ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নেপালের কাছে হেরে বিদায় বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নেপালের কাছে হেরে বিদায় বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছর দুয়েক ধরে বয়ে বেড়াতে হয়েছিল ‘ভুটান-কলঙ্ক’। ক’দিন আগে সেই কলঙ্ক মোচন হয়েছে। কিন্তু এখন আবার সৃষ্টি হয়েছে নতুন কলঙ্কের, যার নাম ‘নেপাল-কলঙ্ক’! যারা কোনদিনও সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়নি, এমনকি ফাইনালেও ওঠেনি (এই আসরে তাদের সেরা সাফল্য হচ্ছে দু’বার চতুর্থ স্থান অর্জন করা ১৯৯৫ এবং ১৯৯৯ সালে)। তাদের কাছেই কি না ঘরের মাঠে হেরে অশ্রুজলে বুক ভাসিয়ে বিদায় নিতে হলো একবারের চ্যাম্পিয়নদের! হ্যাঁ, হিমালয়ের দেশের কাছে পরাজিত বঙ্গদেশ। শনিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের শেষ এবং মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নেপালের কাছে ০-২ গোলে হেরে সাফ সুজুকি কাপ (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ) থেকে বিদায় নিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফলে নয় বছর পর আবারও সেমিফাইনালে ওঠা হলো না ১৯৪ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারীদের। অথচ অপর দুই প্রতিপক্ষ নেপাল-পাকিস্তানের মতো তাদের ছিল ৬ পয়েন্ট। কিন্তু গোল ব্যবধানে নেপালের চেয়ে পিছিয়ে পড়ে বিদায় নিতে হলো স্বাগতিকদের। ম্যাচে শ্রেয়তর, দ্রুতগতির এবং তুলনামূলক আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ১৬১ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী ‘দ্য গুর্খাালিস’ খ্যাত নেপাল। পক্ষান্তরে আগের দুই ম্যাচের চেয়ে এদিন বাংলাদেশের খেলা ছিল হতাশ জাগানিয়া। এদিন বাংলাদেশ আসলে হারে তাদের গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের কারণে। তার ‘শিশুতোষ’ ভুলের কারণে হেরে মাসুল দেয় বাংলাদেশ। সহজ বল ধরতে পারেন না যিনি, ম্যাচের পর ম্যাচে হাস্যকর সব ভুলে গোল হজম করেন, তাকে কেন জাতীয় দলে বারবার সুযোগ দেয়া হয়Ñ ম্যাচ শেষে এমনটাই প্রশ্ন তুলেছেন স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিত অনেক দর্শক। এদিন গ্যালারিতে খেলা উপভোগ করতে এসেছিলেন প্রায় ২০ হাজার দর্শক। তাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয় সোহেলের একটি ভুলে! ‘সোহেল, গো টু হেল’, ‘লম্বা হলেই ভাল গোলরক্ষক হওয়া যায় না’, ‘আশরাফুল ইসলাম রানাকে বসিয়ে সোহেলকে প্রতি ম্যাচে খেলানোর কারণ সোহেল আবাহনীর খেলোয়াড়, জাতীয় দলের ম্যানেজার রূপুও আবাহনীর ম্যানেজার। এখানে আবাহনী-আবাহনী কানেকশন! ফলে সোহেলের চেয়ে অনেক ভালমানের গোলরক্ষক হয়েও ক্লাবপ্রীতির কারণে খেলতে পারেননি রানা’ ... খেলা শেষে এমন হাজারও অভিযোগ শোনা যায় দর্শকদের কণ্ঠে। কেউ কেউ আবার মজা (নাকি দুঃখ?) করে বলেন, ‘গত দুই ম্যাচে সবুজ জার্সি পরে জিতেছিল বাংলাদেশ। আজ লাল জার্সি পড়ায় কুফা লেগেছে বলে হেরেছে’, ‘আজ শনিবার ছিল বলে বাংলাদেশকে শনির দশায় পেয়েছিল, তাই জেতেনি!’ এমনি আরও কত কি! অথচ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দল মাঠে নেমেছিল অনেক সুবিধাজনক অবস্থান নিয়ে, অন্য দুই দলের (পাকিস্তান-নেপাল) চেয়ে। সেমিতে যেতে তাদের প্রয়োজন ছিল ন্যূনতম ড্র। অথচ সেই ম্যাচ কি না তারা হেরে গেল নিজেদের (পড়ুন সোহেলের!) ভুলে। আর ওই গোলটিই বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস তলানিতে নিয়ে যায়। সেই কারণেই ম্যাচের একেবারে শেষদিকে আরেকটি গোল হজম করে বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় বাংলাদেশের। ৩২ মিনিটে ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো এবারের সাফে গোল হজম করে তারা। বিমল গাত্রি মাগারের ফ্রি কিক হাতে রাখতে ব্যর্থ হন গোলরক্ষক সোহেল (১-০)। ৮৯ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় নওযুগ শ্রেষ্ঠর শট বারপোস্টে লেগে ঢুকে যায় জালে। আর তা চেয়ে চেয়ে দেখেন সেই সোহেল (২-০)! ভুটানের বিদায়, পাকিস্তান সেমিতে ॥ সাফ সুজুকি কাপের দ্বিতীয় দল হিসেবে ভারতের পর সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে পাকিস্তান। শনিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত (গ্রুপ ‘এ’) প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শেষ চারে নাম লেখায় পাকিস্তান। তিন ম্যাচে দুই জয় এক হারে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট। আর তাতেই ভুটানকে শূন্য হাতে বিদায় (তিন ম্যাচে পয়েন্ট শূন্য) বিদায় করে ২০০৫ সাফের পর আবারও শেষ চারে ওঠে পাকিরা। তাদের হয়ে গোলগুলো করেন ২০ মিনিটে মোহাম্মদ রিয়াজ, ২৯ মিনিটে হাসান বশির এবং ৯১ মিনিটে ফাহিম আহমেদ। পয়েন্ট টেবিল : গ্রুপ ‘এ’ দেশ ম্যাচ জয় ড্র হার গোল পয়েন্ট নেপাল ৩ ২ ০ ১ ৭/২ ৬ পাকিস্তান ৩ ২ ০ ১ ৫/২ ৬ বাংলাদেশ ৩ ২ ০ ১ ৩/২ ৬ ভুটান ৩ ০ ০ ২ ০/৯ ০
×