ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

খালেদা গুরুতর অসুস্থ হলেও সুচিকিৎসা হচ্ছে না ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 খালেদা গুরুতর অসুস্থ হলেও সুচিকিৎসা হচ্ছে না ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হলেও তাঁর সুচিকিৎসা হচ্ছে না, সরকার খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে আটকে রেখে হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ইউনাইটেডে না হলেও যে কোন বিশেষায়িত হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা হতে পারে। তবে সরকারী হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হোক সেটা আমরা চাই না। কারণ, এই সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না। তাই অবিলম্বে তাঁকে বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ফখরুল বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে যেভাবে আদালত কক্ষ বসানো হয়েছে তা বেআইনী। সেদিন খালেদা জিয়া বলে দিয়েছেন যে, শারীরিক অবস্থার কারণে তিনি আদালতে যেতে পারবেন না। আমরা তার স্বাস্থ্য নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, দেশের প্রচলিত আইনে কোন অসুস্থ নাগরিককে চিকিৎসা না দিয়ে বিচার কাজ চালানো যায় না। তাই খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে যা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অমানবিক ও সংবিধান পরিপন্থী। ফখরুল বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠাচ্ছি, তার সঙ্গে দেখাও করব। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বান জানাব খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার বাম হাত ও বাম পা অবশ হয়ে গেছে। তিনি ঠিকমতো নড়াচড়া করতে পারছেন না। তারা এসে যে বর্ণনা দিয়েছেন, তাতে আমরা কেবল উদ্বিগ্নই নই, হতবাক, বিস্মিত। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় শাস্তি দিয়ে কারাগারে বেআইনীভাবে আটক রেখে হত্যা করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে এবং আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রেখে একতরফা নির্বাচনে নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করার নীলনক্সা নিয়েই এ অপপ্রয়াস চালাচ্ছে সরকার। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার নিশ্চিত হয়ে গেছে খালেদা জিয়া মুক্ত হলে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে। একই সঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হতে বাধ্য। এজন্য তার জামিন হওয়ার পরও বিভিন্ন মামলায় তাকে বেআইনীভাবে আটকে রেখেছে। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় সব দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। বিশেষ করে সংবিধান লঙ্ঘন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তাদের অভিযুক্ত হতে হবে। কারা কর্তৃপক্ষকেও আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপনাদের দায়িত্ব আইন ও বিধান দ্বারা পরিচালিত। এ দায় আপনাদেরও বহন করতে হবে। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে জেলগেটে বিচার হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমানের সময় জেলগেটে যে বিচার হয়েছে সেটা ছিল রাষ্ট্রদ্রোহিতার। তখন দেশে ‘মার্শাল ল’ ছিল। তখন দেশের সংবিধান রহিত ছিল। ক্যামেরা ট্রায়াল নয়। পুরো দরজা খোলাই ছিল। এটা ক্যামেরা ট্রায়াল হলো কীভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে মোশাররফ বলেন, তিনি এ ধরনের কথা বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। সুস্থ করে খালেদার বিচার করেন- ড. মোশাররফ ॥ সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আগে খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে আইনী প্রক্রিয়ায় বিচার করেন। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কারাগারে বিচারিক আদালত স্থানান্তর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বলেছি এটা সাংবিধানিক নয়। আমাদের সংবিধানে ৩৫(৩) অনুচ্ছেদে পরিষ্কার করে লেখা আছে, এ ধরনের বিচার প্রকাশ্যে হতে হবে। কারাগারের ভেতরে কীভাবে প্রকাশ্যে বিচার হবে? যে কারাগারে একটি বিরাট দেয়াল আছে এবং একটা গেট আছে, যে গেটের ভেতরে শুধু বন্দীদের ঢোকানো হয়, আর যদি কেউ বিশেষভাবে যায় তাকে অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হয়। এ সরকারকে দেশের জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় নাÑমাহবুব ॥ এ সরকারকে দেশের জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, যে কোন সময় দেশে সরকারের বিরুদ্ধে গণজোয়ার হতে পারে। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘চেতনা বাংলাদেশ’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
×