ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ ফুটবল, সেমিফাইনালে খেলতে নেপালের বিরুদ্ধে ড্র করলেই চলবে তপু-জামালদের, ভুটানকে হারিয়ে শেষ চারে খেলার;###;স্বপ্ন বুনছে পাকিরাও

বাংলাদেশের আজ নেপাল পরীক্ষা

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশের আজ নেপাল পরীক্ষা

জাহিদুল আলম জয় ॥ মিশন পনেরো বছরের হাহাকার ঘোচানো। এ লক্ষ্যে চলমান সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে টানা দুই জয়ে কক্ষপথেই আছে বাংলাদেশ। ভুটান ও পাকিস্তানকে হারানোর পরও সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়নি লাল-সবুজদের। ‘এ’ গ্রুপ থেকে ভুটানের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হলেও শেষ চারের রেসে বাংলাদেশের সঙ্গে ভালভাবেই আছে নেপাল ও পাকিস্তান। আজ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এই গ্রুপের শেষ দুই ম্যাচের পরই জানা যাবে কোন্ দু’টি দল সেমিফাইনালের টিকেট পাবে। বিকেল ৪টায় দিনের প্রথম ম্যাচে ভুটানের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। আর সন্ধ্যা ৭টায় স্বাগতিক বাংলাদেশের আতিথ্য নেবে নেপাল। কার্যত টানা দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় ভুটানের বিদায় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে। তেমনি টানা দুই জয়ে সেমিতে এক পা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। এরপরও কিছুটা শঙ্কা থেকে গেছে। এ কারণে নেপালীদের বিরুদ্ধে কোন ঝুঁকি নিতে রাজি নয় কোচ জেমি ডে’র দল। ম্যাচটি ড্র হলেও সেমি নিশ্চিত হবে জামাল, তপুদের। কিন্তু ড্র নয় টানা তিন জয়েই নকআউট রাউন্ডে যেতে চায় ২০০৩ আসরের চ্যাম্পিয়নরা। বর্তমানে গ্রুপে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বাংলাদেশ। এরপরও অঙ্কের হিসেবে বাদ পড়ার শঙ্কা আছে! ৩ পয়েন্ট করে নিয়ে গোলগড়ে যথাক্রমে দুই ও তিনে আছে নেপাল ও পাকিস্তান। তলানিতে থাকা ভুটানের ভান্ডারে জমা শূন্য পয়েন্ট। পাকিদের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তের গোলে জিততে না পারলে নেপালের সঙ্গে পাহাড়সম চাপ নিয়ে খেলতে হতো বাংলাদেশকে। বাড়তি চাপ না থাকলেও নেপাল ম্যাচ সহজ হবে না স্বাগতিকদের জন্য। কেননা বালগোপাল মহারজনের দল নিজেদের শেষ ম্যাচে ভুটানকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিদের সঙ্গে ভাল খেলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে হারতে হয়। আর তাই বাংলাদেশকে হারিয়েই সেমিতে খেলার আশা করছে দলটি। স্বাগতিকদের হারাতে পারলে নেপালের পয়েন্ট হবে ৬, তখন একই পয়েন্ট থাকবে বাংলাদেশেরও। অন্যদিকে এক ম্যাচে জয় পাওয়া পাকিস্তান যদি ভুটানকে হারিয়ে দেয় তখন তাদেরও পয়েন্ট হবে ৬। ফলে বাংলাদেশ, নেপাল ও পাকিস্তান তিন দলেরই পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে প্রথমে গোলপার্থক্য ও পরে হেড টু হেড বিবেচনা করে সেরা দু’টি দলকে সেমির টিকেট দেয়া হবে। এই তথ্যই জানান দিচ্ছে, এক পা দিয়ে রাখলেও এখনও সেমিফাইনাল অনিশ্চিত। আর এটি দূর করতে পারে বাংলার দামাল ছেলেরাই। নেপালের বিরুদ্ধে হার এড়াতে পারলেই নয় বছর পর অর্থাৎ ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো সাফের সেমিতে উঠে যাবে লাল-সবুজের দেশ। তবে ড্র নয়, শেষ গ্রুপ ম্যাচেও জিততে চায় ‘টিম বাংলাদেশ’। অনাকাক্সিক্ষত হারে জটিল সমীকরণ আর হিসেব-নিকেশে যেতে রাজি নয় স্বাগতিকরা। দলের ইংলিশ কোচ জেমি ডে এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা টানা দুই ম্যাচ জিতেছি। কিন্তু এখনও সেমিফাইনালে যায়নি। আমাদের হাতে তৃতীয় ম্যাচটি আছে। গ্রুপে ভাল করতে আমরা শেষ ম্যাচটিও জিততে চাই। বাংলাদেশের ফুটবলকে বদলে দেয়া এই কোচ বলেন, এটা ঠিক যে আমরা সুবিধাজনক অবস্থায় আছি। কিন্তু এতে আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই। নেপাল ভাল দল। পাকিস্তানের কাছে ওরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরেছিল। ভুটানকে বিধ্বস্ত করে তারা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। নেপালকে হারাতে হলে তাই আমাদের সেরাটাই দিতে হবে। আমি আশাবাদী ছেলেরা তা পারবে। নেপাল কোচ বালগোপাল মহারজনের কাছে এই ম্যাচটি বাঁচা-মরার। তাই তিনি শিষ্যদের তামিল দিয়েছেন নিজেদের সামর্থ্যরে সবটুকু উজাড় করে দিতে। বালগোপাল বলেন, সেমিফাইনাল খেলতে হলে আমাদের জয় ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। জানি শক্তিশালী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজটা সহজ হবে না। তবু আমরা হাল ছাড়ব না। ছেলেরা সাধ্যমতো খেলতে পারলে জয় সম্ভব। আমরা এ লক্ষ্যেই খেলব। নেপাল ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে থাকলেও মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রাধান্য বাংলাদেশের। বর্তমানে বাংলাদেশের র‌্যাঙ্কিং ১৯৪ আর নেপালের ১৬১। এখন পর্যন্ত দু’দেশ মুখোমুখি হয়েছে ২১বার। তাতে নেপালের ৬ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ১২ ম্যাচে। ৩টি ম্যাচ ড্র হয়। এই ম্যাচগুলোা মধ্যে আবার ২০টি ফ্রেন্ডলি। তাতে বাংলার জয় ১১ আর নেপালীদের ৬ ম্যাচ। তিন ম্যাচ অমীমাংসিত থাকে। বাংলাদেশের কাছে হারলেও ভুটানকে হারিয়ে সেমির স্বপ্ন বুনছে পাকিস্তানও। শুধু জয়ই নয় যতটা সম্ভব বেশি গোলে জয়ের দিকেও দৃষ্টি তাদের। কেননা এই গ্রুপের এখন এমন অবস্থা শেষ পর্যন্ত তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যেতে পারে। তখন গোলপার্থক্যে ভাগ্য নির্ধারণ হবে। বিষয়টি মাথায় রেখেই শিষ্যদের তামিল দিচ্ছেন পাকিদের ব্রাজিলিয়ান কোচ জোশে নগুইরা।
×