ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নেট ব্যবহারকারীদের নিরাপদ রাখতে সচেতনতা প্রশিক্ষণ

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নেট ব্যবহারকারীদের নিরাপদ রাখতে সচেতনতা প্রশিক্ষণ

ফিরোজ মান্না ॥ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নিরাপদ রাখতে এবার অনলাইনে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। শুধু আইন ও পুলিশ দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা সম্ভব হবে না। ব্যবহারকারীকে সচেতন করতে হবে। ব্যবহারকারীরা সচেতন হলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। মন্ত্রী বলেন, দিন যত যাচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা তত বাড়ছে। অনেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ঠিকই। কিন্তু ইন্টারনেটের নিরাপত্তা বিষয়ে তেমন ধারণা রাখেন না। তাদের জন্য প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে, কিভাবে ব্যবহার করলে নিরাপদ থাকা যাবে। অন্যকেও নিরাপদ থাকতে কিভাবে উৎসাহিত করা যাবে এসব বিষয়ে কৌশল শেখানো হবে ওই প্রশিক্ষণে। নিরাপদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সরকার মনে করছে, দেশে প্রযুক্তির বিস্তারের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত জ্ঞানও ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। দেশে যত মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের বড় একটা অংশই এখনও প্রযুক্তি সম্পর্কে ততটা জ্ঞান রাখে না। ফলে বিভিন্ন সময় প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গিয়ে ব্যক্তি বিশেষকে সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক সময় বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টির কারণে শাস্তির মুখেও পড়তে হচ্ছে। অন্যদিকে ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের প্রযুক্তিজ্ঞান কম থাকায় অন্যরা সেই সুযোগ নিয়ে ‘টার্গেট’ ব্যক্তিকে বিপদে ফেলছে। এসব সমস্যা দূর করতে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রযুক্তি দিয়েই প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করতে হবে। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের জানতে হবে প্রযুক্তির অপব্যবহার কিভাবে রোধ করা যায়। দেশে বিভিন্ন সময় অনলাইনে অপপ্রচার করে সমাজের বড় ক্ষতি করা হযেছে। যারা দেশের এমন ক্ষতি করেছে তারা দেশে স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়। তারা দেশের শত্রু। তাদের রোধ করতে শুধু পুলিশ আর আইন দিয়ে রোধ করা সম্ভব না। তাদের জবাব প্রযুক্তির মাধ্যমে দিতে হবে। তাদের চিহিৃত করতে মানুষকে সচেতন হতে হবে। তাদের অপপ্রচারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অস্থির হয়ে ওঠে। এই মাধ্যমকে কেন্দ্র করে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্ম হয়েছে। জনগণকে উত্তেজিত করতে উস্কানি দেয়া হয়েছে। ছড়ানো হয়েছে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ। এসব ঘটনা যেন আর না ঘটে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যাতে কেউ কারও অনিষ্ট করতে না পারে এ জন্যই অনলাইন প্রশিক্ষণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে সব সময়ই কোন না কোন প্রশিক্ষণ চলছে। প্রোগ্রামিং প্রশিক্ষণ, কল সেন্টার কর্মী ও উদ্যোক্তা তৈরির মতো অসংখ্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তাদেরকেও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এখন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারে তাদের ধারণা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারবে। এখন থেকে আইসিটি বিভাগ সাইবার নিরাপত্তার প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইসিটি বিভাগ এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি যোগ করা হয়। প্রশিক্ষণের যাবতীয় বিষয় ওই ম্যানুয়ালে যুক্ত করা হয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, মানুষ অনলাইন ব্যবহারে একদমই সচেতন নন। অনলাইনে কি করা উচিত, কি করা উচিত নয়। অনলাইনকে কিভাবে জঞ্জালমুক্ত রাখা যায় এসব বিষয়ে একদমই সচেতন নন তারা। আমাদের কাজটি মূলত সচেতনতা তৈরি করা। শুধু সচেতন করলেই হবে না, তাদের (ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের) প্রযুক্তিতে সাক্ষর করে তুলতে হবে। এজন্যই বই তৈরি করা হয়েছে। নির্দেশনা মেনে চললে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র নিরাপদ থাকবে। প্রযুক্তিকে রোধ করা যাবে না। রোধ করলে পাল্টা এ্যাকশন হবে। যা সমাজ, রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। তাই কল্যাণকর বিষয়ের জন্যই তরুণদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণে যারা অংশ নেয় তারা সবাই তরুণ। এই তরুণরা যাতে বিপথে না যায়, অনলাইনকে ভাগাড় না বানায়, ঝুঁকিপূর্ণ না করে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের এ উদ্যোগ। সূত্র জানিয়েছে, সরকারী কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। অনলাইন ব্রাউজিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহারের সময় যাতে কোন ধরনের বিব্রতকর অবস্থা তৈরি না হয় সেজন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে।
×