ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কারের অভাবে বাগেরহাটের অযোধ্য মঠ ঝুঁকিতে

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  সংস্কারের অভাবে বাগেরহাটের  অযোধ্য মঠ ঝুঁকিতে

বাবুল সরদার, বাগেরহাট ॥ অযতœ আর অবহেলায় রয়েছে বাগেরহাটের ঐতিহ্যবাহী অযোধ্য মঠ। মঠের উপরিভাগে বেড়ে ওটা পরগাছা ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে মূল্যবান প্রাচীন এ স্থাপনাটি। সদর উজেলার যাত্রাপুর বাজার থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বারুইপাড়া ইউনিয়নের ভৈরব নদীর পূর্ব তীরে কোদলা গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী এ মঠটি। প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের তালিকাভুক্ত সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হলেও প্রাচীন এ মঠটি দেখতে আশা পর্যটকদের জন্য নেই ন্যূনতম সুবিধা। আর এ কারণে স্থাপত্য নান্দনিকতায় এটি দেশের সবচাইতে সুন্দরতম মঠ হলেও এখানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থী পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়। কবে কার দ্বারা এ মঠ নির্মিত হয়েছিল তার সঠিক কোন তথ্য না পাওয়া গেলেও বাগেরহাট প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী এ মঠটি সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে নির্মিত। বহুকাল আগে মঠের দক্ষিণ কার্নিসের নিচে প্রায় অদৃশ্যমান দুই লাইনের একটি ইটে খোদাই করা লিপি অনুযায়ী দেবতার অনুগ্রহ লাভের আশায় কোন এক ব্রাহ্মণ মঠটি নির্মাণ করেছিলেন। তবে জনশ্রুতি আছে যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্য তার সভাসদ গৃহের প-িত অবিলযম্বা সরস্বতীর স্মৃতির উদ্দেশে মঠটি নির্মাণ করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মঠটির দেয়ালে লাল রঙের ইটের ওপর খোদাই করা অলঙ্কারগুলোতে অযতœ আর অবহেলায় সেদলা পড়েছে। মঠে প্রবেশ দরজার ওপরের অংশে পোড়া মাটিতে আকর্ষণীয় অলঙ্কার করা বেশ কয়েকটি ইট নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েকটি স্থানে ইটের ওপর খোদাই করা কারুকাজ নষ্ট হয়ে নিচে পড়ছে। মঠের ওপরে জন্ম নেয়া পরগাছার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেয়াল। মঠের দায়িত্বে থাকা কেয়ারটেকার সামছুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মঠের ওপরে জন্ম নেয়া পরগাছা পরিষ্কার করার জন্য কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। যে কারণে পরগাছার শিকড়ে মঠের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এগুলো মঠের ওপরের অংশে হওয়ার কারণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে তা কেটে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি সম্পর্কে খুলনা প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর অবগত থাকলেও পরগাছাগুলোর ব্যাপারে তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সংস্কার কাজ না করার কারণে অলঙ্কার খোদাইকৃত অনেক ইট নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া রাতে এখানে কোন আলোর ব্যবস্থা নেই। পর্যটকদের নেই ন্যূনতম সুযোগসুবিধা। কোন হোটেল ও বাথরুম না থাকায় বিশেষ কোন দিন ছাড়া দর্শনার্থীরা খুব কম আসে। যশোর থেকে অযোধ্য মঠ দেখতে আসা খায়রুজ্জামান বলেন, অযোধ্য মঠ সম্পর্কে বইতে অনেক পড়েছি কিন্তু বাস্তবে দেখা হয়নি। তাই সময় পেয়ে ঐতিহ্যবাহী এ মঠটিকে দেখতে আসা। কিন্তু এখানে আসার পর সমস্যায় পড়েছি। মঠের আশপাশের কোন খাবার হোটেল বা দোকান না থাকায় মঠটি ভালভালে ঘুরে না দেখেই ফিরে যেতে হচ্ছে। রামপাল উপজেলা বাসিন্দা মিলি আক্তার বলেন, নিজ জেলাতে ঐতিহ্যবাহী এ মঠটি থাকলে সময় স্বল্পতার কারণে দেখতে আসা হয়নি। তাই সময় বের করে মঠটি দেখতে আসা। তবে এখানে আসার পর কোন বাথরুম না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়েছি।
×