দলের কেউ ভুল করলে শাস্তি পেতে হবে ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারের ‘অনিচ্ছাকৃত’ কোন ভুল হয়ে থাকলে তা ধরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তার দল আওয়ামী লীগ সে সব ভুল শুধরে নেবে। এদিকে ১৪ দলের অন্যতম নেতা রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশে সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটবে। শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্যপরিষদের অঙ্গ সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্র-যুব ঐক্যপরিষদের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোন অবস্থাতেই আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া যাবে না। তাহলে অগ্রগতি আর উন্নয়নের বাংলাদেশ আরও পিছিয়ে যাবে। মৌলবাদী গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তাই এ বিষয়ে সব গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক শক্তির ঐক্য ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তারা। ‘গুজবে’ কান না দিয়ে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের পরামর্শ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরাও ভুল করতে পারি, আমরা অনিচ্ছাকৃত অনেক কিছু করতে পারি। আপনারা যদি ভুল ধরিয়ে দেন, আমরা অবশ্যই সংশোধিত হব। সেখানে আমাদের কোন রাখঢাক নেই। আমার আহ্বান থাকবে ভুল হলে ভুল ধরিয়ে দেবেন। এখানে মনোতুষ্টির কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীতির প্রশ্নে সংসদ সদস্যদেরও ছাড় দেন না। দলের কেউ অন্যায় করলে সেজন্য তাকে শাস্তি পেতে হয়, হবে। এক্ষেত্রে আমাদের কোন কম্প্রোমাইজ নেই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ, আর পথ হারাবে না কোনদিন। তবে আবারও গুজব ছড়িয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হতে পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আমরা বললাম, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন তোমাদের সব দাবি মানা হবে। সবাইকে বললাম আন্দোলন করতে হবে না, তোমরা ঘরে ফিরে আস। তারপরও আমরা দেখলাম, বিভিন্নভাবে যারা নাকি বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে ব্যর্থ হচ্ছিল, তারাই বিভিন্নভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সামনে নিয়ে আসছিল। তারপর সবাই বুঝতে পেরেছে যে এগুলো সবই মিথ্যাচার। ওই আন্দোলনের মধ্যে অভিনেত্রী নওশাবার ফেসবুক লাইভের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, একজন অভিনেতা কীভাবে অভিনয় করে বলেছিল যে চারজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাকে সামনে এনে জিজ্ঞাসের পর সে কেন এটা করেছে সেটা আমরা বলে দিতে পেরেছি। সব ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়েছে। আমরা চেয়েছি ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হোক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে করে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের আহ্বান করব, কোন ধরনের গুজবে বিশ্বাস করবেন না। আগে নিজেরা যাচাই করুন, সত্যতা সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে তারপরে যদি কিছু বলার থাকে আপনারা প্রতিবাদ করুন, সেখানে আমাদের কোন কিছু বলার নেই। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে চাঁদাবাজির ঘটনা গ্রেফতার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এগুলো নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের আগে কিছু বলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, নিরাপরাধ কাউকে কোন অবস্থাতেই গ্রেফতার করা হচ্ছে না। প্রমাণ করেন বিএনপির গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীরা নির্দোষ। আমরা কাউকে গ্রেফতারের আগে যতদূর সম্ভব যাচাইবাছাই করে দেখি। নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন কোন অবস্থাতেই গ্রেফতার না হন। বাংলাদেশ ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদের এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননও উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এ দেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর সেই ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ, অসাম্প্রদায়িকতা ও গণতান্ত্রিক মূলনীতিগুলোকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের ব্যবস্থা করা হয়।