ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘এ’ গ্রুপ থেকে শেষ চারে নেপাল ও পাকিস্তান

বাংলাদেশের সেমিতে ওঠার স্বপ্নভঙ্গ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশের সেমিতে ওঠার স্বপ্নভঙ্গ

রুমেল খান ॥ সবাই কি ভেবেছিল, আর কি হলো! যেখানে ড্র করলেই সেমিফাইনালে ওঠা যায় নয় বছর পর। সেখানে কিনা হেরে যেতে হলো এক গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের হাস্যকর-শিশুতোষ ভুলে! এমনই দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শনিবার তারা ০-২ গোলে হেরে গেছে নেপালের কাছে। ম্যাচে জিতে গ্রুপ ‘এ’র গ্রুপ সেরা হয়ে শেষ চারে নাম লেখাল কখনও সাফ ফুটবলের শিরোপা না জেতা হিমালয়ের দেশ নেপাল। আর হেরে গিয়ে ২০০৯ সালের পর আবারও সেমিতে উঠতে পারল না স্বাগতিক এবং ২০০৩ সালের শিরোপাধারী বাংলাদেশ। এর আগে একই গ্রুপের ম্যাচে পাকিস্তান ৩-০ গোলে ভুটানকে হারিয়ে সেমিতে খেলা নিশ্চিতের পাশাপাশি গ্রুপ রানার্সআপ হয়। নেপাল-পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশেরও ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট। কিন্তু গোল ব্যবধানে নেপালের চেয়ে পিছিয়ে পড়ে বিদায় নিতে হলো স্বাগতিকদের। শনিবার জিততে পারলে নিজেদের আরেকটি কীর্তিকে স্পর্শ করতে পারত জেমি ডের শিষ্যরা। সেই ২০০৩ সালের সাফের পর গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচ জয়ের গৌরব। আজ থেকে ১৫ বছর আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওই আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে স্বাগতিক দল গ্রুপ পর্বে একে একে হারিয়েছিল নেপালকে ১-০, মালদ্বীপকে ১-০ এবং ভুটানকে ৩-০ গোলে। চলতি আসরে বাংলাদেশ হারিয়েছে ভুটানকে ২-০ এবং পাকিস্তানকে ১-০ গোলে। পক্ষান্তরে নেপাল নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১-২ গোলে হেরে গেলেও পরের ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দেয় ৪-০ গোলে হারিয়ে। বাংলাদেশ নেপালের কাছে সাফে সর্বশেষ হেরেছিল ২০১৩ সালের ৩১ আগস্ট। সেবার তারা গ্রুপ ম্যাচে ০-২ গোলে হেরেছিল স্বাগতিক নেপালের কাছে। তবে সর্বশেষ সাক্ষাতে ঢাকায় ১-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশই। ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বরের ওই ম্যাচটি ছিল সাফের প্রস্তুতিমূলক এবং ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। তবে দুদলের মধ্যে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অবশ্য কেউ জেতেনি। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের গ্রুপ পর্বের ওই ম্যাচটি শেষ হয়েছিল গোলশূন্য ড্রয়ে। শনিবার নেপালের কাছে হেরে পাঁচ বছর আগের পুরনো হিসাব চুকাতে পারল না লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। নেপাল এ পর্যন্ত ২২ বার মুখোমুখি হয়েছে ‘দ্য বেঙ্গল টাইগার্স’ খ্যাত বাংলাদেশের। বাংলাদেশের চেয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে ৩৩ ধাপ এগিয়ে থেকেও এই ২২ বারের মধ্যে তারা হেরেছে ১২ বার, আর জিতেছে ৭ বার (বাকি ৩ ম্যাচ ড্র হয়)! গোলসংখ্যায়ও পিছিয়ে তারা (২৬-১৫)। নেপালের কাছে এই হারে বৃথা গেছে গ্যালারিতে উপস্থিত ২০ হাজার দর্শকের আনন্দ পরিণত হয় গভীর বিষাদে। পূর্ব গ্যালারির বিশাল পতাকার আগমনটা ঘটেছে শনিবারই। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দর্শকদের ঢল। উৎসবের অপেক্ষায় হাজারো চোখ। যখনই বাংলাদেশের ফুটবলারদের পায়ে বল, গ্যালারিতে উত্তেজনা। এই বুঝি গোল পেল লাল-সবুজররা। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটার গুরুত্ব আরও বেশি বেড়ে যায় দিনের প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে পাকিস্তানের জয়ে। বাংলাদেশ পড়ে যায় ডু অর ডাই ম্যাচে। এদিন বাংলাদেশের ম্যাচ দেখতে দর্শক সমাগম হয়েছে আরও বেশি। তারা চিৎকার করে বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে উৎসাহ দিয়ে গেছে নিজেদের প্রিয় দেশকে। কিন্তু হঠাৎই গ্যালারিতে নেমে এলো নীরবতা। কারণটা ছিল প্রথমার্ধে বাংলাদেশের আচমকা গোল হজম। যে গোলের পেছনে সব থেকে বেশি দায়ী ছিলেন গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল। গ্যালারি থেকে চেঁচিয়ে উঠে একজন বলেই ফেললেন, গো টু হেল.. সোহেল। আর তোমাকে কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচে দেখতে চাই না!’
×