ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ট্রানজিট প্রটোকল চূড়ান্ত

চীনের সমুদ্র ও স্থলবন্দর ব্যবহার করবে নেপাল

প্রকাশিত: ০৬:২০, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

চীনের সমুদ্র ও স্থলবন্দর ব্যবহার করবে নেপাল

ট্রানজিট প্রটোকল চূড়ান্ত করেছে কাঠমান্ডু ও বেজিং। নেপালকে চারটি সমুদ্রবন্দর ও তিনটি স্থলবন্দর ব্যবহার করতে দিবে চীন। শুক্রবার নেপাল সরকার এই তথ্য জানিয়েছে। চীনের বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের ওপর নেপালের নির্ভরশীলতা কমবে। এতদিন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য নেপাল ভারতের বন্দর ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু চীনের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক ক্রমেই বাড়ছে। নেপালে চীন ব্যাপক বিনিয়োগও করছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। নেপাল ও চীনের কর্মকর্তারা ট্রানজিট নিয়ে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দীর্ঘ আলোচনা করেন। শেষ পর্যন্ত তারা এক সমঝোতায় উপনীত হন। নেপাল এ বিষয়ে চীনের মৌখিক অনুমতি পেয়েছে এবং খুব দ্রুত চুক্তি হবে বলে কাঠমান্ডু আশাবাদী। নেপালের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একথা জানিয়েছে। চীনের চারটি সমুদ্র ও তিনটি স্থলবন্দর ব্যবহার করতে পারবে নেপাল। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা রবিশঙ্কর জানান, চীনের তাইঝিন, সেনঝেন, লিয়ানয়ুগাং ও ঝানঝিয়াং বন্দর ব্যবহার করতে পারবে নেপাল। ভারতের ২টি বন্দরের পাশাপাশি চীনেরও চারটি বন্দর ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে নেপাল। জাপান, কোরিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে পণ্য আমদানির সময় চীনের বন্দর ব্যবহার করলে সময় অনেক বেঁচে যাবে, খরচও কম পড়বে। বিষয়টি ভারতের জন্য কিছুটা হলেও চিন্তার বিষয়। কারণ কেবল বন্দরই নয় এখন থেকে চীনের স্থলপথেও বাণিজ্য করতে পারবে নেপাল। চারপাশে হিমালয়ে ঘেরা নেপাল বরাবরই ভারতের ওপর নিভরশীল ছিল। তবে এবার সেই নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছে। সুযোগটি করে দিল চীন। এখন শুধু লিখিত চুক্তির অপেক্ষা। নেপাল থেকে চীনের নিকটতম বন্দরের দূরত্ব ২ হাজার ৬শ’ কিলোমিটার। এর আগে দুই দেশের মধ্যে রেললাইন চুক্তি ইঙ্গিত দিয়েছির নেপাল ও চীন কাছাকাছি আসছে। ওই চুক্তির ফলে নেপালের ভেতর দিয়ে চীনা ট্রেন চলাচলের একটি ভিত্তি তৈরি হয়েছে। তিব্বত থেকে আসা এই রেলপথ চালুর বিষয়ে জুনে চুক্তি স্বাক্ষর করে উভয় দেশ। এর ফলে ভারতের ওপর নেপালে নির্ভরশীলতা অনেকাংশে কমে যাবে। ব্যাবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেকাংশে ভারতের ওপর নির্ভরশীল ছিল নেপাল। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সীমান্ত সমস্যার কারণে জ্বালানি এবং ওষুধের ঘাটতিতে পড়ে ছিল নেপাল। মূলত ওই সঙ্কটের পর বিকল্প উপায় সন্ধানের চেষ্টা করে কাঠমান্ডু। বর্তমানে নেপাল প্রয়োজনীয় পণ্য চলাচলের জন্য কলকাতা ও বিশাখাপট্টম বন্দরের ওপরে নির্ভরশীল। নেপালের ব্যবসায়ী অনুপ মালিয়া বলেছেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়ানো ও বন্দর ব্যবহারের সুবিধা পেতে নেপালকে এখন সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। চীন উচ্চাভিলাষী বেল্ট এ্যান্ড রোড প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পায়নি। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের একটি এক বৃহৎ পরিকল্পনা এটি, যার মধ্য দিয়ে তিনি চীনের এশিয়া ও এর বাইরের জন্য বাণিজ্যিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করতে চান। এই প্রকল্পের একটি অংশ চীন পাকিস্তানের সঙ্গে ৫৭ বিলিয়ন ডলারের ইকোনমিক করিডর তৈরি করবে। ভারতকে এই প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলেও ভারত সাড়া দেয়নি। নতুন চুক্তির আওতায় নেপাল ছয়টি পয়েন্ট দিয়ে চীনে ঢুকতে পারবে। চীনের সমুদ্রবন্দর যেতে নেপালের ব্যবসায়ীরা সড়ক ও রেলপথ ব্যবহার করতে পারবে।
×