ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চোটে বেহাল বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

চোটে বেহাল বাংলাদেশ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার এশিয়া কাপকে অনেক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আর সেই এশিয়া কাপের আগেই কিনা বাংলাদেশ দল ‘চোটাক্রান্ত’ হয়ে পড়ছে। এক এক করে তিন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার চোটাক্রান্ত। সাকিব আল হাসান, নাজমুল হোসেন শান্তর পর তামিম ইকবালও চোটাক্রান্ত। তাতে বাংলাদেশ দল যেন বেহাল অবস্থাতেই পড়ে গেছে। তিনজনের চোটই আবার একই স্থানে, আঙ্গুলে। এই তিন ক্রিকেটারের চোট এখন বাংলাদেশ দলকেও ভাবনায় ফেলে দিয়েছে। সাকিব আগেই চোটে ছিলেন। তিনি যে পুরো ফিট নন, তাতো সবারই জানা। এশিয়া কাপের আগে আঙ্গুলে অস্ত্রোপচারও করাতে চেয়েছেন। কিন্তু টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে কথা বলে সাকিব মত পাল্টান। হঠাৎ করে এক ইংরেজী দৈনিক গণমাধ্যমে ২০ থেকে ৩০ ভাগ ফিট বলে দিয়ে বিসিবিকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেন সাকিব। বিসিবি কর্মকর্তারাও ক্ষেপে যান। তবে বিসিবির কাছে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সাকিব মেইল বার্তায় জানিয়ে দেন, সব কথা সত্য নয়। তা ছিল ‘হাল্কা আলাপ’। আর তাতে করে সাকিবের এশিয়া কাপে খেলা নিশ্চিত হচ্ছে। যে সংশয় ছিল, তাও যেন দূর হতে চলেছে। তবে ফিট যে পুরোপুরি নন তা তো নিশ্চিতই। যে কোন সময়ই অসুবিধা দেখা দিতে পারে। এ নিয়ে ভাবনা থাকছেই। ফিল্ডিং অনুশীলন করার সময় নাজমুল হোসেন শান্ত ইনজুরিতে পড়েছেন। আঙ্গুলে ব্যথা পেয়েছেন। কোন চিড় ধরেনি। তবে ব্যথা আছেই। সেই ব্যথা এশিয়া কাপ শুরুর আগে শেষও হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আর তাই দলের সঙ্গেই থাকছেন শান্ত। তবে দুবাইয়ে গিয়ে অনুশীলনের সময় যদি কোন কারণে আবার ব্যথা পান তাহলে দলেরই বিপদ সামনে চলে আসবে। শান্তকে নিয়ে যে এবার ভালভাবেই এগিয়ে যাওয়ার ভাবনা করেছে দল। এখন তার দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার আশাতেই থাকতে হচ্ছে। সাকিব ও শান্তর চোট গুরুতর নয়। দুইজনই হাতে সময় পাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত হয়তো খেলতেও পারবেন। কিন্তু তামিমের যে ইনজুরি হয়েছে তাতে এ ওপেনারের খেলা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। এশিয়া কাপের জন্য অনুশীলনের সময় আঙ্গুলে চোট পান তামিম। শুরুতে চোটের অবস্থা গুরুতর মনে হয়নি। তবে ধীরে ধীরে চোটের স্থান ফুলে যায়। এরপর চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি ছেলের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন তামিম। সেখানে এক্স-রে করান। তাতে দেখা যায় চিড় ধরা পড়ে। তা পুরোপুরি ঠিক হতে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলেই বিসিবি সূত্রে জানা গেছে। এশিয়া কাপ শুরু হতে বাকি আর এক সপ্তাহ। ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হবে টুর্নামেন্ট। প্রথমদিনই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের। গ্রুপপর্বে ২০ সেপ্টেম্বর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্ট শুরু হতে এক সপ্তাহ, আর গ্রুপপর্ব শেষ হতে ১২ দিন বাকি। তামিম যে ইনজুরিতে পড়েছেন তার এক সপ্তাহ শেষ হয়ে গেছে। তিন সপ্তাহ হিসেবে ধরলে আরও দুই সপ্তাহ আছে। আর যদি উন্নতি হয়, দুই সপ্তাহ হিসেবে ধরা হয়; তাহলেও প্রথম ম্যাচটি খেলতে পারার কথা নয়। যদি তামিম কোন ঝুঁকি না নেন। আর ঝুঁকি নিতে তামিমকে নাও দেয়া হতে পারে। কারণ সামনে যে অনেক খেলা রয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে খেললে যদি আরও বড় ইনজুরি দাঁড়িয়ে যায়! এশিয়া কাপের পর সাকিব অস্ত্রোপচার করাবেন। তখন তামিমও যদি না থাকেন তাহলে জিম্বাবুইয়ের মতো দলও বাংলাদেশে এসে খেলতে নেমে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। সাকিব, শান্তর চেয়ে এখন তামিমের ইনজুরি নিয়েই যেন বেশি ভাবনা তৈরি হয়ে গেছে। এ তিনজনের ইনজুরির জন্য বিকল্প হিসেবে মুমিনুল হককেও দলে নেয়া হয়েছে। কিন্তু এই তিনজনের ইনজুরি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যা যে কোন সময় আবার ধরা দিতে পারে। যে কোন একজনের ইনজুরি ধরা দিলেই বাংলাদেশ দল মহাবিপদে পড়ে যাবে। বিশেষ করে সাকিব ও তামিম যদি খেলতে না পারেন তাহলে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়বে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের আশা চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সেই আশা হতাশায় পরিণত হতে পারে। গ্রুপপর্বেই বিপদ আসতে পারে তখন। গ্রুপপর্বে যে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা। দুই দলই কঠিন প্রতিপক্ষ। সাকিব ও তামিমের মতো ক্রিকেটার যদি দলে না থাকেন তাহলে জেতাই তো কঠিন হয়ে পড়বে! আর জিততে না পারলে ‘সুপারফোরে’ যাওয়াই তো হুমকির মুখে পড়ে যাবে। সাকিব, তামিম, শান্তর চোটে বেহাল অবস্থাতেই পড়ে গেছে বাংলাদেশ দল।
×