সেবা কার্যক্রম শুরু করে। সে সময় হাসপাতালটি ৩১ শয্যাবিশিষ্ট ছিল। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এটি ৫০ শয্যায় উনীœত হয়। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে গড়ে সাড়ে ৪শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ রোগী সেবা নিতে আসেন। তারা আরও জানান, হাসপাতালে ৫০ শয্যার জন্য কমপক্ষে ৩১ চিকিৎসক প্রয়োজন। সেখানে কাগজেকলমে আছে মাত্র ২১ জন। এর মধ্যে ১০ জন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেষণে আছেন। বর্তমানে ১১ চিকিৎসক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স, হিসাবরক্ষক, পরিসংখ্যানবিদ, এন্ট্রি ল্যাব, রেডিওগ্রাফি পদও শূন্য। ঝাড়ুদার ৫টির মধ্যে চার পদে কেউ নেই। এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বালুয়াকান্দির মনির হোসেন জানান, এখানে নাক, কান, গলা, চোখের কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। তাই ভাল চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না তারা। তাই অনেক সময় বাইরের চিকিৎসকের ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, আমাদের এ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার চালু করার মতো যথেষ্ট যন্ত্রপাতি নেই। ডাক্তার ও লোকবলের সমস্যা আছে। হাসপাতালটিও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস জানান, হাসপাতালের অবস্থা খুবই খারাপ। আমি নিজে সব অবস্থা দেখেছি। হাসপাতালের ডাক্তাররা এখান থেকে বেতন নিচ্ছেন। মন্ত্রী, এমপিদের সুপারিশ নিয়ে রাজধানীর ভাল ভাল হাসপাতালে গিয়ে প্রেষণে কাজ করছেন। অনেকে ছুটিতে থাকছেন। ওটি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার যাবতীয় সমস্যা আছে তা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির বৈঠকে বহুবার এনেছি কিন্তু এখনও সমাধান হয়নি। তবে চেষ্টা চলছে।
×